বিল্লাল হোসেন: [২] চিকিৎসকের পছন্দের ক্লিনিকে টেষ্ট না করায় রোগীর রিপোর্টসহ ব্যবস্থাপত্র টেবিল থেকে ছুড়ে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের গাইনী বিভাগের জুনিয়র কনসালট্যান্ট ডাঃ সানজিদা পারভীন। এছাড়া ওই গাইনী চিকিৎসকের খারাপ আচরণে অতিষ্ঠ সাধারণ রোগীরা।
[৩] রোববার (১৪ ফেব্রুয়ারী) দুপুরে কান্না জড়িত কন্ঠে স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে এমন অভিযোগ করেন ভূক্তভোগী গাইনী রোগী পাশ্ববর্তী পলাশ উপজেলার কাজীরচর গ্রামে ফারুকের স্ত্রী নাসরিন আক্তার (৩৮)।
[৪] তিনি জানান, নিজ বাড়ী থেকে পলাশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দূরে হওয়ায় নিকটবর্তী কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেই আসেন এবং চিকিৎসা নেন। গত ৩দিন আগে শারীরিক (স্ত্রী রোগ) কিছু সমস্যা নিয়ে তিনি কালীগঞ্জ সরকারী হাসপতালে আসেন। সেখানে তিনি স্ত্রী রোগের সমস্যা নিয়ে গাইনী কনসালটেন্ট জুনিয়র ১৩৩ নং রুমে দেখানোর জন্য বহির্বিভাগ থেকে টিকিট নেন। তারপর সিরিয়াল অনুয়ায়ী ডাঃ সানজিদা পারভীনকে দেখান। এ সময় তিনি বেশ কিছু টেস্ট দেন। সেই সঙ্গে তিনি সুনিদির্ষ্ট করে স্থানীয় কালীগঞ্জ সেন্টাল হাসপাতালে টেস্ট করার কথা বলেন। তিনি চলে গিয়ে ওনদিনই স্থানীয় শাপলা ডায়াগনেষ্টিক সেন্টারে টেস্ট করান। একদিন পর ওই টেস্ট রিপোর্ট সরকারি হাসপাতালের গাইনী ডাক্তার সানজিদা পারভীনের কাছে নিয়ে যান কিন্তু ডাক্তারের পছন্দের ক্লিনিকে টেস্ট না করায় নাসরিন আক্তারের রিপোর্টসহ ব্যবস্থাপত্র টেবিল থেকে ছুড়ে ফেলেন। এ সময় ডাক্তার অশালিন বাক্য প্রয়োগ করেন বলেও জানান রোগী নাসরিন। পরে অন্য আরেকটি ক্লিনিক থেকে টেস্ট করাতে বলে রোগীকে ছেড়ে দেন।
[৫] রোগী নাসরিন আক্তার আরো বলেন, লেখাপড়া জানি না আমি মনে করেছি শাপলাই সেন্টাল হাসপাতাল। এখন তো আমার অনেকগুলো টাকা গেল। আমরা গরীব মানুষ দিন আনি দিন খাই। আবার এতো টাকা কই পাই? তাছাড়া স্বামী এই কথা হুনলেও তো রাগ করবো বলে হাউমাউ করে কান্নাকাটি শুরু করেন ওই ভূক্তভোগী।
[৬] নাম প্রকাশে অনিচ্ছুুক কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের গাইনী বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসাা ভূক্তভোগী রোগীরা জানান, দিনের পর দিন ওই গাইনী ডাক্তারের খারাপ আচরণে স্থানীয়রা অতিষ্ঠ। একবারের সমস্যা একাধিকবার বললেই তিনি রাগারাগি শুরু করেন। কখনো কখনো অশালিন বাক্য প্রয়োগও করেন। তবে এ ব্যাপারে অসংখ্যবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বলেও কোনো ফল পাওয়া যায়নি।
[৭] এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ সরকারী হাসপাতালের গাইনী বিভাগের জুনিয়র কনসালট্যান্ট ডাঃ সানজিদা পারভীন বলেন, আমি সরকারি হাসপতালের কাজ শেষ করে প্রতিদিন কালীগঞ্জ সেন্টাল হাসপাতালে বসি। সে কারণে ওই হাসপাতালের প্রতি দুর্বলতা আছে। তাই আমি ওইখান থেকে টেস্ট করাতে বলেছি। তবে আমি রিপোর্টসহ ব্যবস্থাপত্র টেবিল থেকে ছুড়ে ফেলিনি এবং অশালিন বাক্য প্রয়োগ করিনি। এটা আমার পরিবারেও নেই। এই হাসপাতালে প্রায় ৩ বছর ধরে আছি, আমি কখনো কারো সঙ্গে খারাপ আচরণ করিনি।
[৮] এ বিষয়ে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মো. মিনহাস উদ্দি মিয়া এ প্রতিবেদককে বলেন, আমি আসলে এখানে নতুন এসেছি। বিষয়গুলো আমার জানাছিল না। তবে যেহেতু শুনলাম, আমি গাইনী ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলব। শুধু তার সঙ্গে নয় এ ব্যাপারে হাসপাতালের সকল ডাক্তারের সঙ্গেও কথা বলবো।
[৯] তিনি আরো বলেন, হাসপাতালে কোনো টেস্ট না থাকলে সেটা বাহিরের কোনো ক্লিনিককে সুনির্দিষ্ট করে বলতে পারে না কেউ। বরং ভালো জায়গা থেকে পরীক্ষা করার পরামর্শ দেওয়া উচিত।
[১০] এ ব্যাপারে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান গাজীপুর জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ খাইরুজ্জামান। সম্পাদনা: হ্যাপি