শিরোনাম
◈ ইরানের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ চলচ্চিত্র ও টিভি খাতে ভারতের সঙ্গে অভিজ্ঞতা বিনিময় হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী ◈ উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করলেই ব্যবস্থা: ইসি আলমগীর  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের ◈ বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়লো

প্রকাশিত : ১৬ জানুয়ারী, ২০২১, ০৯:৪৮ সকাল
আপডেট : ১৬ জানুয়ারী, ২০২১, ০৯:৪৮ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি ৩৩ হাজার কোটি টাকা

ডেস্ক রিপোর্ট: চলতি অর্থবছরের (২০২০-২১) প্রথম ছয় মাসে (জুলাই থেকে ডিসেম্বর) রাজস্ব আয়ে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৩ শতাংশ পিছিয়ে রয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), টাকার অংকে যা প্রায় ৩৩ হাজার কোটি। তবে গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় রাজস্ব আদায়ে ২ দশমিক ১০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। আলোচ্য সময়ে রাজস্বের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১ লাখ ৪১ হাজার ২২৫ কোটি ১১ লাখ টাকা। বিপরীতে আদায় হয়েছে ১ লাখ ৮ হাজার ৪৭১ কোটি ৭১ লাখ টাকা।

চলমান করোনা মহামারীর কারণে রাজস্ব আদায়ে এ ঘাটতি তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন এনবিআর কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, বছরের শুরুতে এমনিতেই রাজস্ব আদায়ে ধীরগতি থাকে। এবার এর সঙ্গে যোগ হয়েছে করোনা পরিস্থিতি। দেশে ব্যবসা-বাণিজ্যে স্থবিরতা বিরাজ করছে। অন্যদিকে মহামারী সামাল দিতে খাদ্যসহ ভোগ্যপণ্য, সুরক্ষাপণ্য সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে ভ্যাট-ট্যাক্সে ছাড় দেয়া হয়েছে। তবে বর্তমানে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হতে শুরু করায় সামনের দিনগুলোতে রাজস্ব আদায় বৃদ্ধির প্রত্যাশা করছেন তারা।

অন্যদিকে সরকার নিজস্ব খেয়ালমতো বাজেট করায় রাজস্ব আদায়ে মোটা অংকের ঘাটতি তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেন, এ বছর রাজস্ব আহরণে বিশাল একটা ঘাটতি হবে এটা আমরা জানতাম। তার পরও সরকার নিজস্ব খেয়ালমতো বাজেট করে। সবাই বলেছিল এটা অর্জন সম্ভব নয়। এখন সেটাই প্রমাণ হচ্ছে। আমাদের হিসাবে অর্থবছর শেষে ৮০ থেকে ৯০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব ঘাটতি হবে। রাজস্বে গতি আনতে বর্তমানে নতুন করে কিছু করার নেই। এ সময়ে অর্থনীতি খুব দুর্বল অবস্থায় রয়েছে বলে মনে করেন তিনি।

এনবিআরের রাজস্ব আহরণের সাময়িক বিবরণীর তথ্য বলছে, ছয় মাসে আমদানি ও রফতানি পর্যায়ে রাজস্ব খাতে ৪৬ হাজার ১৯৭ কোটি ১৯ লাখ টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আদায় হয়েছে ৩৩ হাজার ৬০৮ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। এক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৭ দশমিক ২৫ শতাংশ কম রাজস্ব আদায় হয়েছে। তবে গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ। স্থানীয় পর্যায়ে মূসক খাতে ৫২ হাজার ৮৩৭ কোটি ৯৩ লাখ টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আদায় হয়েছে ৪০ হাজার ৬২৪ কোটি ২২ লাখ টাকা। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৩ দশমিক ১২ শতাংশ রাজস্ব আদায় কম হয়েছে। এমনকি গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায়ও এক্ষেত্রে রাজস্ব কমেছে ৩ দশমিক ৩৬ শতাংশ। আয়কর ও ভ্রমণ কর বাবদ ৪২ হাজার ১৮৯ কোটি ৯৯ লাখ টাকার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আয় হয়েছে ৩৪ হাজার ২৩৮ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। এক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৮ দশমিক ৮৫ শতাংশ রাজস্ব কম আদায় হয়েছে। তবে গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪ দশমিক ৭৩ শতাংশ।

লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে রাজস্ব আদায় কম হওয়ার বিষয়টি দৃষ্টি আকর্ষণ করলে এনবিআর চেয়ারম্যান রহমাতুল মুনিম কোনো কথা বলতে রাজি হননি। তবে সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আমরা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে পিছিয়ে আছি। তবে করোনাজনিত পরিস্থিতিতে অর্থনীতির যে অবস্থা, তাতে গত বছরের চেয়ে এগিয়ে আছি, সেটা আশাব্যঞ্জক। আশা করছি ভবিষ্যতে প্রবৃদ্ধি আরো ভালো হবে।

অন্যদিকে অর্থনীতির গতি কমে যাওয়ার কারণেই রাজস্ব আহরণ কমেছে বলে মনে করেন এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মজিদ। তিনি বলেন, করোনার মধ্যেই চলতি বাজেট দেয়া হলেও রাজস্ব আয়ের ক্ষেত্রে অস্বাভাবিক লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। বৈশ্বিক মহামারীকে বিবেচনায় নিয়ে একটা অন্তর্বর্তীকালীন বাজেট দেয়ার কথা উঠলেই শেষ পর্যন্ত স্বাভাবিক বাজেটই দেয়া হয়। সরকার মনে করেছিল অল্প দিনেই করোনা চলে যাবে। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি, এখনো করোনা বিদ্যমান। করোনায় মানুষের আয় কমেছে, একেবারে যেটুকু না কিনলেই নয় সেটুকু কিনছে। ফলে অর্থনীতিতে কোনো গতি নেই। তাই রাজস্বও কম আদায় হচ্ছে।

তিনি বলেন, অর্থনীতিতে গতি সঞ্চারের জন্য প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার। কিন্তু সে প্রণোদনা শুধু বড় ব্যবসায়ীরাই পাচ্ছেন। ব্যাংকগুলো প্রান্তিক ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের প্রণোদনার ঋণ দিচ্ছে না। প্রণোদনার আওতায় সিএমএসএমই খাতে চলতি মূলধন দেয়ার জন্য ২০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হলেও সেগুলো ঠিকমতো বিতরণ হচ্ছে না। ফলে অর্থনীতিতে গতি আসছে না বলে মনে করেন তিনি।

উল্লেখ্য, চলতি অর্থবছরে সরকারের মোট রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ৩ লাখ ৮২ হাজার ১৩ কোটি টাকা। এখান থেকে এনবিআরকে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা দেয়া হয় ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। সূত্র: বণিক বার্তা

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়