শিরোনাম
◈ ঢাকা শিশু হাসপাতালের আগুন নিয়ন্ত্রণে ◈ ইরানে ইসরায়েলের হামলার খবরে বিশ্বজুড়ে উত্তেজনা, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আতঙ্ক ◈ বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের বাউন্ডারি ভেঙে বাস ঢু‌কে প্রকৌশলী নিহত ◈ জাতীয় পতাকার নকশাকার শিব নারায়ণ দাস মারা গেছেন ◈ ইরানের ইস্পাহান ও তাব্রিজে ইসরায়েলের ড্রোন হামলা, ৩টি ভূপাতিত (ভিডিও) ◈ ভেটোর তীব্র নিন্দা,মার্কিন নীতি আন্তর্জাতিক আইনের নির্লজ্জ লংঘন : ফিলিস্তিন ◈ স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের গল্প-প্রবন্ধ নিয়ে সাময়িকী প্রকাশনা করবে বাংলা একাডেমি ◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ চিকিৎসকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সংসদে আইন পাশ করব: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত : ২৫ অক্টোবর, ২০২০, ০১:৩০ রাত
আপডেট : ২৫ অক্টোবর, ২০২০, ০১:৩০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

স্বর্ণের বাজারের নিয়ন্ত্রণ জুয়াড়িদের হাতে: দিলীপ আগরওয়ালা (ভিডিও)

টিভিএনএ রিপোর্ট: স্বর্ণের দাম উঠা-নামা করছে চলতি বছরের শুরু থেকেই। বিশেষ করে করোনাকালে বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়তে থাকে।যদিও ওই সময় কয়েকবার দাম কমেছে, তবে বাড়ার হার ছিল কয়েকগুণ বেশি। বিশ্ববাজারের এই লাগামহীন দাম উঠা-নামার প্রভাব পড়ে দেশের বাজারেও। কেন স্বর্ণের দাম উঠা-নামা করছে এবং কারা এই বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে, আর দেশেই বা স্বর্ণের ব্যবসা কেমন। এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয় বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতির সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার আগরওয়ালার সাথে। আমাদের সময় ডটকমের সাথে তিনি এসব বিষয়ে দীর্ঘ সাক্ষতকার দিয়েছেন।

প্রশ্নঃ স্বর্ণের বাজার জুয়াড়িরা নিয়ন্ত্রণ করছে এমন খবর প্রকাশ করেছে গণমাধ্যম, এ বিষয়ে আপনার মন্তব্য কী?
উত্তরঃ শেয়ারবাজার জুয়াড়িরা নিয়ন্ত্রণ করে যদি এই কথা বিশ্বাস করতে হয় তাহলে স্বর্ণের বাজারও জুয়াড়িরা নিয়ন্ত্রণ করছে তা বিশ্বাস করতে হবে। কারণ এই বাজার নিয়ন্ত্রণ করে আমেরিকা ও ব্রিটেন। তবে কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে তা গভীরভাবে বিশ্লেষণ করে দেখা হয়নি।

প্রশ্নঃ প্রায় এক বছর ধরে স্বর্ণের বাজার অস্বাভাবিক উঠা-নামা করছে। এর কারণ কী?
উত্তরঃ স্বর্ণের বাজারে এমন দ্রুত দাম উঠা-নামা আমার বিশ বছরের ব্যবসায়ীক জীবনে দেখিনি। এভাবে দাম উঠা নামা করায় ব্যবসায়ীরা শঙ্কিত। তিনটি কারণে এই দাম উঠা নাম করছে বলে মনে করি।

এক. নিরাপদ বিনিয়োগ। করোনার এই মহামারির সময় শেয়ারবাজার, আবাসন খাত সহ সব ধরনের সেক্টরের বিনিয়োগে ধস পড়ে। শুধুমাত্র স্বর্ণের বাজারই ঊর্ধ্বমুখী থাকে। এই মহামারির মাঝে স্বর্ণের দাম আউন্স প্রতি সাড়ে ৩শ থেকে ৪শ ডলার বৃদ্ধি পেয়েছে।
দ্বিতীয় কারণটি হচ্ছে, ২০১৯ থেকে চীন আমেরিকার বাণিজ্য যুদ্ধ, তিন. মার্কিন নির্বাচন। ট্রাম্প প্রশাসন চাইছে ডলারকে শক্তিশালী করতে।

প্রশ্নঃ অনেকেই মনে করেন দুবাই বা সৌদি আরবে স্বর্ণের দাম কম। এই ধারনা কেন এবং কতটুকু সঠিক?
উত্তরঃ না একদমই সঠিক নয়। সারা বিশ্বেই স্বর্ণের দাম একই। তবে আমাদের দেশে বৈধ পথে স্বর্ণ আমদানি শুরু হলে যে সামান্য পার্থক্য আছে সেটিও থাকবে না। দেশের বাইরে ডলারে বিনিময় করতে হয়, সেজন্য অনেকেই বুঝেন না যে, তার কত খরচ হচ্ছে। কিন্তু যখন সেই ডলার দেশের টাকার অঙ্কে গুণ দেবে তখন তা ঠিকই বুঝা যায়।

প্রশ্নঃ দেশের স্বর্ণের চাহিদা কত, আর সেটি কিভাবে পূরণ হয়?
উত্তরঃ ভালো প্রশ্ন করেছেন, ১৯৪৭ সালের আইন অনুযায়ী স্বর্ণ ব্যবসা চলছিল। দেশ ভাগ এবং স্বাধীন বাংলাদেশেও এতদিন স্বর্ণ ব্যবসায় কোনও নীতিমালা ছিল না। তবে ২০১৮ সালে বর্তমান সরকার একটি নীতিমালা করেছে। এ জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা আজীবন কৃতজ্ঞ থাকবে। এখন আর স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের কালোবাজারি বা চোরাকারবারী বলার আর সুযোগ নেই।

তিনি বলেন, ২০১৮ সালের জুন মাসের ২১ ২২ ২৩ তারিখে স্বর্ণ কর মেলায় প্রায় ১৪ হাজার স্বর্ণ ব্যবসায়ী প্রত্যেকের কাছে থাকা স্বর্ণের ওপর কর দিয়ে তা বৈধ করে নেয়। সরকারকে প্রায় ২৫০ কোটি টাকা কর দেয় স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা। এরপর একই বছরের ডিসেম্বরে স্বর্ণ আমদানির জন্য আবেদন করা হলে, বাংলাদেশ ব্যাংক ১৮টি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান ও একটি ব্যাংককে লাইসেন্স দেয়। কিন্তু তখন দেখা গেল একজন ব্যাগেজে করে স্বর্ণ এনে ভরি প্রতি টেক্স দেয় ২ হাজার টাকা, আর বৈধভাবে আমদানি করে ভরি প্রতি দিতে হয় ১৭ হাজার টাকা। এরপর প্রধানমন্ত্রীর সাথে আবার দেখা করে আমরা বললাম, আপনি নীতিমালা করে দিলেন কিন্তু আমরা বৈধ পথে স্বর্ণ আমদানি করতে পারছি না। এ্ররপর তিনি অর্থমন্ত্রীকে ব্যাগেজ ও আমদানি ট্যাক্স যেন সমান হয় তা করতে বলে দিলেন, এবং অর্থমন্ত্রী বাজেট বক্তৃতায় তা ঘোষণা করেন।এরপর ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড দেশের ইতিহাসে প্রথম স্বর্ণ আমদানির ঘোষণা দেয়। পরে আরেকটি প্রতিষ্ঠানও স্বর্ণ আমদানি করে। আমরাই দেশের ইতিহাস প্রথম স্বর্ণ আমদানি করি। দুই প্রতিষ্ঠান প্রায় ২৫ কেজি স্বর্ণ আমদানি করে। যদিও দেশে প্রতি বছর স্বর্ণের চাহিদা ১৫ থেকে ২০ টন।তবে একবার আমদানি করেই আমাদের থামতে হয়। কারণ আমদানি স্বর্ণের মান যাচাই প্রক্রিয়া নিয়ে বাংলাদেশের ব্যাংকের জটিলতা তৈরি হয়। সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা হয়েছে, আমরা আশা করছি অক্টোবর মাস থেকেই আবার স্বর্ণ আমদানি শুরু হবে।

প্রশ্নঃ দেশের তৈরি স্বর্ণালঙ্কারের মান কেমন এবং তা বিদেশে রপ্তানির সুযোগ কতটুকু?
উত্তরঃ শুধু আমদানি নয় স্বর্ণালঙ্কার রপ্তানিও শুরু হবে। সেভাবেই প্রস্তুতি নিচ্ছে ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড। সেজন্য বন্ড সুবিধাসহ অন্যান্য সুবিধার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে। আশা করছি আগামী বছর থেকেই স্বর্ণালঙ্কার রপ্তানি শুরু হবে। বাংলাদেশের স্বর্ণালঙ্কার বিশ্ব মানের। হাতে তৈরি স্বর্ণালঙ্কারে পারদর্শী একমাত্র বাঙালিরাই। বিশ্বব্যাপী তাদের সুনাম রয়েছে। যদি সরকার পৃষ্ঠপোষকতা করে তাহলে স্বর্ণালঙ্কার রপ্তানির মাধ্যমে দেশ যেমন বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারবে।

প্রশ্নঃ আপনি একজন সফল স্বর্ণ ব্যবসায়ী, স্বর্ণ ব্যবসায় সফল হতে হলে কি কি বিষয়ে নজর দেয়া জরুরি?
উত্তরঃ শুধু স্বর্ণ নয় যে কোনো ব্যবসায় সফল হতে হলে তিনটি বিষয় জরুরি। এক. সততা। দুই. কমিটমেন্ট. তিন. টাইমিং এর মূল্য। আরেকটি বিষয় থাকতে হবে, তা হচ্ছে পরিবারের সাপোর্ট। এই সব বিষয় আমি পেয়েছি বলেই মাত্র ১৫ বছরের প্রতিষ্ঠান ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড সবার আস্থা কুড়িয়েছে। এই সময়ের মাঝেই আমরা ২৪টি আউটলেট করতে পেরেছি। এক কথায় আমরা কাস্টমারকে সব ধরনের সার্ভিস দিয়ে যাচ্ছি।

সময় দেয়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়