শিরোনাম
◈ ফ্রা‌ন্সের লিও শহ‌রের কসাই থেকে গাজার কসাই: ইতিহাসে বারবার অপরাধীদের বাঁচিয়েছে আমেরিকা ◈ রিজার্ভে বড় সাফল্য: আইএমএফের লক্ষ্য ছাড়িয়ে গেছে বাংলাদেশ, প্রবাসী আয়ে রেকর্ড প্রবৃদ্ধি! ◈ আদানির বকেয়ার সব টাকা পরিশোধ করেছে বাংলাদেশ ◈ মাঠে ছড়িয়ে থাকা লেবু ও  ডিম দে‌খে ম্যাচ খেলতে আসা ‌ক্রিকেটাররা ভয়ে পালালেন ◈ ভারতীয় ক্রিকেট দলের বাংলাদেশ সফরে আপত্তি মোদি সরকারের! ◈ উনি ক্লাসে বাজে ঈঙ্গিতপূর্ণ কথা বলার পাশাপাশি বডি শেমিং করেন ◈ এবার নিউ ইয়র্ক মেয়রপ্রার্থী মামদানিকে গ্রেপ্তারের হুমকি ট্রাম্পের!, তীব্র প্রতিক্রিয়া ◈ বউ পেটানোয় শীর্ষে খুলনা ও বরিশালের মানুষ: বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (ভিডিও) ◈ ক‌ষ্টের জ‌য়ে ক্লাব বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনা‌লে রিয়াল মা‌দ্রিদ ◈ দুপু‌রে এ‌শিয়ান কাপ বাছাই‌য়ে স্বাগ‌তিক মিয়ানমা‌রের বিরু‌দ্ধে লড়‌বে বাংলাদেশ নারী দল

প্রকাশিত : ২৮ আগস্ট, ২০২০, ০২:০৩ রাত
আপডেট : ২৮ আগস্ট, ২০২০, ০২:০৩ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

দীপক চৌধুরী : বঙ্গবন্ধুকন্যা গণমানুষের, এ কথাটি ভুলে যাওয়া ঠিক হবে না

দীপক চৌধুরী : সাম্প্রতিক নানান ঘটনায় ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে যে কিছু ব্যক্তি দুর্নীতির মধ্যে তলিয়ে যাচ্ছে। তাদের কারণে নানান রকম সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে, সরকারের ‘ইমেজ’ ক্ষুণ্ন হচ্ছে। মানুষের মধ্যেও কিছু প্রশ্ন চাঙ্গা হয়ে উঠছে। কেউ কেউ প্রশ্ন তুলছেন, একে উদ্ধারের পথ কী? সব ধরনের অপকর্ম-অপরাধের সঙ্গে এখন একশ্রেণির নেতার নাম আসছে। প্রশাসনের অপরাধ সৃষ্টিকারী’ ব্যক্তির আশ্রয়দাতা নাকি তারা। কিছু ‘ক্লু’ পাওয়া গেছে- চিকিৎসা, পুলিশিং বা সরকারি পণ্য কেনাকাটার বিতর্কের জন্ম দিতে সরকারি দলে বহিরাগতরা নানান ষড়যন্ত্র করছে। জামায়াত-বিএনপির সুবিধাবাদীদের আওয়ামী লীগে ভিড়িয়ে সুযোগ দিচ্ছে  ‘হাইব্রিড’রা। তারাই ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে বা দলের নাম ভাঙ্গিয়ে নানান অপকর্ম করে যাচ্ছে। কেনাকাটায় দুর্নীতি বন্ধে সরকার পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অ্যাক্ট এবং ই-টেন্ডারিংয়ের ব্যবস্থা করেছে। এরপরও একটি চক্র নানানভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারকে বিপাকে ফেলতে অপকর্ম ঘটাচ্ছে। যতভাবেই জনগণকে আশ্বস্ত করা হোক না কেন- সন্দেহের তীর বাড়ছেই।

অনিয়ম সংঘটনে একশ্রেণির নেতা এতটাই বেপরোয়া হয়ে উঠছেন যে, সাধারণ মানবিক ভয়-ডরও উধাও হতে চলছে। তারা অনেকে সাক্ষ্যপ্রমাণ রেখেই এখন দুর্নীতি করছেন বলেও শোনা যায়। উপজেলা পর্যায়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের নির্দেশের বাইরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাকি যেতে পারেন না। এটা সাংঘাতিক বিষয়।

দুর্নীতি আগেও ছিল, বিচার হতো না। এখন ধরা হচ্ছে, রিমাণ্ড হচ্ছে, জেলে ঢোকানো হচ্ছে। আগে দুর্নীতি, অনিয়ম, অন্যায়-লুটপাটকে ধামাচাপা দিয়ে রাখা হতো। এখন তো বিচার হচ্ছে। শাস্তি পেতে হচ্ছে। প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত একটি কথা প্রায়ই রসিয়ে রসিয়ে বলতেন, ‘বাঘে ধরলে ছাড়ে, শেখ হাসিনা ধরলে ছাড়াছাড়ি নেই।’ যদিও তার উপজেলায়ই নাকি এখন দলীয় কোন্দল-দলাদলি বেশি। বিভিন্ন ঘটনায় এটা প্রমাণিত হয়েছে, বঙ্গবন্ধুকন্যা গণমানুষের, এ কথাটি ভুলে যাওয়া ঠিক হবে না। সেই ব্যক্তি শেখ হাসিনার যত ঘনিষ্ট বা আপনজনই হোক, অন্যায়কারী হিসেবে শাস্তি পেতে হবে। ক্ষমা নেই।

এ সরকার আমলে অপরাধী যত শক্তিধরই হোক রেহাই পাওয়ার সুযোগ থাকে না তাদের। ধরা পড়ে গেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে নির্বাহী বিভাগের কোনো কর্মকর্তা দায়ীদের ছাড় দেন না। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এমন নির্দেশ গেছে। অপকর্ম সৃষ্টিকারীদের রুখতে তাড়াতাড়ি শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে। পুলিশের গুলিতে সাবেক সেনা কর্মকর্তা মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান নিহতের ঘটনায় করা হত্যা মামলায় টেকনাফ থানার প্রত্যাহার হওয়া ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশসহ তিন আসামি সাত দিন করে রিমান্ডে । সিনহা রাশেদকে গুলি করা পুলিশের পরিদর্শক লিয়াকত আলী ও প্রদীপের বিরুদ্ধে প্রতিদিনই অভিযোগ বাড়ছে। এদের গ্রেপ্তারের আগে শোনা যেত, তাদের শক্তিশালী হাত এতো সুদীর্ঘ যে- কয়েকডজন মার্ডার করা হলেও কারো কিছু করার থাকতো না। কক্সবাজারের টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর পুলিশ তল্লাশিচৌকিতে গত ৩১ জুলাই রাতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান (৩৬)।

করোনার ভুয়া প্রতিবেদন দেওয়ার মামলায় জেকেজি হেলথ কেয়ারের ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরী এবং তার স্বামী আরিফুল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে। তথাকথিত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ ও পত্রিকা সম্পাদক মোহাম্মদ সাহেদ কলামিস্ট, সাংবাদিক, টকশোর প্রভাবশালী অতিথির ঘনিষ্টজন হলেও রেহাই পাননি। রিমান্ডের পর রিমান্ড নেওয়া হচ্ছে, তথ্য উদ্ধারের সার্বিক চেষ্টা চলছে। বিচারের মুখে অনেকেই জেলে আছেন। সুতরাং যে যত বড় প্রভাবশালী ও অর্থবিত্তবান হোক না কেন, রাজনীতিবিদ, এমপি হোন না কেন- কোনো উপায় নেই রেহাই পাবার। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) আয়োজিত আলোচনায় সভায় স্পষ্ট একটি কথা বলেছেন যা অনেকেরই ভালো লাগবে। গতকাল তিনি বলেছেন, ‘যারা দল করেন তারা মনে রাখবেন যে, দলে যদি ঐক্যকে গুরুত্ব না দেন, নিজেদের মধ্যে কলহ- কোন্দল থাকে তাহলে দুঃসময়ে প্রতিপক্ষ কোন্দলের ওপর আঘাত হানবে। এ দেশে কখন কি ঘটে বলা যায় না। চিরজীবন আমরা ক্ষমতায় থাকব; এটা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভাবেন না, আমরাও ভাবি না।’ ক্ষমতার দাপট না দেখানোর জন্য দলীয় কর্মীদের সতর্ক করে দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘চিরকাল কেউ ক্ষমতায় থাকে না। চোখের পলকে বাংলাদেশে ১৫ আগস্ট ঘটে গেছে। হঠাৎ করে ২১ আগস্ট। দল ক্ষমতায় আছে, এখন যে যেখানে আছেন ক্ষমতার দাপট দেখাবেন না। যখন ক্ষমতায় থাকবেন না, প্রতিপক্ষ প্রতিশোধ নেবে।’ একথাটি বোঝার বোধশক্তি নিশ্চয়ই আছে দলের অনেকের? সুতরাং সাবধান হতেই হবে। তখন ‘সেফ জোন’ পাওয়া যাবে না। বিএনপি-জামায়াত ‘সেফ জোন’ উঠিয়ে নেবে! দুর্নীতিবাজ চক্রের সঙ্গে মিশে যাবে ওরা।

লেখক : উপসম্পাদক, আমাদের অর্থনীতি, সিনিয়র সাংবাদিক ও কথাসাহিত্যিক

 

 

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়