অনির্বাণ আরিফ : দুনিয়ার ইতিহাসে যতো যুদ্ধ, গণহত্যা এবং সংঘাত সংঘটিত হয়েছে তার ৩০ শতাংশ জাতীয়তাবাদ থেকে, ১০ শতাংশ আধিপত্য কায়েক থেকে, ১০ শতাংশ অনভিপ্রেতভাবে আর বাকি ৫০ শতাংশ ধর্ম নিয়ে হয়েছে। ধর্ম হতে পারে বিশ্বাস কিংবা ধারণ করা কিন্তু আধুনিককালে বিশেষত মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ট রাষ্ট্রগুলোতে ধর্মকে বানানো হয়েছে রাজনৈতিক হাতিয়ার এবং রাজনীতি করার মৌলিক রসদ।
বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামের হাত ধরে যে ধর্মরাজনীতির উত্থান সে রাজনীতি বিএনপি ধারণ করে আজ আওয়ামী লীগ দখলে নিয়েছে। দুনিয়াতে যে কটা দেশে বিজ্ঞানী বেশি, প্রযুক্তিবিদ বেশি, উদ্ভাবক বেশি, আবিষ্কারক বেশি, দার্শনিক বেশি এমনকি মানবতাবাদী মানুষ বেশি সে কয়টা দেশে ধর্মের প্রভাব খুব কম এবং ধর্মের রাজনীতি নিষিদ্ধ। কিন্তু দুনিয়ার যে সব দেশে ধর্মীয় চাষাবাদ এবং ধর্মের রাজনীতি বেশি সে সব দেশে বিজ্ঞান নেই, চিন্তা নেই, প্রযুক্তি কম, উদ্ভাবন নেই, আবিষ্কার নেই, এমনকি মানবতাবাদী মানুষও খুব কম।
যখন আমাদেরকে বলা হয় পাকিস্তান, আফগানিস্তান, সিরিয়া, ইরাক, ইরান, লিবিয়া নাকি বৃটেন, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপান, কোরিয়া আমরা ১ মিনিটও না থেমে বলে ফেলি বৃটেন, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপান, কোরিয়া। কেন বলি কোনোদিন ভেবেছি? ভাবতে গেলে বুঝতে পারবো কেন বলি। একটি দেশকে জাহান্নাম বানানোর জন্য ধর্মীয় রাজনীতি যথেষ্ট। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে বাংলাদেশের একালের আশি শতাংশ শিক্ষিতজনেরা ধর্মীয় রাজনীতির সমর্থক, চিন্তা করা যায়। ধর্ম দিয়ে প্রার্থনা হয়, ভক্তি হয়, পরকাল হয়, আত্মিক মুক্তি আসে কিন্তু ধর্ম দিয়ে রাজনীতি হয় না, বিজ্ঞান হয় না, চিন্তা হয় না, উদ্ভাবন হয় না, আবিষ্কার হয় না। হলে পাকিস্তান, আফগানিস্তান হতো বিশ্বের সেরা উদ্ভাবক রাষ্ট্র আর জাপান, জার্মানি হতো বিশ্বের নিকৃষ্ট জঙ্গি রাষ্ট্র।
আপনার মতামত লিখুন :