রিয়াদ ইসলাম: [২] পাবনার ঈশ্বরদীতে এক মাদ্রাসার ছাত্রকে শিকল দিয়ে বেঁধে রেখে নির্যাতনের অভিযোগে ৩ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
[৩] আটককৃতরা হলো, মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আব্দুল মমিন, পিয়ারুল ইসলাম ও শিক্ষার্থী সাব্বির আহম্মেদ। গতকাল সাহাপুরের কদিমপাড়ায় এক মাদ্রাসায় এ ঘটনা ঘটে।
[৪] উদ্ধার হওয়া শিশুটির নাম মোবারক (১১)। সে উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়নের কদিমপাড়া বুড়া দেওয়ান নূরানী হাফিজিয়া মাদ্রাসায় নূরানী বিভাগে পড়ে। বাড়ি আটঘরিয়া উপজেলার চাঁদভা ইউনিয়নের বাঁচামরা গ্রাম। বাবার নাম নজরুল ইসলাম।
[৫] ঈশ্বরদী থানার পুলিশ জানায়, বুড়া দেওয়ান নূরানী হাফিজিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আব্দুল করিম শিশুশিক্ষার্থী মোবারকে গেল বুধবার থেকে শিকল দিয়ে বেঁধে রেখেছিলেন। মাদ্রাসার নির্দিষ্ট একটি কক্ষ থেকে বের হতে দিতেন না। তিনদিন এভাবে থাকার পর শুক্রবার (৯ অক্টোবর) দুপুরে দেড়টার দিকে পালিয়ে এসে কদিমপাড়া এলাকার একটি দোকানের বারান্দায় এসে আশ্রয় নেয়। স্থানীয় লোকজন সেখানে তাকে কাঁদতে দেখে পরে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ এসে শিশুটিকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
[৬] ভুক্তভোগীর পরিবার জানান, কিছুদিন আগে মারধরের কারনে মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে খালার বাড়িতে যান শিক্ষার্থী মোবারক। গেল বুধবার তাকে বুঝিয়ে আবারও পাঠানো হয় মাদ্রাসায়। এরই জের ধরে মোবারককে লোহার শেকল দিয়ে বেঁধে নির্মমভাবে নির্যাতন চালাতো কর্তৃপক্ষ। মোবারকের কোমড়ের চোখের নিচে এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন।
[৭] এদিকে অধ্যক্ষ আব্দুল করিম জানান, তিনি ছুটিতে গিয়েছিলেন। শিক্ষার্থীদের দেখভালের দায়িত্ব ছিলো শিক্ষক পিয়ারুল ইসলামের উপর।
[৮] শিক্ষক পিয়ারুল জানান, শিশুটি অবাধ্য ছিল। সে পড়ালেখা ফাঁকি দিতে প্রায়ই মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে বাড়ি চলে যেত। তাই তার দাদির নির্দেশে তাকে আটকে রাখা হয়েছিল।
[৯] ঈশ্বরদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ ফিরোজ কবির জানান, আটক তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ দেয়া হলে ওই তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
[১০] গতকাল শিকল বাঁধা অবস্থায় মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে গেলে স্থানীয়রা উদ্ধার করে পুলিশে সোপর্দ করে। মোবারকের কোমর থেকে পা পর্যন্ত একাধিক আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তবে, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোন মামলা হয়নি। সম্পাদনা: হ্যাপি