রাশিদ রিয়াজ : ইরাকের আল রাশিদ ব্যাংক এ ঋণের সুযোগ দিলেও নারীকর্মীরা এর বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছেন নারীরা কোনো পণ্য নয় যে তাদের জন্যে বিশেষ কোনো ঋণের ব্যবস্থা করতে হবে। ঋণের পরিমান ইরাকি মুদ্রায় এক কোটি দিনার। যে কোনো ইরাকি পুরুষ দ্বিতীয় বিয়ে করতে চাইলেই তিনি এ ঋণ পাবেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত এই দেশটিতে বিশাল সংখ্যক পুরুষ মারা গেছে এবং নারীর সংখ্যা অপেক্ষাকৃত বেশি এবং অনেক নারী বিধবা হয়েছেন। ইরানের পুনর্গঠনের জন্যেও জনসংখ্যার হার বৃদ্ধি প্রয়োজন মনে করছেন দেশটির অর্থনীতিবিদরা। মিডিল ইস্ট মনিটর/মিডিল ইস্ট আই ডট নে
আল রাশিদ ব্যাংকের নারী মুখপাত্র আমাল আল-সুওয়ালি জানান অনেকে দ্বিতীয় বিয়ে করার জন্যে আগ্রহ প্রকাশ করে ঋণের আবেদন জানিয়েছেন। তাদের এ ইচ্ছা পূরণে আমরা এধরনের সুযোগ দিচ্ছি। আল রাশিদ ব্যাংক ইরাকের সর্ববৃহৎ সরকারি ব্যাংক। দেশটিতে এর ১৩৮টি শাখা থেকে এধরনের ঋণ পাওয়ার পর তা ৫ বছরে পরিশোধ করতে হবে। তবে ঋণগ্রহীতা বা তার আগের স্ত্রী এধরনের ঋণ আগে নিয়ে থাকলে দ্বিতীয়বার তা পাবেন না। আবেদনকারীকে স্থায়ী সরকারি চাকুরে হতে হবে এবং তার চাকরির মেয়াদ হতে হবে কমপক্ষে ২ বছর। তার ঋণের আবেদনে যে সুপারিশ করবেন তাকেও হতে হবে সরকারি চাকুরে।
এ ঋণের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নারী নেত্রীরা তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। কেউ কেউ বলছেন যখন ইরাক অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, বেকারত্ব বেড়েছে তখন দ্বিতীয় বিয়ে করার জন্যে এধরনের ঋণের কোনো মানে হয় না কারণ সরকারি চাকুরেদের বেতন দিতেও অনেক সময় বিলম্ব ঘটছে।
তবে ব্যাংক বলছে নারী-পুরুষ উভয়কে এধরনের ঋণ দেয়া হবে। নারীবাদি লেখক দিনা আল-সাদি বলছেন এ ঋণ নারীর জন্যে অবমাননাকর। ঋণ দিয়ে বিয়ের ব্যবস্থা নারীর মর্যাদা বিনষ্ট করবে। এধরনের প্রতিক্রিয়ায় ব্যাংকটির পক্ষ থেকে দ্বিতীয় বিবৃতিতে বলা হয়েছে ঋণ অনেকটা শর্তের ওপর নির্ভর করছে। অনেকে ডিভোর্স না পেলে মৃত্যুর হুমকি দেন। কিন্তু টাকার অভাবে বিয়ে করতে পারছেন না। এ ঋণ তার প্রয়োজন মেটাবে। অর্থনীতিবেদ আলী আল-মারসোমি বলেন এ ঋণ অর্থনৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য। এতে মুদ্রাস্ফীতি মোকাবেলা করা যাবে এবং আমদানি বাড়বে। তবে ভারসাম্য ও সমান সুযোগ এবং মর্যাদা দিতে না পারণে ইসলাম ধর্ম অনুসারে দ্বিতীয় বিয়ে করা পাপ বলে ফতোয়া দিয়েছেন মিসরের আল-আযহার বিশ্ববিদ্যালয়ের মুফতি শেখ আহমেদ আল-তাইয়েব।
আপনার মতামত লিখুন :