শিরোনাম
◈ ‘তুমি কেন ফুয়েল কেটে দিলে?’ ভারতীয় বিমান বিধ্বস্তের আগে পাইলটদের শেষ ককপিট ভয়েস রেকর্ডিং ◈ দক্ষিণ কোরিয়া প্রবাসীদের জন্য সুখবর: মৃত্যু হলে লাশ দেশে পাঠাবে সরকার, ক্ষতিপূরণ মিলবে বীমার আওতায় (ভিডিও) ◈ বিশ্বের সর্বাধিক মুসলিম জনসংখ্যার দেশ হতে যাচ্ছে ভারত: পিউ রিসার্চ ◈ বেপরোয়া বিএনপির অভ্যন্তরীণ সংঘাতে ছয় মাসে নিহত ৪৩ ◈ স্প‌্যা‌নিশ ক্যাবরেরাই থাক‌ছেন বাংলা‌দেশ ফুটবল দ‌লের কোচ ◈ সন্ধ‌্যায় নেপালের বিরু‌দ্ধে লড়াই‌য়ে নাম‌ছে বাংলা‌দে‌শের মে‌য়েরা ◈ ঢাকায় হবে এশিয়া কাপের সভা, ভারত অংশ নে‌বে না ◈ এবার যে কারণে বিএনপি থেকে পদত্যাগ করলেন ড. ফয়জুল হক ◈ ফিলিস্তিনকে অবিলম্বে স্বীকৃতি দিতে ব্রিটিশ সরকারকে ৬০ জন এমপির চিঠি ◈ সায়মা ওয়াজেদের ছুটি জবাবদিহির পথে গুরুত্বপূর্ণ প্রথম পদক্ষেপ : প্রেসসচিব

প্রকাশিত : ০১ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ০৬:১৬ সকাল
আপডেট : ০১ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ০৬:১৬ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

অজয় দাশগুপ্ত: সব বাধা পেরিয়ে বাংলাদেশে যে আলোক শিখা জ¦লছে

অজয় দাশগুপ্ত: বাংলাদেশ মহামারীর সময় থেমে থাকেনি। দুনিয়ার বহুদেশ থমকে যাবার পর আবার গতি ফিরিয়ে আনতে সময় নিয়েছে কিন্তু বাংলাদেশ তার ব্যতিক্রম। আমাদের মনে রাখতে হবে এটি পৃথিবীর জনবহুল ঘনবসতির দেশ। দীর্ঘকালের শাসন অপশাসন পরিকল্পনাহীনতায় এর নাজুক অবস্থা হলেও সে এখন ঘুরে দাঁড়িয়েছে। দাঁড়াতে শিখে গেছে।

মানুষ এই দেশে সবসময় পরিশ্রমী। তাদের কাজ করে খেতে হয়। মিডিয়ায় আমরা যাদের খবর দেখি বা পড়ি তারা হাতেগোনা। একজন দাগী আসামি চোর, ডাকাত বা লুটেরা এদেশের মুখচ্ছবি হতে পারে না। কাটতি রেটিং বা জনপ্রিয়তা বাড়ানোর জন্য নেগেটিভ বিষয়গুলোর ব্যাপক প্রচার ও মানুষের পছন্দ এক ধরনের মানসিক রোগ। সে রোগ ক্রমবর্ধমান বলেই আমরা পজেটিভ জিনিষগুলো এড়িয়ে যাই কিংবা চোখে পড়ে না। এতো ঘনবসতির দেশে কোভিডকে মোকাবেলা করা সহজ ছিলো না। বিশেষজ্ঞ নামধারী একদল সমালোচক ও সরকার বিরোধী মূলত স্বাধীনতা বিরোধী লোক ফতোয়া দিয়ে দিয়েছিল যে করোনায় লাখ লাখ মানুষ প্রাণ হারাবে। কিন্তু তাদের সে দূরাশা বা অভিশাপ কাজে আসেনি। মাস্ক কেলেঙ্কারী থেকে নিয়ম না মানার পর ও বেশির ভাগ মানুষ সুস্থ আছেন। আর অল্প সময় নিয়ম মেনে চললেই তারা সুড়ঙ্গের শেষপ্রান্তের আলো দেখতে পাবেন।

উন্নয়ন আসলে কী এবং কেন এ বিষয়টি সরকারি দল ঠিকভাবে তুলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছে। এর কারণ দুটি। প্রথমত সাধারণ নেতা কর্মী ও সিনিয়রদের মাঝে এ বিষয়ে জ্ঞান বা চর্চা কম। বাকি কারণ তাদের কথা আদৌ কেউ আমলে নেয় না। ফলে যেটুকু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন সেটাই কেবল মানুষ শোনে বা বিশ^াস করতে ভালোবাসে। আমাদের জানা মতে, করোনার সময় পেঁয়াজ বা এ জাতীয় কয়েকটি খাদ্যের কৃত্রিম অভাব বা সংকট বাদ দিলে মানুষজন মোটামুটি খেয়েই বেঁচে আছেন। বলে রাখা উচিত আমরা দুনিয়ার সব দেশগুলোর সাথে তুলনায় যাবো না। সেটা হবে অবাস্তব। যেমন উন্নত দেশগুলো মানুষকে মাসের পর মাস বলতে গেলে বছর ধরে ভাতা দিয়ে বাঁচিয়ে রেখেছে। বাংলাদেশে কোনো সরকারের সে সাধ্য নাই। জনবহুল এই দেশকে বাঁচতে হলে যেসব বিকল্প পথে হাঁটতে হবে তা মোটামুটি অনুসরণ করা হয়েছে। না হলে চাকরি হারা নিম্ন মধ্যবিত্ত ও গরিবেরা বাঁচতে পারতেন না।

ধন্যবাদ দিতে হবে কৃষি খাতকে। তারা যদি ব্যর্থ হতো বাংলাদেশে অভাব অনটনের বাইরে কিছুই থাকতো না। শস্য ভান্ডার উপচে পড়া আর চালের বাজার ওঠানামা করলেও আয়ত্বে থাকায় মানুষ এখনো বাঁচতে পারছে। কিন্তু মুশকিল হয়েছে মূল রপ্তানি খাত পোশাকশিল্প নিয়ে। বাজার বন্ধ রপ্তানি বন্ধ সব মিলে মালিকেরা যা দেখালেন তা রীতিমতো হতাশার। হাজার হাজার কোটি টাকার আয়ে যারা আঙুল ফুলে কলাগাছ যারা প্রণোদনাভোগী। তারা একটি মাস ও কাজহীন বেতন দিতে পারলো না। এটি পোশাক শিল্পের লজ্জা।

চলতি বছরের শুরুতে প্রকল্পটিতে প্রায় সাড়ে চার হাজার শ্রমিক কাজ করছিলেন। মহামারীর শুরুতে চীনাসহ বিদেশি শ্রমিকরা চলে যাওয়ার পরও মার্চের শুরুতে প্রায় দেড় হাজার শ্রমিক ছিলেন। তাদের নিয়েই সীমিত পরিসরে কাজ চলছিল। বছরের শেষে এসে পুরোদমে কাজ শুরু হয় প্রকল্পটির কাজ। দক্ষিণ জনপদের মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্নপূরণে যে বিপুল কর্মযজ্ঞের সূচনা হয়েছিল পদ্মার পাড়ে, তা পূর্ণ অবয়ব পায় গত ১০ ডিসেম্বর। সেতুর ৪১তম স্প্যান স্থাপনের মধ্য দিয়ে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার পদ্মা সেতুর পুরো মূল কাঠামো দৃশ্যমান হয় সেদিন; তৈরি হয় রাজধানীর সঙ্গে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার সরাসরি সড়ক যোগাযোগের পথ। ১০ মাস থেকে একবছরের মধ্যে সেতুর কাজ শেষ হবে। এর মধ্যে সেতুতে ঢালাইয়ের কাজ, সড়কের জন্য প্রস্তুত করা, রেলের জন্য প্রস্তুত করার কাজ শেষ করা হবে।

সব ঠিক থাকলে ২০২২ সালের প্রথম ভাগেই এ সেতু চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা যাবে বলে সরকার আশা করছে। এতো বড় অগ্রগতি আমরা জীবদ্দশায় দেখবো ভাবিনি। উন্নয়নের অন্তরায় শুধু করোনা না রোহিঙ্গা সমস্যার মতো উটকো ঝামেলা আমাদের থমকে দিচ্ছে বারবার। এ লেখা যখন লিখছি তখন দেখলাম নয়টি দেশ মিয়ানমারের বিরুদ্ধে দাঁড়ালেও চীন রাশিয়া এখনো তাদের সমথর্ন দিচ্ছে। বিশে^র রাজনীতিতে প্রভাবশালী এ দুই দেশকে বাদ দিয়ে আমরা কিছুই করতে পারবো না। উন্নয়ন ও জাতির স্বার্থ কূটনীতির নজর কড়া হওয়া দরকার। এদিকে মনোযোগ না দিলে উন্নয়নের গুড় খাবে ভিনদেশের ডেকে আনা সমস্যা।

তবু আমরা আশাবাদী। শেখ হাসিনার প্রজ্ঞা মেধা ও নেতৃত্ব আর পরিশ্রমী কৃষক শ্রমিক কর্মজীবীদের জন্য এ বছরটি আরো চ্যালেঞ্জের। তারা চৌকোনা বাক্সে বা টেবিলে বসে লেকচার দেন না। ঠিক যেমন কঠিন সময় স্বাস্থ্যকর্মী ডাক্তারদের। তারা ব্যর্থ হলে আমরা কিছুই করতে পারবো না। উন্নয়নের পাশাপাশি দুর্নীতি আর মস্তানতন্ত্র বন্ধ হলে সুফল আরো তাড়াতাড়ি পাওয়া সম্ভব। রাজনীতি যদি কাজ করে এবং দলবাজির পরিবর্তে দেশ ও মানুষের কল্যাণের অগ্রযাত্রাকে সামনে রাখে বাংলাদেশ এতো কিছুর পর ও তার চূড়ান্ত পর্বে পা রাখতে পারবে। স্বাধীনতার ৫০ বছরে এর চেয়ে বড় পাওয়া আর কিছুই হতে পারে না। জয়তু বাংলাদেশ।

লেখক : কলামিস্ট ও বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষক

 

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়