শরিফুল হাসান: ই-ভ্যালি ভালো কী মন্দ- সেটা নিয়ে আমার কিছু বলার নেই। সময় হলেই বোঝা যাবে। তবে শহরে গ্রামে প্রায়ই শুনবেন ওমুক কোম্পানি টাকা নিয়ে উধাও। এসব কেন হয় জানেন? বাংলাদেশে ডেসটিনি বা প্রতারক প্রতিষ্ঠানরা কেন টিকে থাকে জানেন? টিকে থাকে আপনাদের জন্য, যারা মুহূর্তেই বড়লোক হওয়া স্বপ্ন দেখেন। আমি সবসময় বলি, আজকে এই দেশের সংকট অর্থনৈতিক না, সংকটটা মূল্যবোধের। মূল্যবোধের এই অবক্ষয়ে আমরা সবাই জড়িয়ে গেছি। তাই ১৫ হাজার টাকা সরকারি অফিসের পিয়নের লাখ লাখ টাকা। ৪০ হাজার টাকা বেতন দিই। সরকারি কর্মকর্তার তিনি ফ্ল্যাট কেনেন ৮০ লাখ টাকায়। সাংবাদিক বলেন, পুলিশ, বিচারক, ডাক্তার, সরকারি কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী-ব্যাংকার, ব্যবসায়ী সব পেশায় একদল লোক বড়লোক হতে চায়। এর পাশাপাশি আরেকদল আছে যারা টাকা দ্বিগুনের অফার খোঁজে। শেয়ার বাজারে গিয়ে একদিনেই বড়লোক হওয়ার ইচ্ছা, টাকা দ্বিগুনের লোভে কখনো ডেসটিনি, কখনো ইভ্যালি। অবশ্য সমস্যাটা ইভ্যালি বা ডেসটিনিতে যতোটা। তার চেয়ে বেশি আমাদের লোভ। আফসোস সৎভাবে পরিশ্রম করে, সৎভাবে ব্যবসা করে, সততার সঙ্গে চাকরি করে, কিংবা যেকোনো ধরনের কষ্ট করার বদলে অনেকেই আমরা সহজ রাস্তা খুঁজি।
আর তাই রাতারাতি নানা প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে প্রতারণার জন্য। আমাকে আপনাদের বইয়ের মানুষ মনে হতে পারে, মনে হতে পারে লোকটা কেন এতো নীতিকথা বলে। কেন বলি জানেন? কারণ আমি দেখি আজকের বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সংকট এই মূল্যবোধের অবক্ষয়। টাকার লোভ, নীতিহীনতা। আপনাদের প্রত্যেকের কাছে অনুরোধ, প্লিজ এসব বাদ দিন। আমি কোনোদিন ইভ্যালির অফারে পা দিইনি। সবাইকে না করেছি। কখনও ডেসটিনি আমাকে টানেনি। হ্যাঁ, জীবন চলার জন্য খেতে হয়, বাসাভাড়া বা সন্তানকে পড়াতে হয়। এজন্য টাকা লাগে। কিন্তু অবশ্যই সেটা সৎপথে হতে হবে। চাহিদা থাকা উচিত সীমিত। আমি আমার জীবন চলার পথে ৩টা জিনিস মনে রেখেছি। মানবিক, সৎ ও সাধারণ জীবনযাপন। আপনাদেরও তাই বলি। মনে রাখবেন আপনি যদি সব সময় মানবিক থাকেন এবং আরেক জনের জন্য ভাবতে পারেন। যদি সব সময় সৎ থাকেন। সৎপথে চলতে পারেন। সব সময় সাধারণ জীবনযাপনে অভ্যস্ত হতে পারেন। দেখবেন এই গোটা পৃথিবীর সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। বেঁচেও আনন্দ পাবেন। সৃষ্টিকর্তা আমাদের সবাইকে বিবেকবোধ দিক। ফেসবুক থেকে