জেরিন আহমেদ: [২] মৎস্যবিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা ওয়ার্ল্ডফিশের চলতি মাসের হিসাবে এ তথ্য উঠে এসেছে। বর্তমানে বিশ্বের মোট ইলিশের ৮৬ শতাংশ বাংলাদেশে উৎপাদিত হচ্ছে। আর চার বছর আগে উৎপাদন ছিল ৬৫ শতাংশ। এই সময়ের মধ্যে সরকারের নানা কার্যকর পদক্ষেপের ফলে ধারাবাহিকভাবে ইলিশের উৎপাদন বেড়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
[৩] এদিকে ওয়ার্ল্ডফিশের তথ্য মতে, বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ ভারত, মিয়ানমার, শ্রীলংকা ও পাকিস্তানে ইলিশের উৎপাদন কমেছে। বাংলাদেশের পরই ইলিশের উৎপাদনে দ্বিতীয় স্থানে ভারত। পাঁচ বছর আগে দেশটিতে বিশ্বের প্রায় ২৫ শতাংশ ইলিশ উৎপাদিত হতো। তবে চলতি বছর তাদের উৎপাদন প্রায় সাড়ে ১০ শতাংশে নেমেছে।
[৪] এছাড়া তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে মিয়ানমার। দেশটিতে ৩ শতাংশের মতো উৎপাদন হয়েছে। আর ইরান, ইরাক, কুয়েত ও পাকিস্তানে বাকি ইলিশ উৎপাদন হয়েছে।
[৫] বাংলাদেশে ইলিশ উৎপাদনের সাফল্য প্রসঙ্গে ওয়ার্ল্ডফিশ বাংলাদেশের ইকোফিশ প্রকল্পের দলনেতা অধ্যাপক আবদুল ওহাব বলেন, বাংলাদেশে মা ও জাটকা ইলিশ ধরা বন্ধ করা, অভয়াশ্রম বাড়ানো ও জেলের সুরক্ষা দেয়ায় এ সাফল্য এসেছে। দেশটিতে ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধিতে সরকারি সংস্থাগুলোর তৈরি করা মডেল এখন বিশ্বের অনেক দেশ অনুসরণ করছে।
[৬] এ প্রসঙ্গে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেন, মা ও জাটকা ইলিশ ধরা বন্ধ করায় আমাদের এখানে এই সাফল্য এসেছে। ইলিশের বড় হওয়ার জন্য অভয়াশ্রমগুলো বাড়ানো এবং সুরক্ষা দেয়াও ভূমিকা রেখেছে। ইলিশ ধরার জালের আকৃতি নতুনভাবে নির্ধারণ করায় ভবিষ্যতে আরো বাড়বে ইলিশের উৎপাদন।
[৭] এদিকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মা ইলিশ রক্ষা অভিযানের অংশ হিসেবে প্রতিবছর ৭ অক্টোবর থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে এই মাছ ধরা বন্ধ থাকে। এ কর্মসূচিও ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রেখেছে।
[৮] বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ইয়াহিয়া মাহমুদের মতে, বাংলাদেশের ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে সরকারি যেসব উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, তার সবগুলোই বৈজ্ঞানিক গবেষণানির্ভর ছিল। তার সুফল এখন আমরা পাচ্ছি।
[৯] এদিকে ওয়ার্ল্ডফিশ, মৎস্য অধিদফতর ও মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, এবার শুধু পরিমাণের দিক থেকেই নয়, আকৃতির দিকে থেকেও কোনো দেশ বাংলাদেশের ইলিশের ধারেকাছে নেই।