মো. সাগর মল্লিক: [২] পানের বাম্পার ফলন হলেও ত্রিমুখী সঙ্কটে দিশেহারা বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার পান চাষীরা। এ সঙ্কট উত্তরণের কোন পথ দেখাতে পারছেন না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
[৩] এক বিড়া পান গত বছর এই সময়ে বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকা থেকে ১০০ টাকা দরে। সেই পান এখন বিক্রি হচ্ছে বিড়া প্রতি ২০ টাকা থেকে ২৫ টাকায়। আর ছোট যে পান ৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে সেই পান এখন বিক্রি হচ্ছে বিড়া প্রতি ৫ থেকে ৭ টাকা দরে। পান বিক্রি করে লেবারের খরচ উঠছে না'', বলে জানান টাউন নাওয়া পাড়া গ্রামের পান চাষী শেখ শওকত আলী।
[৪] অতিবৃষ্টি ও সামুদ্রিক নিম্নচাপে পাবন, সাইক্লোন আম্পানের মত প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি সামলে নতুন করে পান চাষ করেছেন ফকিরহাটের তিন হাজারের অধিক পান চাষী। এ ক্ষেত্রে তারা ব্যাংক, এনজিও বা মহাজনের কাছ থেকে ঋণে টাকা নিয়ে পান চাষ করেছিলো। কিন্তু এখন উৎপাদিত পণ্যের মূল্য না পেয়ে হতাশ এ পেশার মানুষ।
[৫] উপজেলার আট্টাকা গ্রামের পান চাষী রাহাত আলী জানান, ভোর থেকে বেলা ১১ টা পর্যন্ত পান ভাঙতে খাওয়া-দাওয়াসহ একজন শ্রমিককে খরচ দিতে হয় ৫০০ টাকা। এখন অবস্থা এমন, পান ভেঙে বিক্রি করে তাতে শ্রমিকের পয়সা হয় না। ঋণের সুদ, শ্রমিক মজুরি, খৈল-সারসহ আনুষাঙ্গিক খরচ হিসাবে করে তাদের যে খরচ তার সিকিভাগও ফেরত আসবে না বলে তিনি জানান।
[৬] বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার পাইকাররা এসে পান ক্রয় করেন। কিন্তু করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরবর্তী পরিস্থিতিতে পানের বাজারে ধস নামে যার প্রভাব এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি। ফলে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা আগ্রহ হারাচ্ছে পান চাষে। চাষীদের সাথে পান চাষে প্রত্যক্ষপরোক্ষভাবে জড়িত প্রায় ২০ হাজার শ্রমিকের ভাগ্য অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।
[৭] ফকিরহাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. নাছরুল মিল্লাত বললেন, উপজেলায় প্রায় পাঁচশ' হেক্টর জমিতে পান চাষ হয়। এ বছর ফলন ভালো হওয়ায় লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে বেশি পান উৎপাদন হয়েছে। অন্যদিকে বৈশ্বিক মহামারী কোভিড-১৯ এর কারণে মধ্যপ্রচ্যসহ বিভিন্ন দেশে পান রপ্তানি বন্ধ আছে। ফলে যোগান বেশি, চাহিদা কম হওয়ায় পানের দামে ধস নেমেছে। তবে সামনের দিনগুলোতে পানের দাম বাড়তে পারে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। সম্পাদনা: সাদেক আলী