শিরোনাম
◈ বিশ্ববাজারে সোনার সর্বোচ্চ দামের নতুন রেকর্ড ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ চেক প্রতারণার মামলায় ইভ্যালির রাসেল-শামিমার বিচার শুরু ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ প্রফেসর ইউনূসকে প্রদত্ত "ট্রি অব পিস" প্রধানমন্ত্রীকে প্রদত্ত একই ভাস্করের একই ভাস্কর্য: ইউনূস সেন্টার ◈ নির্বাচনী বন্ড কেবল ভারত নয়, বিশ্বের সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারি: অর্থমন্ত্রীর স্বামী ◈ কুড়িগ্রামে অর্থনৈতিক অঞ্চলের স্থান পরিদর্শন করে দেশে ফিরলেন ভুটানের রাজা ◈ জনগণকে সংগঠিত করে চূড়ান্তভাবে বিজয় অর্জন করতে হবে: মির্জা ফখরুল ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী ◈ জিয়াউর রহমানের সময়ই দেশে বিভেদের রাজনীতির গোড়াপত্তন হয়: ওবায়দুল কাদের 

প্রকাশিত : ০৮ জানুয়ারী, ২০২১, ০২:০৬ রাত
আপডেট : ০৮ জানুয়ারী, ২০২১, ০২:০৬ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বিদেশ থেকে দ্রুত মালামাল এনে দেয়ার নামে প্রতারণা, আটক ২

সুজন কৈরী : ডিজিটালাইজেশনের এ যুগে অনলাইনে কেনাকাটা এখন অনেক সহজতর হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রেই মার্কেটে না গিয়ে সরাসরি অনলাইনে কোনো পণ্য ক্রয় বা বিক্রয় করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন অনেকে। বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে অনলাইন থেকে কেনাকাটার ব্যাপকতা বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে প্রচুর পরিমান ছোট ছোট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। বিপরীতে আবার একদল প্রতারক চক্র এমন ব্যবসা খুলে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে জনসাধারণের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে।

এমনই একটি চক্রের দুই সদস্যকে বুধবার রাজধানীর মিরপুরের মনিপুরের ৩৭৬/৩ নম্বর বাসা থেকে আটক করেছে সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার।

আটকরা হলেন- শাহ আকবর ও জি. এম. তানভীর হোসেন। আটকের সময় তাদের কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত বিকাশ একাউন্ট এবং ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে অসংখ্য লেনদেনের তথ্য উদ্ধার করা হয়েছে।

সাইবার পুলিশ সেন্টার জানায়, সাইবার সাপোর্ট টিম ফেসবুক.কম/আপশিপার (facebook.com/upshipper) নামক ফেসবুক পেজের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ পায়। অভিযোগগুলো নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করে সাইবার মনিটরিং টিম। দেখা যায়, পেজটিতে বিভিন্ন ধরনের বিজ্ঞাপন দেয়া হচ্ছে। বিজ্ঞাপনগুলোর মূল বক্তব্য হচ্ছে- পৃথিবীর যেকোনো দেশ থেকে মালামাল আমদানি করার জন্য এ প্রতিষ্ঠান কাজ করে। মালামাল আমদানি করার জন্য যে এলসি, টিটি, শিপমেন্ট ও কাস্টমস ক্লিয়ারেন্সের দরকার হয়, এ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ইমপোর্ট করালে তার কোনো কিছুই প্রয়োজন হবে না। যোগাযোগের জন্য তাদের একটি মোবাইল নম্বর দেয়া ছিলো।

এভাবেই প্রতারক চক্রটি অনলাইনে ফাঁদ পাতে। ভিকটিমরা বিভিন্ন দেশ থেকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য আনার জন্য তাদের সাথে যোগাযোগ করে। টাকার অ্যামাউন্ট কম হলে বিকাশ একাউন্টে আর টাকা পরিমান বেশি হলে ব্যাংক একাউন্টে অর্থ পাঠাতে বলে। তবে প্রথমেই তারা সমুদয় অর্থ পাঠাতে না বলে মূল অর্থের একটি অংশ (সাধারণত ৫০ ভাগ) পাঠাতে বলে। ভিকটিমদের বিশ্বাস অর্জনের জন্যই চক্রটি এমনটি করে থাকে। কিছুদিন পর প্রতারক চক্রের সদস্যরা ভিকটিমদের জানায়, অর্ডার করা পণ্য কেনা হয়েছে এবং কয়েক দিনের মধ্যেই দেশে পৌঁছাবে। পণ্য সময়মতো হাতে পেতে চাইলে বাকি অর্থ এখনই পরিশোধ করতে হবে। ভুক্তভোগীরা প্রতারকদের কথা বিশ্বাস করে বাকি অর্থ একইভাবে পাঠায়। টাকা পাওয়ার পর চক্রটি ভিকটিমদের সঙ্গে সম্পূর্ণ যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়।

সাইবার পুলিশ সেন্টারের সাইবার ইন্টেলিজেন্স এন্ড রিস্ক ম্যানেজমেন্টের বিশেষ পুলিশ সুপার রেজাউল মাসুদ বলেন, আটকদের কাছ থেকে প্রতারণার সাথে সংযুক্ত ফেসবুক পেজ ছাড়াও প্রায় একই রকম আরও ২৩টি ভিন্ন ভিন্ন নামে ভিন্ন ভিন্ন ফেসবুক পেইজ পাওয়া গেছে। পেইজগুলো বিশ্লেষন করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে প্রতারণার শিকার বেশ কয়েকজন ভিকটিমের তথ্য পাওয়া গেছে এবং ৪ জন ভিকটিম আটকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন।

সিআইডির এই কর্মকর্তা আরও জানান, আটকদের কাছে থেকে প্রাপ্ত দুটি বিকাশ একাউন্টে ছয় লাখেরও বেশি টাকা এবং ডাচ বাংলা ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে প্রায় বিশ লাখ টাকার লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। এসব অর্থ বিভিন্ন ভিকটিমের কাছ থেকে প্রতারনার মাধ্যমে অর্জিত বলে ধারনা করা হচ্ছে।

এছাড়া জিজ্ঞাসাবাদে আটকরা প্রতারণার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে প্রতারণার শিকার একজন ভিকটিম রাজধানীর উত্তরখান থানায় মামলা দায়ের করেছেন। আটকদের ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের রিমান্ডের আবেদন করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

রেজাউল মাসুদ বলেন, অনলাইনে কেনাকাটার ক্ষেত্রে প্রতরাণা এড়াতে ‘ক্যাশ অন ডেলিভারি’ ও পণ্য অর্ডারের পর রশিদের একটি স্ক্যান কপি তাৎক্ষণিক সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে চেয়ে নিতে হবে। আর অর্ডার করা পণ্যটি গন্তব্যে পৌঁছানোর পর মূল্য পরিশোধ করতে হবে। সেই সময় পণ্যের রশিদের মূল কপিটিও বুঝে নিতে হবে। এতে করে বিক্রয় প্রতিষ্ঠানটি পণ্য না দিয়ে প্রতারণা করলে রশিদের মাধ্যমে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব হবে। এছাড়া কেনাকাটার ক্ষেত্রে বিক্রয় প্রতিষ্ঠানটির বিষয়ে ভালভাবে খোঁজখবর নিয়ে অর্ডার করতে হবে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও অনলাইনের যে কোনো ধরনের সাইবার অপরাধের তথ্য সিআইডির সাইবার পুলিশের সাথে যোগাযোগের জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন সিআইডির এই কর্মকর্তা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়