ডেস্ক রিপোর্ট : দেশে বিকৃত যৌনরুচির কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন পণ্যের প্রসার ক্রমেই বাড়ছে। একটি কল করেই যে কেউ অনলাইনের বিভিন্ন নামি-বেনামি প্রতিষ্ঠান থেকে মারাত্মক ক্ষতিকর এসব পণ্য হাতে পেয়ে যাচ্ছেন। এসব পণ্যের ভেতর রয়েছে যৌন উত্তেজক ভায়াগ্রা ট্যাবলেটও। এই ট্যাবলেট কিনতে চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র বাধ্যতামূলক হলেও যে কেউ ফার্মেসিতে বা অনলাইনে অর্ডার দিয়ে কিনতে পারছেন। সময়নিউজকে বিশেষজ্ঞরা বলেন, এই ধরনের পণ্য আমাদের তরুণ সমাজকে বিপদের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। সময় টিভি
সম্প্রতি রাজধানীতে ঘটে যাওয়া ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনাতেও এসব পণ্য ব্যবহারের আলামত পাওয়া গেছে। মাদকের ভয়াল ছোবলের মতোই বিকৃত যৌনরুচির এসব উপাদান বিপজ্জনক হয়ে উঠছে। প্রশ্নের মুখে পড়েছে সামাজিক ও নৈতিক মূল্যবোধ।
সম্প্রতি রাজধানীর কলাবাগানে ধর্ষণের পর রক্তক্ষরণে এক স্কুলছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। আনুশকা নূর আমিন নামের ঐ ছাত্রীর দেহে ‘ফরেন বডি’র আলামত মিলেছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনুশকার ময়নাতদন্ত হয়। সেখানকার ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, স্বাভাবিক শারীরিক সম্পর্কে এতটা ভয়াবহ পরিণতি হওয়ার কথা নয়। শরীরের নিম্নাঙ্গে কোন ‘ফরেন বডি’ জাতীয় কিছু একটা ব্যবহার করা হয়েছে। এক কথায় সেখানে বিকৃত যৌনাচার করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমি আমার পোস্টমর্টেম জীবনের অভিজ্ঞতার আলোকে বলতে পারি, স্বাভাবিক শারীরিক সম্পর্কে এই ইনজুরি মোটেও সম্ভব না। ওটা অন্য কিছু ছিল।
যোনিপথ ও পায়ুপথ থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণের কারণে ভুক্তভোগীর মৃত্যু হতে পারে বলে ধারণা এই চিকিৎসকের। তিনি বলেন, প্রচুর রক্তক্ষরণ হওয়ায় সে ‘হাইপো ভোলেমিক’ শকে মারা গেছে।
রাজধানী ঢাকায় ঘটে যাওয়া ঘটনা পর্যবেক্ষণে চিকিৎসক ‘ফরেন বডি’র কথা উল্লেখ করেছেন। ফলে আলোচনায় উঠে এসেছে বিকৃত যৌনরুচি মেটাবার বিভিন্ন উপাদান বা পণ্যের কথা।
সময় নিউজের পক্ষ থেকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অনলাইনে চাইলেই পাওয়া যাচ্ছে বিকৃত যৌনাচারের বিভিন্ন পণ্য। ফেসবুকে হর হামেশাই পপ আপ বিজ্ঞাপনে উঠে আসছে বিভিন্ন যৌনসামগ্রী। এইসব যৌনসামগ্রী পশ্চিমা বিভিন্ন দেশে বৈধ হলেও বাংলাদেশে অবৈধ। তবুও আড়ালে আবডালে এসব পণ্য কিনতে সক্ষম হচ্ছেন যেকোন বয়সের ক্রেতারা। যদিও দোকানিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তারা দাবি করেন শুধুমাত্র প্রাপ্তবয়স্করাই তাদের ক্রেতা।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, বাস্তবতা একেবারেই ভিন্ন। এই পণ্যগুলোর কিছু বৈধ আর কিছু একেবারেই অবৈধ। যেমন 'ম্যাজিক কনডম' নামের একটি বিশেষ কনডম বাজারে রয়েছে যা এক হাজারেরও বেশিবার ব্যবহার করা যায়। বিক্রেতাদের দাবি, এটি একটি বৈধ পণ্য। এর ড্রাগ লাইসেন্স রয়েছে।
এ বিষয়ে এশিয়ান স্কাই শপের এক্সিকিউটিভ অফিসার মেহেদি হাসান সময়নিউজকে জানান, ম্যাজিক কনডমটা আমরা বিক্রি করি। এটা বৈধ। তবে অন্যান্য আরো প্রডাক্ট আছে যা বৈধ নয়। যেমন ডিলডো, ফ্লাশলাইট, বিভিন্ন যৌন উত্তেজক ক্যাপসুল, স্প্রে প্রভৃতি।
সামাজিকমাধ্যম ফেসবুকে পেজ খুলে ও ইউটিউবে চ্যানেল খুলে বহু কালোবাজারি এসব বিক্রি করছে। তাদের অন্যতম পণ্য হচ্ছে, ডিলডো (পুরুষের বিশেষ অঙ্গের ন্যায় প্লাস্টিক বা সিলিকন দিয়ে তৈরি বস্তুত), প্লাস্টিক বা সিলিকনের তৈরি ম্যাজিক কনডম, যৌন পুতুল, স্প্রে ও ভায়াগ্রা। এসব পণ্যের আবার বহু রং, প্রকার ও আকার রয়েছে।