নূর মোহাম্মদ : [২] নিরপরাধ পাটকল শ্রমিক জাহালমকে ঋণ জালিয়াতির ৩৩ মামলায় জড়িয়ে ৩ বছর কারাগারে রাখার ঘটনায় ১৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ বিষয়ে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে বুধবার বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের বেঞ্চ এ রায় দেন।
[৩] ব্র্যাক ব্যাংককে বলা হয়েছে, রায়ের কপি পাওয়ার এক মাসের মধ্যে জাহালমকে ওই টাকা দিতে। আর টাকা দেওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের দপ্তরে তা লিখিতভাবে জানাতে হবে। রায়ের পর জাহালম সাংবাদিকদের বলেন, আদালতের রায়ে আমি খুশী। এই টাকা তাড়াতাড়ি চাই। দ্রুত টাকা পেলে দায়দেনা পরিশোধ করবো।
[৪] জাহালমকে ‘আবু সালেক’ হিসেবে শনাক্ত করেছিলেন ব্র্যাক ব্যাংকের দুই কর্মকর্তা। সে কারণে ব্র্যাক ব্যাংককে এই জরিমানা দিতে বলা হয়েছে। আর সোনালী ব্যাংকের কোনো ভুল না পাওয়ায় তাদের জরিমানা করা হয়নি। এছাড়া যেসব মামলায় জাহালমকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছিল, সেগুলোর পুনঃতদন্ত করে দ্রুত সময়ে বিচার শেষ করতে বলেছেন আদালত।
[৫] আদালত পর্যবেক্ষণে বলেছেন, দুর্নীতি দমন কমিশন একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান। দুর্নীতি রোধ করাই যাদের প্রধান কাজ। জনগণের প্রত্যাশা, দুদক সবকিছুর উর্ধ্বে থেকে স্বচ্ছভাবে দায়িত্ব পালন করবে। আইনের আলোকে জাহালমের ঘটনায় দুদককে দায়ী করা না গেলেও দুদকের নবীন কর্মকর্তাদের চরম অবহেলা ও অদক্ষতা প্রতিয়মান হয়েছে। কিন্তু তাদের তদারকি কর্মকর্তারা যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করেনি। জাহালমের মতো আর কোনো নিরীহ লোক যেন ভবিষ্যতে দুদকের মামলায় জেল না খাটে।
[৬] আদালত বলেন, গণমাধ্যমকর্মীরা জাতির জাগ্রত বিবেক এবং সমাজের অতন্দ্র প্রহরী। অনেক সময় তদন্ত কর্মকর্তারা যেটা পারেননি সেসব ক্ষেত্রে সাংবাদিকরা সফলতা দেখিয়েছেন, যা ইতিমধ্যে প্রমাণিত। গত বছরের জানুয়ারিতে একটি জাতীয় দৈনিকে ভুল আসামি হিসেবে জাহালমের বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অমিত দাশ গুপ্ত। পরে হাইকোর্টের নির্দেশে মুক্তি পান জাহালম।