আকরামুল হক: বালাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করা সামরিক জান্তাদের হাতে যুদ্ধাপরাধী, রাজাকার শফী ওরফে তেঁতুল হুজুর পুনর্বাসিত হয়েছিলেন। রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকার চেষ্টায় বর্তমান ক্ষমতাসীনরা শফীর লেজ ধরে টানাটানি করেনি। সুশাসনজনিত ঘাটতি ও আস্থাহীনতার কারণে বর্তমান শাসকরা শফীর ঔদ্ধত্য হজম করেছে। জামায়াত ও বিএনপির বুদ্ধিবৃত্তিক সিপাহসালার ফরহাদ মজহার আর মাহমুদুর রহমানের ফয়সালায়, শফীর নেতৃত্বে হেফাজত যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষায় ও বর্তমান ক্ষমতাসীনদের ক্ষমতা থেকে বিদায়ের নিমিত্তে শাপলা চত্বরে জড়ো হয়েছিলো। দিন শেষে হেফাজতকে গণভবনে কৈ মাছ সাবাড় করতে দেখা গেছে। ক্ষমতা এমনই এক জাদু।
মাদ্রাসার ছাত্রদের ক্ষেপিয়ে রাজনৈতিক দর-কষাকষিতে ব্যবহার করে সন্ধ্যাতেই টাকার ভাগ বাটোয়ারায় শামিল হয়েছিলো হেফাজত নেতারা। লুণ্ঠনের উদ্বৃত্ত অর্থের যোগান নিতে সর্বদাই ব্যস্ত থাকা হেফাজত নেতাদের দেশের তাবৎ ঘুষখোর, মুনাফাখোর, কালোবাজারী, ঋণ খেলাপিদের দ্বারস্থ হতে হয়। সহীহ্ ধর্মতত্ত্বের ব্যাখ্যা হাজির করে দিন শেষে শিক্ষার্থীদেরও নিজেদের খরচ যোগাতে হেফাজত নেতাদের সর্বদাই অবৈধ অর্থের মালিকদের সাথে দিন গুজরান করতে হয়।
এই অর্থের ভাগ-বাটোয়ারা ও ক্ষমতার দ্বন্দ্বে শফী হাটহাজারী থেকে ছিটকে পড়েছেন। ছিটকে পড়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তিনি ধরাধাম ত্যাগ করেছেন। ইতোমধ্যে শফীর ভক্ত ও আশেকানরা এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে মাঠ গরম করতে শুরু করেছে। দেশে আইনের শাসন ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ জারি থাকলে যুদ্ধাপরাধের দায়ে শফীকে ফাঁসিকাষ্ঠে ঝুলতে হতো। বাংলাদেশের ক্ষমতায় সামরিক আমলাতন্ত্রের হস্তক্ষেপ ও ধর্মীয় রাজনীতির মেলবন্ধনে জান্তারা দেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নির্বাসনে পাঠিয়েছিলো। বর্তমানে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সেই আপোসের দুর্গে আর হানা দিতে চায়নি বলে শফীকে ধর্মীয় গুরুর তকমা জোরদার করেছে। ধর্মীয় গুরুর তকমা নিয়ে বিদায় হওয়া শফী দেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরেছিলেন। ইতিহাস নির্মোহভাবে একদিন সবই মূল্যায়ন করবে। ফেসবুক থেকে