ইসমাঈল ইমু : [২] সারাদেশে যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সাথে মহান বিজয় দিবস উদযাপিত হয়েছে। এরই আলোকে বুধবার সকল সরকারি আধা-সরকারি স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে সদর দপ্তর ৯ পদাতিক ডিভিশন (সাভার সেনানিবাস) এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে যথাযোগ্য মর্যাদায় সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর একটি সমন্বিত দল কর্তৃক সশস্ত্র অভিবাদন ও পুস্পস্তবক অর্পন করে স্বাধীনতা যুদ্ধে নিহত সকল স্তরের শহীদদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা হয়।
[৩] অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতির পক্ষে তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম শামিম উজ জামান, প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল নকিব আহমেদ চৌধুরী জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুস্পস্তবক অর্পন করেন। এ সময় যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ পূর্বক জাতীয় সংসদের স্পীকার, মন্ত্রীবর্গ, কূটনীতিকবৃন্দ, তিন বাহিনীর প্রধানগণ, জিওসি ৯ পদাতিক ডিভিশন ও এরিয়া কমান্ডার। সাভার এরিয়াসহ উচ্চপদস্থ সামরিক ও অসামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ এবং অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
[৪] এর আগে ঢাকায় পুরাতন বিমান বন্দর এলাকায় জাতীয় প্যারেড স্কোয়ারে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠিত একত্রিশবার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির অনুষ্ঠানমালার সূচনা করা হয়। দিবসটি সাধারণ ছুিট হিসেবে পালিত হয়।
[৫] সশস্ত্র বাহিনীর সকল মসজিদে এ দিন শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের সুস্বাস্থ্য, জাতির শান্তি, সমৃদ্ধি এবং সশস্ত্র বাহিনীর উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। এ উপলক্ষে মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ; সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী সদর দপ্তর, ফরমেশন সদর দপ্তর, গুরুত্বপূর্ণ ভবন/ফটোকসমূহে এবং নৌবাহিনীর জাহাজসমূহে আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা হয়।
[৬] এছাড়া সশস্ত্র বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট, ঘাঁটি ও জাহাজসমূহের সৈনিক, নাবিক ও বিমান সেনা মেসসমূহ ও সামরিক হাসপাতালসমূহে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হয়। সশস্ত্র বাহিনীর আওতাধীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে জাতীয় পর্যায়ে আয়োজিত অনলাইন, ইমেইল ও ডাক যোগে রচনা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ এবং অনলাইনে মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতারও আয়োজেন করা হয়।
[৭] নতুন প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরার লক্ষ্যে ঢাকার আমিন বাজার থেকে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধ পর্যন্ত সড়কের দুই পার্শ্বে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ ও বিজয় দিবসের চেতনা সম্বলিত উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ব্যানার, ফেস্টুন ও বিলবোর্ড স্থাপন করা হয়। এসব ব্যানার ও বিলবোর্ড সমূহের মাধ্যমে মহান মুক্তিযুদ্ধ তথা বাঙালি জাতির অমর ইতিহাসের ও ঐতিহ্যের প্রতিফলন ঘটানো হয়। এছাড়াও উক্ত সড়কের দুই পার্শ্বে বর্তমান সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডের ছবি প্রদর্শিত হয়।
[৮] সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে সৌন্দর্যবৃদ্ধির নিমিত্তে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়। বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার রং এর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ লাল ফুল এবং সবুজ পাতার প্রাধান্য দিয়ে জাতীয় স্মৃতিসৌধের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করা হয়। দিবসটিকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য বিগত বছরের ন্যায় এবারও যথোপযুক্ত দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করা হয়।
আপনার মতামত লিখুন :