শিরোনাম
◈ শ্রীলঙ্কার কা‌ছে আফগা‌নিস্তান হে‌রে যাওয়ায় সুপার ফো‌রে খেলার সু‌যোগ পে‌লো বাংলাদেশ ◈ বাংলাদেশি নাগরিকত্ব নিয়ে টিউলিপের মিথ্যাচার, নতুন সংকটে স্টারমার: ডেইলি এক্সপ্রেসের রিপোর্ট ◈ শুধু অতীতের নয়, বর্তমানের দুর্নীতি থামাতেও নজর দিতে হবে: বিদ্যুৎ উপদেষ্টা ◈ বাংলাদেশ ও চীন সহযোগিতামূলক অংশীদারিত্বকে এগিয়ে নিতে একসাথে এগিয়ে যাবে : প্রধান উপদেষ্টা  ◈ সাফ চ‌্যা‌ম্পিয়নশী‌পে নেপালকে ৪-০ গো‌লে হারা‌লো বাংলাদেশ ◈ শ্রীলঙ্কার প্রতি বাংলা‌দে‌শের সমর্থন, চোখ এড়ায়নি লঙ্কান ক্রিকেট বোর্ডের ◈ আফগানিস্তান-শ্রীলংকা ম্যাচের ফল যেমন হলে লাভ বাংলাদেশের ◈ নির্বাচনী দায়িত্বে অপরাধের সাজা বাড়ছে: অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন ◈ দেওয়ানি ও ফৌজদারি আদালত সম্পূর্ণভাবে পৃথক করলো সরকার ◈ কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করার পক্ষে নয় বিএনপি : সিঙ্গাপুর থেকে দেশে ফিরে মির্জা ফখরুল

প্রকাশিত : ০৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ০৯:০০ সকাল
আপডেট : ০৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ০৯:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

পায়ে লিখেই স্বপ্নপূরণের পথে রাবির মেধাবী ছাত্রী বিউটি

ডেস্ক নিউজ: জীবনে নানা বাধা, ঘাত-প্রতিঘাত পেরুতে হয় সব মানুষকেই। কেউ অল্পতে হাল ছেড়ে দেন, থেমে যান। কেউ থামেন না। কোনো বাধাই দমিয়ে রাখতে পারে না তাদের।

সব বাধা পেরিয়ে যারা সফল হন, তারাই অদম্য মেধাবী।
আর এই সফলতার গল্পগুলো মানুষকে স্বপ্ন দেখায়, হয়ে ওঠে অনেকের অনুপ্রেরণা। সূত্র: ডেইলি বাংলাদেশ

তাদেরই একজন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী বাসিরাতুন জান্নাত বিউটি।

জন্ম থেকে দুটো হাত নেই তার। আছে শুধু দুটো পা। দুই হাত না থাকায় জন্মের পর দেখেছেন জীবনের কঠিন বাস্তবতা। তারপরও থেমে যাননি তিনি। ইচ্ছে ছিলো ভালোভাবে লেখাপড়া করে মানুষের মতো মানুষ হবেন।

কঠিন মনোবল, অদম্য উৎসাহ, প্রবল ইচ্ছাশক্তি আর একনিষ্ঠতা থাকার কারণে তার কাছে কোনো প্রতিবন্ধকতা বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। কেউ তাকে দমিয়ে রাখতে পারেনি। পা দিয়ে লিখেই নিজের যোগ্যতায় জায়গা করে নিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে।

জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার শিবপুর গ্রামের বায়েজিদ ও রহিমা দম্পতির গরিব ঘরের মেধাবী বিউটি। তার বাবা কৃষক, মা গৃহিণী।

পরিবারের পাঁচ সদস্যদের মধ্যে বিউটি সবার ছোট। ছোটোবেলা থেকেই লেখাপড়ার প্রতি প্রচণ্ড আগ্রহী ছিলেন। হাত না থাকলেও দুই পায়ের জোরে (পা দিয়ে লিখে) পিএসসি, জেএসসি, এসএসসি পরীক্ষায় পেয়েছেন জিপিএ-৫। এইচএসসিতে পেয়েছেন ‘এ’ গ্রেড। এখন পড়ছেন দেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে বিনোদপুরের মির্জাপুর এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় থাকেন বিউটি ও তার মা। করোনাভাইরাসের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় এখন বাড়িতে অবস্থা করছেন তারা।

বিউটির মা রহিমা বেগম বলেন, আমার মেয়ের সমস্যা থাকার কারণে সব সময় মেয়ের সাথেই থাকতে হয়। সকালে মেয়েকে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ে যাই সঙ্গে করে আবার নিয়ে আসি। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় এখন বাসা ছেড়ে দিয়ে নিজ বাড়িতেই থাকছি। প্রথমে মেয়েকে নিয়ে অনেক চিন্তিত ছিলাম। এখন স্বপ্ন দেখছি, আমার মেয়ে একদিন জজ হবে।

ছোটোবেলায় শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন দেখলেও বিউটি এখন স্বপ্ন দেখেন আইনজীবী হওয়ার। তিনি বলেন, এসএসসি শেষ করার পর স্বপ্ন দেখতাম শিক্ষক হবো। এখন যেহেতু আইন বিভাগে পড়ছি সে সুবাধে দেশের স্বনামধন্য একজন আইনজীবী হওয়ার ইচ্ছেতো রয়েছেই। ভবিষ্যতে কি করবো বা কি হবো এখনও সেভাবে ভাবিনি। এখনো মনে হয় জজ হবো, কখনোতো অন্যকিছু। তবে এমন কিছু করবো যার মাধ্যমে মানুষের সেবা করতে পারবো।

বিউটি আরো বলেন, আমার এতদূর আসার পেছনে সব সময় পরিবার সাপোর্ট দিয়েছে। তারা যদি আমাকে সহযোগিতা না করতো তাহলে আজকের অবস্থানে আসতে পারতাম না। সেই ছোটোবেলায় স্কুলজীবন থেকেই শিক্ষক, বন্ধুদের অনেক সাহায্য পেয়েছি। পরিবার, প্রতিবেশী সবাই আমাকে অনেক সাপোর্ট করছে। সবারভালোবাসা ও সহযোগিতায় আমি এতোদূর আসতে পেরেছি।

যদি থাকে অদম্য সাধনা আর দৃঢ় ইচ্ছে শক্তি তবে কোনো বাধায় বাধা নয়। অসম্ভবকেই সম্ভব করা যায় মনের শক্তি আর অধ্যাবসায় দ্বারা। তাই করে দেখিয়েছেন রাবির এই অদম্য মেধাবী। দুই হাত ছাড়া বিউটি কখনো হননি কারো দয়ার পাত্র। নিত্যদিনের কাজকর্মও করেন আট-দশজনের মতোই। তরকারি কাটা, পেঁয়াজ কাটা, রান্না করা, গৃহস্থালীর প্রায় সব কাজই করতে পারে অনায়াসে।

 

তার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক হাসিবুল আলম প্রধান বলেন, সাংবাদিক ও বিভাগের শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে তার সম্পর্কে জেনেছি। করোনার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সরাসরি তাকে দেখার সুযোগ হয়নি। সে আমাদের জন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত। হাজার প্রতিবন্ধকতা থাকা সত্ত্বেও সে পিছিয়ে যায়নি। প্রতিবন্ধী হলেই যে কিছু করা যায় না, সে প্রথাকে সে ভেঙে দিয়েছে। আমাদের বিভাগে ভর্তি হয়েছে তার জন্য আমরা গর্বিত। বিভাগের পক্ষ থেকে তার জন্য অবশ্যই অনেক কিছু করার আছে। বিভাগের পক্ষ থেকে যতটুকু সহযোগিতা করা যায় সে চেষ্টা আমরা সব সময় করবো।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়