ময়মনসিংহ প্রতিনিধি: পাঁচ মাস আগে ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার একটি বেসরকারি হাসপাতালে সিজারের মাধ্যমে ছেলে সন্তান জন্ম দেন ফজিলা খাতুন। চারদিন পর হাসপাতালের ছুটি মেলায় তাকে নেয়া হয় বাড়িতে। এর কয়েক দিন পর থেকেই পেট ব্যথা ও ফুলে যায়। অবস্থা বেগতিক দেখে একই উপজেলায় ডা. মো. মোশারফের কাছে নিয়ে যান তার স্বামী।ডেইলি বাংলাদেশ
আলট্রাসনোগ্রাম করার পর ডা. মোশারফ জানান, ফজিলার পেটে কোনো ইনফেকশন হয়েছে। পরামর্শ দেন উন্নত চিকিৎসার। কিন্তু ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে নিলেও কিছুই ধরা পড়েনি। পরে এভাবেই কেটে যায় পাঁচটি মাস।
অবশেষে শুক্রবার ময়মনসিংহের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ধরা পড়ে ফজিলা খাতুনের পেটে রয়েছে গজ-ব্যান্ডেজ। পাঁচ মাস আগে সিজারের সময় এসব রেখেই সেলাই করে দিয়েছিলেন চিকিৎসক। বর্তমানে ফজিলার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
সোমবার বিকেলে এমনটিই জানিয়েছেন গৃহবধূ ফজিলা খাতুনের স্বামী শাহজাহান মোল্লা। তিনি বলেন, গজটি ভেতরে পচন ধরায় চিকিৎসকরা তার সুস্থতার বিষয়ে কিছুই বলতে পারছেন না। তার অবস্থা খুবই গুরুতর।
শাহজাহান আরো বলেন, ভালুকার বেসরকারি ডিজিটাল হাসপাতালের মালিকের কথামতো চলতি বছরের ১৩ এপ্রিল আমার স্ত্রীকে সেখানে ভর্তি করা হয়। ওই দিনই ডা. মফিজের মাধ্যমে ও ডা. মেহেদীর অ্যানেসথেসিয়ায় সিজার করা হয়। কিন্তু এতদিনে জানতে পারলাম তারা গজ-ব্যান্ডেজ রেখেই সেলাই করে দিয়েছেন। এমন ঘটনায় সংশ্লিষ্ট সবার বিচার দাবি করছি।
ময়মনসিংহের আইডিয়াল নাসিং হোমের পরিচালক ও অপারেশন টিমের ডা. এমএ রবিন বলেন, পেট ফুলা ও ব্যথা নিয়ে ফজিলাকে আমাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আমরা জানতে পারি পাঁচ মাস আগে ভালুকায় তার সিজার করা হয়। রোগীর স্বজনদের সঙ্গে আলোচনা করে অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেই। অস্ত্রোপচারে পেটের ভেতর থেকে গজ-ব্যান্ডেজ বের করা হয়। এসব গজ-ব্যান্ডেজ অ্যাতের ভেতরে ঢুকে পড়েছে। ফজিলার অ্যাত জোড়া লাগাতে আরো তিন মাস সময় লাগবে। এরপর আরো একটি অস্ত্রোপচার লাগবে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ভালুকা ডিজিটাল হাসপাতালে পরিচালক মো. শরীফ বলেন, আমাদের এখানে কেউ কোনো অভিযোগ করেননি। বিষয়টি জানিও না। খোঁজ নিয়ে দেখছি।
ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূর বাড়ি ত্রিশাল উপজেলার আমিরাবাড়ি গ্রামে। তিনি এর আগে দুইটি সন্তান স্বাভাবিকভাবে জন্ম দেন।