রাশিদ রিয়াজ : বৃহস্পতিবার দিল্লিতে বৈঠকে পণ্য ও পরিষেবা কর (জিএসটি) কাউন্সিলের বৈঠকের পরে নির্মলা সীতারমন সাংবাদিকদের জানান সবটাই ঈশ্বরের মার। এখন এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে যে, অর্থনীতি সংকুচিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ইকোনমিক টাইমস
জিএসটি কাউন্সিলের ৪১তম বৈঠকে জানানো হয় এবছর রাজ্যগুলিকে ৩ লাখ কোটি রুপি ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ছিল। কারণ জিএসটি চালু হওয়ায় তাদের রাজস্ব কমেছে। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার মনে করে, সেস বসিয়ে রাজ্যগুলির জন্য ৬৫ হাজার কোটি রুপি জোগাড় করা যাবে।
ভারতের রাজস্ব সচিব অজয়ভূষণ পাণ্ডে বলেন, জিএসটি-র জন্য রাজ্যগুলির মোট রাজস্ব ঘাটতি হওয়ার কথা ছিল ৯৭ হাজার কোটি রুপি। কিন্তু কোভিড মহামারীর জন্য ঘাটতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৩৫ হাজার কোটি রুপি। রাজ্যগুলিকে কম সুদে ৯৭ হাজার কোটি রুপি ধার দেওয়া হবে। ২০২২ সালের মধ্যে সেই ঋণ শোধ করতে হবে। সেস বসিয়ে ঋণশোধের অর্থ সংগ্রহ করবে রাজ্যগুলি। অথবা রাজ্যগুলি পুরো ২ লাখ ৩৫ হাজার কোটি রুপিই ঋণ নিতে পারবে। কোন রাজ্য কত রুপি ঋণ নেবে, তা জানাতে হবে আগামী সাত দিনের মধ্যে।
ভারতের অর্থমন্ত্রী আরো জানান, জিএসটি-র ক্ষতিপূরণ বাবদ কেন্দ্রীয় সরকার ২০২০ সালে দিয়েছে ১ লাখ ৬৫ হাজার কোটি রুপি। তার মধ্যে গত মার্চে ১৩ হাজার ৮০৬ কোটি ও জিএসটি-র ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য সেস আদায় হয়েছে মাত্র ৯৫ হাজার ৪৪৪ কোটি রুপি।
গত কয়েকদিন ধরেই বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলি দাবি জানাচ্ছে, করোনা পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় সরকার তাদের ক্ষতিপূরণ দিক। কারণ তাদের রাজস্ব আদায় ব্যাপক কমেছে। বুধবারই কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার যেভাবে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দায় এড়িয়ে যেতে চাইছে, তা রাজ্যগুলির প্রতি বিশ্বাসঘাতকতার শামিল। বিরোধীদের এই চাপের মধ্যে এদিন জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠক বসে।
একই দিন পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং জানান, করোনা সংকটে তাদের ২৫ হাজার কোটি রুপি রাজস্ব ঘাটতি হতে পারে। এদিন পাঞ্জাবের অর্থমন্ত্রী মনপ্রীত সিং বাদল বলেন, আমাদের মতো ছোট রাজ্য কেন্দ্রীয় সরকারের থেকে পায় ৪৪০০ কোটি রুপি। তার মধ্যে সরকারি কর্মচারিদের বেতন দিতেই খরচ হবে ১৮০০ কোটি রুপি।
২০১৭ সালের ১ জুলাই থেকে দেশে জিএসটি চালু হয়। এই আইনে স্পষ্ট বলা হয়েছে, জিএসটি চালুর জন্য রাজ্যগুলির রাজস্ব আদায় কমবে। রাজস্ব আদায় যদি ১৪ শতাংশের বেশি কমে, তাহলে ২০২২ সাল পর্যন্ত তাদের ক্ষতিপূরণ দেবে কেন্দ্রীয় সরকার। অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপাল বলেছেন, জিএসটি-র জন্য রাজ্যগুলির রাজস্ব আদায় কমেছে। এই কোভিড সংকটে কেন্দ্রীয় সরকার তাদের ক্ষতিপূরণ দিক।
আপনার মতামত লিখুন :