অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা : রাস্তা-ঘাটে কিশোরীদের যৌন হয়রানি বাংলাদেশে একটি সামাজিক সমস্যা। গত কয়েক বছরে যৌন হয়রানির সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও এটা কোনো নতুন সমস্যা নয়। আমাদের মতো রক্ষণশীল সমাজে এটা অনেক আগে থেকেই বিদ্যমান। রাষ্ট্রের সকল পর্যায়ে নারীর ক্ষমতায়ন ও অংশগ্রহণ বৃদ্ধি পাওয়াকে মৌলবাদী গোষ্ঠী মেনে নিতে পারছে না। সমাজে নারীকে পণ্য হিসেবে দেখার কারণে শিশুকাল থেকেই নারীরা শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। সামাজিকভাবে যে প্রতিরোধ হচ্ছে তা যথেষ্ট নয়।
নারীর সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য সকল শ্রেণির মানুষকে এগিয়ে আসা দরকার। নারীদের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ জন্মায় এমন শিক্ষা পরিবার থেকে দিতে হবে। পাশাপাশি পাঠ্য-পুস্তকে অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে লিঙ্গ বৈষম্য সম্পর্কে সচেতন করতে হবে। অন্যদিকে গণমাধ্যমে নারীকে যেভাবে উপস্থাপন করা হয়, তা সত্যিই হতাশাজনক। সামাজিক মাধ্যমেও নারীদের নিয়ে কুরুচীপূর্ণ মন্তব্য করা হয়। এ বিষয়গুলোর প্রতি নজর না দিলে নারী নির্যাতন বন্ধ হওয়া সম্ভব নয়।
আইন প্রণয়ন এবং প্রয়োগের দিকেও সমানভাবে নজর দিতে হবে। যারা রাস্তা-ঘাট, সামাজিক মাধ্যমে নারীদের হয়রানি করে তাদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। যারা নারী অধিকার নিয়ে কাজ করে তারা যাতে কোনো ধরনের হয়রানির শিকার না হয়, তাও দেখতে হবে। নারীদের যারা ভয়ভীতি দেখায় এবং পেছনে টেনে রাখতে চায়- তাদেরও শস্তির আওতায় নিয়ে আসতে হবে। নারী ইস্যুকে রাজনীতে ও ধর্ম থেকে আলাদা করে দেখতে হবে। সমাজের সকল ক্ষেত্রে নারীদের স্বীকৃতি দিয়ে শতভাগ অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।
পরিচিতি : শিক্ষক, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে লিখেছেন আবদুল্লাহ মামুন।