ইসমাঈল ইমু ও সুজন কৈরী : [২] রাজধানীর উত্তরার আব্দুল্লাহপুর এলাকায় ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে কলেজছাত্র জিসান হাবিব (১৮) হত্যা মামলায় ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- সুন্দরী সুমন, স্বপন, বিপ্লব, তৈয়ব আলী ওরফে উজ্জল ওরফে তবলা ওরফে বাবলা, জাহাঙ্গীর ব্যাপারী ওরফে হৃদয়, তানভীর রহমান নেহাল, জিহাদ, নূরুল ইসলাম রাব্বি ও রাকিব।
[৩] বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় উত্তরা পূর্ব থানায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির উত্তরা বিভাগের ডিসি মো. শহিদুল্লাহ বলেন, জিসান নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীর খলিলুর রহমান ডিগ্রি কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র। গত ২৮ নভেম্বর জিসান নোয়াখালী থেকে ধামরাইয়ে আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে আসেন। গত ৯ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় জিসান এক আত্মীয়কে বিমানবন্দরে পৌঁছে দিতে যান। সেখান থেকে রুহুল আমিন নামের এক আত্মীয়ের সঙ্গে ক্লাসিক পরিবহনের একটি বাসে নবীনগর ফিরছিলেন। বাসটি আবদুল্লাহপুর এলাকায় পৌঁছানোর পর জানালা দিয়ে এক ছিনতাইকারী জিসানের মোবাইল ফোনটি ছিনিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। ওই সময় দ্রুত বাস থেকে নেমে দৌড়ে ছিনতাইকারীকে ধরে ফেলেন জিসান।
[caption id="attachment_1259283" align="alignnone" width="600"] [/caption]
[৪] এ সময় রুহুলও বাস থেকে নেমে সেখানে যান। এরপর তারা দুজন ছিনতাইকারীর কাছ থেকে মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করতে গেলে পেছন থেকে অপর দুইজন ছিনতাইকারী এসে জিসান ও রুহুলকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে ফোনটি নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে আহত জিসান ও রুহুলকে চিকিৎসার জন্য শহীদ মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পঠানো হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জিসানকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলা হয়।
[৫] উত্তরা বিভাগের ডিসি বলেন, ঘটনার তদন্তকালে তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় ঘটনায় জড়িত অভিযুক্তদের শনাক্ত করে গত ১২ ডিসেম্বর উত্তরা ও টঙ্গী এলাকা থেকে সুন্দরী সুমন ও স্বপনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই সময় তাদের কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরিটি উদ্ধার করা হয়। তাদের আদালতের আদেশে রিমাণ্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদে চক্রের অন্যদের বিষয়ে জানা যায়। তাদের দেয়া তথ্যে নরসিংদীর রায়পুরার বাঘাইকান্দী চর এলাকায় অভিযান চালিয়ে ঘটনায় জড়িত বিপ্লব ও তৈয়বকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর উত্তরা ও টঙ্গী এলাকা থেকে বাকিদের গ্রেপ্তার করা হয়।
[৬] তিনি আরও বলেন, গ্রেপ্তার ৯জনসহ পলতাক অভিযুক্ত কবির ও নাতি সোহাগ আব্দুল্লাহপুরসহ উওরা এলাকায় ছিনতাই করে। ঘটনার দিন জিসান ও রুহুল বাস থেকে নেমে ছিনতাইকারী হৃদয়কে ধরে ফেললে চক্রের অন্যরা তাকে ছাড়ানোর জন্য আসে এবং জিসান ও রুহুল আমিনকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়।
[৭] পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যরা একসঙ্গে টঙ্গী ও আব্দুল্লাহপুর এলাকায় ছিনতাই করে থাকে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা আশপাশে আসছে কিনা- তা দেখতে দলের একটি গ্রুপ বিভিন্ন স্থানে পাহারা দেয়। গ্রুপের কোনো একজন ধরা পড়লে গ্রুপের অন্য ৩ থেকে ৪ জন সদস্য মুরুব্বী সেজে ঘটনাস্থলে আসে এবং ‘কি হয়েছে, কি হয়েছে ভাই’ ইত্যাদি কথা বলে আটক ছিনতাইকারীকে ছাড়ানোর চেষ্টা করে। ছিনতাইকারী চক্রটির প্রায় সকল সদস্যের বিরুদ্ধে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় চুরি, মাদক ও ছিনতাইসহ একাধিক মামলা রয়েছে। পলাতকদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।