এএইচ রাফি: [২] ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা পৌর এলাকার বিশারবাড়ী গ্রামে এক কিশোরীকে তার পিতা-মাতাকে কুফরি করে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে মসজিদের এক ইমাম একাধিকবার ধর্ষণের করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
[৩] এর ফলে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে ওই কিশোরী। এই ঘটনা জানাজানি হয়ে গেলে কিশোরীর পরিবারকে সালিসে ডেকে সমাজচ্যুত করে স্থানীয় কর্তাব্যক্তিরা। এদিকে ঘটনার পর স্থানীয় কয়েকজন সর্দারের সহায়তায় এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন অভিযুক্ত ইমাম ওবায়দুল্লাহ (৫০)। তার বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাছিরনগর উপজেলার বড়নগর গ্রামে।
[৪] এই ঘটনায় ভুক্তভোগীর বাবা বাদি হয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন। তবে এসব বিষয় নিয়ে কথা বলতে সাংবাদিকদের কাছে অপারগতা প্রকাশ করেন কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লোকমান হোসেন।
[৫] ভুক্তভোগীর বাবার করা মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, মেয়েকে স্থানীয় মাদরাসার অষ্টম শ্রেণিতে ভর্তি করান তিনি। মেয়েকে গ্রামের বিশারাবাড়ী মসজিদের ইমাম মাওলানা ওবায়দুল্লাহর কাছে শুদ্ধভাবে কোরআন শিখতেও পাঠান। প্রথম কয়েকদিন মসজিদে তার মেয়েকে কোরআন পড়ান ওবায়দুল্লাহ। কিছুদিন পর থেকে নিজের বাড়িতে পড়াতে পাঠাতে বলেন। গত বছরের ২৫ ডিসেম্বর কুফরি-কালাম ও আল্লাহর ভয় দেখিয়ে তার কিশোরীকে ধর্ষণ করেন ইমাম ওবায়দুল্লাহ।
[৬] কিশোরীর বাবা জানান, এ ব্যাপারে পরিবারে জানাজানি হওয়ার পর তারা মেয়েকে ঘটনার বিষয়ে প্রশ্ন করেন। তখন তার মেয়ে ধর্ষণের কথা জানায়। সে এও বলে, হুজুর কুফরি করে তার বাবা-মাকে মেরে ফেলবে, তাই ভয়ে এতদিন কাউকে কিছু জানায়নি। এসব ঘটনা গ্রামে জানাজানি হয়ে গেলে স্থানীয় কর্তাব্যক্তিরা সালিশের আয়োজন করেন। ততদিনে গ্রামের কয়েকজন সর্দারের সহায়তায় পালিয়ে যান ইমাম ওবায়দুল্লাহ।
[৭] আদালত পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) মামলা বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
[৮] এদিকে সালিসের বিষয়ে জানতে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সেক্রেটারি হেবজু সর্দারের সঙ্গে যোগযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘তারা গর্ভপাত কেন করল? কিশোরী যে ইমামের ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা এর সত্যতা কী? দোষ তাদের আছে।’
[৯] এ বিষয়ে কথা বলতে ইমাম মাওলানা ওবায়দুল্লাহর সঙ্গে যোগযোগ করা সম্ভব হয়নি।
[১০] এ বিষয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার পুলিশ সুপার শাখাওয়াত হোসেন বলেন, আদালত থেকে এই সংক্রান্ত একটি মামলার কাগজ আমরা পেয়েছি। বিষয়টি আমরা তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করবো। সম্পাদনা: জেরিন আহমেদ