ডেস্ক রিপোর্ট: সাভারে প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় স্কুলছাত্রী নীলা রায়কে মাদক আস্তানায় নিয়ে নির্যাতন ও হত্যা করা হয়। এ ঘটনার মূলনায়ক মিজানুর রহমান চৌধুরী ওরফে মিজান এবং তার সহযোগীরা এলাকায় একের পর এক ভয়ংকর অপরাধ করলেও এলাকাবাসী প্রাণভয়ে ছিল নিশ্চুপ। এলাকাবাসীর কাছে তারা মূর্তিমান আতঙ্ক।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, মিজান ও তাদের সহযোগীরা পৌর এলাকার পালপাড়া, দক্ষিণপাড়া, ব্যাংক কলোনি, গার্লস স্কুল রোড, জেলেপাড়া ও কাজী মোকমাপাড়া মহল্লা নিয়ন্ত্রণ করত। আবার তাদের সঙ্গে স্থানীয় প্রভাবশালীদেরও ছিলো দহরম মহরম সম্পর্ক। এ কারণে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেও কোনো ফল পাওয়া যেত না। ডেইলি বাংলাদেশ
এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দলনেতা শাকিল ও সাকিব সহোদর গ্যাংয়ের সদস্য ছিলো মিজান। এই গ্যাংয়ে ৩০ থেকে ৪০ জন উঠতি বয়সের কিশোর রয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছে সাগর, সুজব, পারভেজ, হানিফ, জয়, রাব্বিসহ আরো অনেকে। এই শাকিল ও সাকিব বাহিনী পুরো ব্যাংক কলোনি মহল্লার মাদকের স্পটগুলো নিয়ন্ত্রণ করে।
আরো জানা গেছে, এই গ্যাংয়ের সদস্যরা এলাকার চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি ও নারী উক্ত্যক্তসহ এমন কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড ছিল না, যা তারা করত না।
এর আগে এলাকার এক সংগীত শিক্ষককে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা মামলার আসামি ছিল শাকিল। সে একাধিকবার গ্রেফতার হয়ে জেলও খেটেছে। কিন্তু জামিনে বেরিয়ে এসেই আবার সব অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত হয়।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, এ বাহিনী এতটাই প্রতাপশালী যে প্রকাশ্যে কাউকে লাঞ্ছিত কিংবা অপমান করলেও কেউ এগিয়ে এসে প্রতিবাদ করার সাহস পেত না। এমনকি রাস্তা দিয়ে অভিভাবকদের সঙ্গে মেয়েরা হেঁটে যেতেও নিরাপদ বোধ করত না। অভিভাবকদের সামনেই তাদের উত্ত্যক্ত করা হতো।
এদিকে স্কুলছাত্রী নীলা রায় হত্যা মামলার প্রধান আসামি মিজানের শনিবার সাতদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। আর আগে গত শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে সাভারের তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়নের রাজফুলবাড়িয়ার কর্নেল ব্রিকস ফিল্ডের পাশে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা।
এ সময় মিজানের দুই সহযোগী সাকিব ও জয়কে আটকসহ আলামত হিসেবে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি ছুরিও উদ্ধার করা হয় বলে জানায় পুলিশ। পরে ওই দুজনকেও গ্রেফতার দেখানো হয়।
গত ২০ সেপ্টেম্বর রাতে হাসপাতালে যাওয়ার সময় ভাইয়ের সামনে থেকে স্থানীয় অ্যাসেড স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী নীলা রায়কে তুলে নিয়ে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাতে হত্যা করে মিজান।