শিমুল মাহমুদ: [২] সারাদেশে ধর্ষণ, নির্যাতন ও নিপীড়নের প্রতিবাদে রাজধানীতে পথযাত্রা ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার রাত ১১টা ৫৯ মিনিটে ‘শেকল ভাঙার পদযাত্রা’ শীর্ষক ব্যানারে শাহবাগ থেকে শুরু হয় মশাল মিছিল। কাটাবন, সাইন্সল্যাব, রাপা প্লাজা হয়ে মিছিলটি মানিক মিয়া এভিনিউতে পৌঁছায় রাত দেড়টার দিকে। এরপর সেখানে বিক্ষোভ সমাবেশ করে তারা।
[৩] ‘দিনে হোক রাতে হোক, সামলিয়ে রাখো চোখ’, ‘আমি নির্দোষ আমি নারী, আসল দোষী ধর্ষণকারী’, ‘আমার বোন কবরে ধর্ষক কেন বাইরে’ স্লোগানে উত্তাল হয় রাজপথ। আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে মানিক মিয়া এভিনিউয়ে উপস্থিত হয়েছিলেন বিশিষ্টজন, অভিভাবকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
[৪] আয়োজকদের একজন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাপসী জানান, বাধ্য হয়ে নারীদের ঘরে থাকা, পুরুষতান্ত্রিকতার বেড়াজালে আর আটকে থাকা নয়। ধর্ম-বর্ণ-রাজনৈতিক মতাদর্শ নির্বিশেষে শুধু লৈঙ্গিক পরিচয় ‘নারী’ হওয়ার কারণে যে জুলুম-অত্যাচার-বৈষম্য সহ্য করতে হয় প্রতিনিয়ত, তার বিরুদ্ধে আমাদের এই পদযাত্রা।
[৫] সমাবেশে ১২ দফা দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। এরমধ্যে- আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আইন ও সামাজিকভাবে ধর্ষণের সংজ্ঞায়ন সংস্কার; নারীদের ওপর সকল প্রকার যৌন এবং সামাজিক নিপীড়ন বন্ধ; প্রাথমিক লেভেল থেকেই পাঠ্যপুস্তকে যৌন শিক্ষা (গুড টাচ ব্যাড টাচের শিক্ষা, সম্মতি বা কন্সেন্ট এর গুরুত্ব, প্রাইভেট পার্টস সম্পর্কে অবহিত করা); ধর্ষণ মামলার ক্ষেত্রে সাক্ষ্য আইন, ১৮৭২ এর ১৫৫(৪) ধারা বিলোপ এবং মামলার ডিএনএ আইনকে সাক্ষ্য প্রমাণের ক্ষেত্রে কার্যকর করা।
[৬] এছাড়া, মাদ্রাসার শিশু শিক্ষার্থীসহ সকল শিশুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং কোনো শিশু যৌন নির্যাতনের শিকার হলে ৯০ দিনের মধ্যে দ্রুত ট্রাইব্যুনালে অভিযোগের সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করা; জাতীয় শিক্ষাক্রম অনুমোদিত পাঠ্যপুস্তকে নারী অবমাননাকর বার্তা প্রকাশ ও প্রচার করা নিষিদ্ধ; ধর্মীয় বক্তব্যের নামে অনলাইনে ও অফলাইনে নারী অবমাননাকর বক্তব্য প্রচার বন্ধ; যৌন সহিংসতা প্রতিরোধে প্রান্তিক অঞ্চলের নারীদের সুবিধার্থে হটলাইনের ব্যবস্থা চালু করাসহ বিভিন্ন দাবি। সম্পাদনা : রায়হান রাজীব