শওগাত আলী সাগর: আমেরিকা কিংবা আমেরিকানদের কোনো পদক্ষেপকে এখন আর কারো অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হিসেবে উপস্থাপনের সুযোগ নেই। মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে ঘিরে যা ঘটছে বা ঘটবে বলে পূর্বাভাস পাওয়া যাচ্ছে তা বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে যারা সমালোচনা করেন,তাদেরও লজ্জায় ফেলে দেবে।
ঢাকায় একাত্তর টিভি বয়কটের ডাককে জায়েজ করতে অনেকেই যুক্তরাষ্ট্রে এনবিসি বয়কটের ডাকের প্রসঙ্গকে টেনে এনেছেন। বাংলাদেশে অবশ্য এটিই এখন ট্রেন্ড। নিজ গোষ্ঠীর অপরাধকে অনেকেই অপরাধ হিসেবে দেখেন না, একই কাজ বিরুদ্ধপক্ষ করলে সেটিই কেবল তাদের কাছে অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয়।নিজ পক্ষের লোকজন করলে তার সাফাই গাইতে মরিয়া হয়ে ওঠেন।
এনবিসি বয়কটের ডাকও কিন্তু গণমাধ্যমের স্বাধীন সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ার জন্য প্রচন্ড হুমকি। একই সময়ে একই স্থানে জনসভা ডাকলে সেটি আইন শৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর আশংকা তৈরি করে। কিন্তু একই সময়ে দুটি টেলিভিশন দুই প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থীর জনসভা সরাসরি সম্প্রচার করতে চাইলে তাকে বয়কটের ডাক কেন দিতে হবে?
কোন টেলিভিশন কখন সিদ্ধান্ত নিয়ে কার অনুষ্ঠান সম্প্রচার করবে সেটি তো এই প্রতিষ্ঠানের সম্পাদকীয় সিদ্ধান্তের ব্যাপার। দর্শকরাও স্বাধীন,যার যেটা পছন্দ তারা সেটাই দেখবে। টেলিভিশনের সম্পাদকীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক দল এবং রাজনীতির সমর্থক সাংবাদিকরা মাঠে নামলে সেটি স্বাধীন সম্পাদকীয় প্রতিষ্ঠানকেই অবমাননা করা হয়।
সংঘবদ্ধ হয়ে কোনো মিডিয়াকে বয়কটের ডাক দেয়াকে আমি স্বৈরতান্ত্রিক মনে করি। সেটা একাত্তর টিভি বয়কটের ডাক হোক আর প্রথম আলো বর্জনের ডাক হোক।
সংবাদ মাধ্যমকে আতংকগ্রস্থ করার তৎপরতাকে নানা অজুহাতে সমর্থন করা বা উৎসাহ দেয়া আর যাই হোক গনতান্ত্রিক মানসিকতার কাজ না। বরং সকল সংবাদমাধ্যমকে ভয়হীন ভাবে কাজ করতে দেয়ার পরিবেশ সৃষ্টির পক্ষে সোচ্চার হোন। ফেসবুক থেকে