শিরোনাম
◈ ইসরায়েলি হামলায় ৪৩৭ ফুটবলারসহ ৭৮৫ ফিলিস্তিনি ক্রীড়াবিদের মৃত্যু ◈ পশ্চিম তীরে দখলদার ইসরায়েলিদের সাথে তাদেরই সেনা জড়ালো সংঘর্ষে! (ভিডিও) ◈ আমদানি-রপ্তানিতে এনবিআরের নতুন নিয়ম: বাধ্যতামূলক অনলাইন সিএলপি দাখিল ◈ জুলাই স্মরণে শহীদ মিনারে ছাত্রদলের মোমবাতি প্রজ্বলন (ভিডিও) ◈ জুলাই বিদ্রোহ: কোটা সংস্কার থেকে গণঅভ্যুত্থান ◈ ভারতের বাংলাদেশ সফর নিয়ে যা বললেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল ◈ ৪৪তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ, ক্যাডার পদে মনোনয়ন পেলেন ১৬৯০ জন ◈ ১৮ জুলাই নতুন দিবস ঘোষণা ◈ ডিসি-এসপি কমিটি ও ইভিএম বাদ, ভোটকেন্দ্র স্থাপনে নতুন নীতিমালা জারি করলো ইসি ◈ বাংলাদেশে আগ্নেয়াস্ত্র লাইসেন্স: কীভাবে পাবেন, কী কী শর্ত মানতে হবে?

প্রকাশিত : ২৪ জানুয়ারী, ২০২১, ০৬:২৩ সকাল
আপডেট : ২৪ জানুয়ারী, ২০২১, ০৬:২৩ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

জঙ্গি সংগঠন আনসার ইসলামের টার্গেট অনলাইনে মনযোগী শিক্ষার্থীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক : জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধের চেষ্টা করা হচ্ছে আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত মেধাবী শিক্ষার্থীদের। উদ্বুদ্ধ হয়ে ইসলামী বিপ্লবের নামে মেধাবী শিক্ষার্থীরা জঙ্গিবাদে নিজেদের জড়াচ্ছেন। কোভিড মহামারির মধ্যে ঘরবন্দি অনলাইনে মনোযোগী শিক্ষার্থীদেরও জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা চলছে।

করোনাকালে স্কুল-কলেজসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রয়েছে। ফলে অনলাইনে বেশি মনযোগী শিক্ষার্থীরা। এর সুযোগ নিচ্ছে জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলাম। অনলাইনের মাধ্যমে আগ্রহ তৈরি ও অনুপ্রেরণা যুগিয়ে মগজ ধোলাই করে জঙ্গিবাদে জাড়নো হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।

গত শুক্রবার রাতে রাজধানীর পল্লবীর রূপনগর থানা এলাকা থেকে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের ৫ সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর এমন তথ্য জানতে পেরেছে র‌্যাব-৪। গ্রেপ্তার ৫ সদস্য হলেন- হাসিবুর রহমান ওরফে সোহেল (২৭), মোশারফ হোসেন ওরফে আতিক (১৯), রামিম হোসেন ওরফে পনির হোসেন ওরফে নাহিদুর রহমান (২২), সজিব মিয়া ওরফে খিজির (২০) ও চঞ্চল হোসেন ওরফে আব্দুল্লাহ (১৯)। তাদের কাছ থেকে সংগঠনের বিভিন্ন ধরনের ১২টি উগ্রবাদী বই, ২৩টি লিফলেট, ১৩৫টি স্ক্রীনশটসহ ৬টি মোবইল ফোনসেট জব্দ করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে চারজনই বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্খী।

র‌্যাব বলছে, গ্রেপ্তারকৃতরা করোনাকালে ঘরবন্দি অনলাইনে মনোযোগী শিক্ষার্থীদের জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টায় ছিলেন। পাশাপাশি জঙ্গি অর্থায়নের প্রচেষ্টাও করছিলেন। তবে তাদের বড় ধরনের হামলার কোনো পরিকল্পনা ছিল না।

র‌্যাব-৪ জানায়, গ্রেপ্তার হাসিবুর রহমান একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত এবং আনসার আল ইসলামের সদস্য হিসেবে তিনি ও তার সহযোগীরা গোপনে অন্যদের উদ্ধুদ্ধকরণের জন্যে বিভিন্ন কার্যক্রম চালাচ্ছিলেন। এছাড়াও তিনি সংগঠনের সদস্যদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করছিলেন এবং অনলাইনে উগ্রবাদী মতবাদ প্রচার করছিলেন।

রামিম হোসেন কলেজ শিক্ষার্থী এবং বেশ কিছু দিন ধরে আনসার আল ইসলামের সঙ্গে জড়িত থেকে তাদের নিজস্ব ইলেক্ট্রনিক গ্রুপে বিভিন্ন সময়ে উগ্রবাদী কার্যক্রম আপলোড করতেন। এছাড়া তিনি অনলাইনে বিভিন্ন উগ্রবাদী লেখালেখি, ভিডিও এবং লিফলেট প্রচার করছিলেন।

সজিব মিয়া কলেজ শিক্ষার্থী ও মোশারফ হোসেন রাজধানীর একটি সিকিউরিটি কোম্পানীতে চাকরি করতেন। দীর্ঘদিন ধরে তারা নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থেকে অন্যদের সাথে গোপন বৈঠকের পাশাপাশি চাঁদা ও নতুন সদস্য সংগ্রহ করছিলেন।

চঞ্চল হোসেন কলেজ শিক্ষার্থী এবং জঙ্গি সংগঠনের সদস্য হিসেবে তিনি ও তার সহযোগীরা গোপনে অন্যদের উদ্ধুদ্ধকরণের জন্যে বিভিন্ন কার্যক্রম চালাচ্ছিলেন।

র‌্যাব-৪ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোজাম্মেল হক বলেন, দেশব্যাপী জঙ্গি কর্মকাণ্ড পরিচালনায় রাজধানীর পল্লবী এলাকায় গোপন বৈঠকে অংশ নিচ্ছে আনসার আল ইসলামের কয়েক সদস্য। এমন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে আনসার আল ইসলামের ৫ সক্রিয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের সবাই বয়সে কিশোর। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সবাই আনসার আল-ইসলামের সক্রিয় সদস্য বলে স্বীকারোক্তি দিয়েছে।

তিনি বলেন, বৈঠকে দাওয়াতি কার্যক্রমের মাধ্যমে তরুণদের টার্গেট করে সদস্য বাড়ানোর পরিকল্পনা ছিলো তাদের। এছাড়া করোনাকালে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকায় ঘরবন্দি অনলাইনে মনোযোগী শিক্ষার্থীদের জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টাও করছিলেন গ্রেপ্তারকৃতরা।

র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, জঙ্গিদের সংখ্যা বৃদ্ধি করা এবং জঙ্গিবাদে অর্থায়নে কথিত জিহাদের স্বপ্ন দেখিয়ে ধর্মীয় অপবেক্ষার মাধ্যমে কৌশলে মগজ ধোলাই করে উচ্চশিক্ষিতদের উগ্র জঙ্গিবাদে জড়ানো হচ্ছিলো। ব্রেনওয়াস করে উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করা হতো যে, এটাই একমাত্র মুক্তির পথ। অনলাইন প্লাটফর্মকে তারা বেছে নিয়েছে বা ব্যবহার করেছে।

তিনি বলেন, ফান্ড কালেকশনের পাশাপাশি, করোনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় অনলাইনে এক্টিভদের টার্গেট ও গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দেশে ইসলামি খেলাফত প্রতিষ্ঠা ছিলো আনসার আল ইসলামের প্রধান উদ্দেশ্য। সংগঠনের মতাদর্শের বিরোধ যারা করেন, বিশেষ করে লেখক, ব্লগার ও সংবাদপত্রে যারা নিবন্ধ লেখেন তাদের শায়েস্তা করাও উদ্দেশ্য এই সংগঠনের।

সামাজিক ও পারিবারিকভাবে নজর দিলে এটা ঠেকানো সম্ভব উল্লেখ করে রাব-৪ এর অধিনায়ক মোজাম্মেল হক বলেন, সাধারণ মানুষকেও সচেতন হতে হবে। কারণ সচেতনতাই যে কোনও অপরাধ প্রতিরোধের অন্যতম প্রধান বিষয়। সচেতনতা বৃদ্ধি পেলে কেউ ভ্রান্ত ব্যাখ্যায় জঙ্গিবাদে জড়ানোর আগে সেই ব্যাখ্যা যাচাই করার সুযোগ পাবে।

অভিভাবকদের সন্তানের প্রতি নজদারির আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বাবা-মা বা অভিভাবকদের খেয়াল রাখতে হবে যে, সন্তান কোথায় যাচ্ছে, কি করছে, কার সঙ্গে সময় কাটাচ্ছে, আড্ডা দিচ্ছে, অনলাইনে কি করছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়