শিরোনাম
◈ ওড়না কেড়ে নিয়ে পুরুষ কর্মকর্তাদের উল্লাস, নারী বন্দিদের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা ◈ রেকর্ড উৎপাদনের সুফল কোথায়? চালের বাজারের চালকের আসনে কারা? ◈ পবিত্র আশুরা আজ ◈ তরুণ ক্রিকেটার তানভীরের ফাইফারে সিরিজ সমতায় বাংলাদেশ ◈ 'শিক্ষা ও স্বাস্থ্য দখল করেছে জামায়াত': গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ◈ ১৪ হাজার কোটি রুপি কেলেঙ্কারি, যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেপ্তার ভারতের নেহাল মোদি (ভিডিও) ◈ মোবাইল চুরির অভিযোগকে কেন্দ্র করে গ্রাম্য সালিস থেকে রক্তাক্ত ট্র্যাজেডি ◈ জাতীয় নির্বাচনে বাধা দেওয়ার শক্তি কারো নেই: কেরানীগঞ্জে বিএনপি সমাবেশে সালাহ উদ্দিন আহমদের হুঁশিয়ারি ◈ তুর্কমেনিস্তানকে কাঁ‌পি‌য়ে দি‌লো বাংলা‌দেশ, এশিয়ান কাপে যাচ্ছে ঋতুপর্ণারা ◈ চী‌নে জু‌নিয়র হ‌কি‌তে একদিনে বাংলাদেশ পুরুষ ও নারী দ‌লের জয়

প্রকাশিত : ০৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ০৮:১৭ সকাল
আপডেট : ০৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ০৮:১৭ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

এরদোয়ানের কাছে ‘২০২৩’ এত গুরুত্বপূর্ণ কেন?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ২০২৩ সালে অনুষ্ঠেয় সাধারণ নির্বাচনকে দেশটির জন্য ‘অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ’ বলে বর্ণনা করে আসছেন। সোমবারও একই কথা বললেন তিনি। বিশ্লেষকদের ধারণা, ‘অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ’ শব্দযুগল ব্যবহার করে তিনি হয়তো ‘লুজান চুক্তি’র সমাপ্তির বছরকে বারবার তুলে ধরার চেষ্টা করছেন। এবং, এ চুক্তির সময়সীমা শেষ হওয়ার পর তিনি যে বৈপ্লবিক পদক্ষেপ নেবেন, সেদিকে দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছেন।

এরদোয়ান দলের তৃণমূলকে ২০২৩ সালের গুরুত্ব মাথায় রেখে সর্বোচ্চ চেষ্টার মাধ্যমে মাঠে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানিয়েছেন। বেবুর্ত, নিগদে, জঙ্গুলদাক ও গিরেসান- কৃষ্ণসাগর অঞ্চলের এ প্রদেশগুলোতে ‘জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি’র (একেপি) প্রাদেশিক কংগ্রেসে তিনি বলেন, ‘আমি আন্তরিকভাবে বিশ্বাস করি, আমাদের বন্ধু যারা দলের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছেন, জয় তুলে আনতে তারা সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবেন।’

কী এই লুজান চুক্তি, যাকে আবর্তিত করে ঘুরছে এরদোয়ানের সব স্বপ্ন? কেন তিনি বছরটাকে এত গুরুত্ব দিচ্ছেন?

প্রথম বিশ্বযুদ্ধে পরাজয়ের পর ব্রিটেনের নেতৃত্বে মিত্র শক্তিগুলো তুরস্কের সামগ্রিক উন্নতি রোধ করার লক্ষ্যে ১৯২৩ সালে লুজান চুক্তি সম্পাদন করে। এর মাধ্যমে বিভিন্ন অপমানজনক নিষেধাজ্ঞা আরোপের সঙ্গে সঙ্গে তাদের পরিচয় পর্যন্ত বদলে দেওয়া হয়। এই চুক্তির মাধ্যমে তৎকালীন বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তি ওসমানি সাম্রাজ্যের উৎখাতের ব্যবস্থা করা হয় এবং পরে ১০০ বছরেও যেন তুর্কিরা নিজেদের গৌরব পুনরুদ্ধার করার চেষ্টা করতে না পারে, তা সুনিশ্চিত করা হয়। ১৯২৩ সালে সম্পাদিত চুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২০২৩ সালে।

এই চুক্তিই এককভাবে তুরস্ককে ইউরোপের পঙ্গু রাষ্ট্রে পরিণত করে। এর মাধ্যমে ওসমানি সালতানাতের সব উত্তরাধিকারীকে নির্বাসিত করা হয়, কাউকে গুপ্ত হত্যা করা হয়, অনেককে গুম করা হয়। তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা হয়। এভাবে খিলাফতের শেষ চিহ্ন মুছে ফেলা হয় তুরস্ক থেকে।

অটোমান সাম্রাজ্যের ম্যাপ

এ চুক্তি অনুযায়ী পরবর্তী এক শ বছর তুরস্ক নিজেদের ভূমিতে বা বাইরে কোনো দেশে প্রাকৃতিক সম্পদ অনুসন্ধান এবং আহরণ করতে পারবে না। বর্তমান বিশ্বে অনেক দেশের অর্থনীতি যেখানে তেলের ওপর নির্ভরশীল, সেখানে তুরস্ককে তেল উত্তোলন করা থেকে সম্পূর্ণ বিরত রাখা হয়।

এ চুক্তির মাধ্যমে তুরস্কের অর্থনীতির ওপর একটি বড় ধাক্কা দেওয়া হয় গুরুত্বপূর্ণ সামুদ্রিক পথ বসফরাসের ওপর তুরস্কের নিয়ন্ত্রণ শেষ করে দেওয়ার মাধ্যমে। কৃষ্ণসাগর এবং ভূমধ্যসাগরের মধ্যে সংযোগ স্থাপনকারী এই প্রণালী এশিয়া এবং ইউরোপের মধ্যকার বাণিজ্যের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রুট। প্রতিদিন তুরস্কের বুকের ওপর দিয়ে হাজারো জাহাজ পার হলেও তুরস্ক তাদের কাছ থেকে কোনো অর্থ সংগ্রহ করতে পারে না।

৪০০ বছর মক্কা এবং মদিনাকে নিয়ন্ত্রণ করা তুর্কি সুলতানরা নিজেদেরকে দুই পবিত্র মসজিদের খাদেম বলে অভিহিত করতে গর্ববোধ করতেন। ওসমানি সাম্রাজ্য থেকে পৃথক হওয়ার পর ১৯৩২ সালে আমেরিকার মদদপুষ্ট সাউদ গোষ্ঠী সৌদি আরবের মসনদে বসার পর মক্কা ও মদিনার নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করে। তুরস্কের বাসিন্দারা আজও হজ এবং ওমরাহ করার সময় মক্কা-মদিনায় দোয়া করে, ‘হে আল্লাহ, আমাদের ক্ষমা কর, আমাদের ওপর তোমার অসন্তুষ্টি তুলে নাও, আমাদেরকে আবার মক্কা-মদিনার খাদেমের মর্যাদা ফিরিয়ে দাও।’

তুর্কিরা হজের সময় নিজেদের সঙ্গে এক ধরনের মানচিত্র নিয়ে আসেন, যাতে মক্কা-মদিনার আগের সব পবিত্র স্থাপনার বর্ণনা আছে। যার মধ্যে অনেক স্থাপনা সৌদি সরকার মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিয়েছে।

২০২৩ সালের পর তুরস্ক কী করতে পারে?

তুরস্কের বর্তমান অর্থনীতি খুব একটা বড় নয়। কিন্তু অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে প্রবল সম্ভাবনাময় দেশ তুরস্ক লুজান চুক্তির পর যে অর্থনৈতিকভাবে ব্যাপক অগ্রগতি করবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

তুরস্ক এরদোয়ানের আমলে আতাতুর্কের প্রতিষ্ঠিত মুসলিমবিদ্বেষী সেক্যুলার ছবি থেকে বেরিয়ে এসেছে এবং মুসলিম বিশ্বের নেতৃত্বদান করার ক্ষেত্রে সবার থেকে এগিয়ে আছে। সব ঠিক থাকলে তারা নতুন বিশ্বশক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে। এটি মুসলিম বিশ্বের জন্য আবার সুখের বার্তা বহন করে আনবে বলে অনেকের ধারণা।
-টুয়েন্টি ফোর লাইভ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়