শিরোনাম
◈ ওড়না কেড়ে নিয়ে পুরুষ কর্মকর্তাদের উল্লাস, নারী বন্দিদের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা ◈ রেকর্ড উৎপাদনের সুফল কোথায়? চালের বাজারের চালকের আসনে কারা? ◈ পবিত্র আশুরা আজ ◈ তরুণ ক্রিকেটার তানভীরের ফাইফারে সিরিজ সমতায় বাংলাদেশ ◈ 'শিক্ষা ও স্বাস্থ্য দখল করেছে জামায়াত': গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ◈ ১৪ হাজার কোটি রুপি কেলেঙ্কারি, যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেপ্তার ভারতের নেহাল মোদি (ভিডিও) ◈ মোবাইল চুরির অভিযোগকে কেন্দ্র করে গ্রাম্য সালিস থেকে রক্তাক্ত ট্র্যাজেডি ◈ জাতীয় নির্বাচনে বাধা দেওয়ার শক্তি কারো নেই: কেরানীগঞ্জে বিএনপি সমাবেশে সালাহ উদ্দিন আহমদের হুঁশিয়ারি ◈ তুর্কমেনিস্তানকে কাঁ‌পি‌য়ে দি‌লো বাংলা‌দেশ, এশিয়ান কাপে যাচ্ছে ঋতুপর্ণারা ◈ চী‌নে জু‌নিয়র হ‌কি‌তে একদিনে বাংলাদেশ পুরুষ ও নারী দ‌লের জয়

প্রকাশিত : ১৯ আগস্ট, ২০২০, ০৯:১৭ সকাল
আপডেট : ১৯ আগস্ট, ২০২০, ০৯:১৭ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

টেকনাফ থানার ১১ দিনের ফুটেজ গায়েব!

ডেস্ক রিপোর্ট : অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান নিহত হওয়ার ওই রাত এবং আগে-পরের মোট ১১ দিনের টেকনাফ থানার সব সিসি ক্যামেরার ফুটেজ গায়েব হয়ে গেছে। টেকনাফের মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি থানার ফুটেজ হাওয়া হয়ে যাওয়া নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অনুসন্ধানে এমন তথ্য বেরিয়ে এসেছে।

এদিকে, গতকাল সকাল ১০টার দিকে কারাগারে থাকা আসামি সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাস, পরিদর্শক লিয়াকত আলী ও এএসআই নন্দদুলাল রক্ষিতকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য র‌্যাব হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা হত্যা মামলায় এপিবিএনের ৩ সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর র‌্যাব আদালতে হাজির করলে তাদের প্রত্যেককে ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঘটনার রাতে টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাসের গতিবিধির তথ্য তদন্তে গুরুত্ব পাচ্ছে। কারণ ওসি প্রদীপ ঘটনাস্থলের আশপাশে ছিলেন নাকি থানা থেকে

বেরিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছেন এই প্রশ্নের উত্তর তদন্তের গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এ কারণে বিপদ আঁচ করতে পেরে প্রদীপ কুমার দাস ফুটেজ নষ্ট করে ফেলতে পারেন বলে ধারণা তাদের তদন্তকারীদের।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, স্থানীয় আইটি টেকনিশিয়ানকে গত ১৫ আগস্ট টেকনাফ থানায় নেওয়া হয়। থানায় সাবেক ওসি প্রদীপের কক্ষে থাকা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংরক্ষণের জন্য থাকা সরঞ্জাম পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও যাচাই-বাছাই করে মতামত দেন তিনি। মতামতের ওই প্রত্যয়নপত্রে গত ২৫ জুলাই থেকে ৬ আগস্ট পর্যন্ত ১১ দিনের কোনো ফুটেজ পাওয়া যায়নি বলে উল্লেখ করা হয়। মতামতে লেখা হয়, থানার পূর্বপাশের দেয়ালে ১টি এনভিআর বক্স (ডাহুয়া কোম্পানি) পরীক্ষা করে কোনো হার্ডডিস্ক পাওয়া যায়নি। হার্ডডিস্ক না থাকায় কোনো ফুটেজও নেই। এ ছাড়া ওসির টেবিলের পশ্চিম পাশে সংরক্ষিত একই ধরনের বক্সের ভেতর এক টেরাবাইট হার্ডডিস্ক পাওয়া গেলেও তা নষ্ট ছিল। এ জন্য সেখানেও কোনো ফুটেজ পাওয়া যায়নি। থানায় গুরুত্বপূর্ণ ওই রাতসহ ১১ দিনের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ কোথায় গেল এ সম্পর্কে আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।

এপিবিএনের তিন সদস্যের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর

অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা হত্যা মামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) ৩ সদস্যের ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না ফারাহ এ আদেশ দেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও র‌্যাবের এএসপি খায়রুল ইসলাম জানান, সকালে এপিবিএনের তিন সদস্যকে কক্সবাজার আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়। আদালতের বিচারক তামান্না ফারাহ শুনানি শেষে প্রত্যেকের ৭ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন কক্সবাজার ১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) শাহাজাহান, কনস্টেবল রাজিব ও আব্দুল্লাহ। তারা তিনজন ৩১ জুলাই রাতে শামলাপুর এপিবিএনের চেকপোস্টে দায়িত্বরত ছিলেন।

অবশেষে রিমান্ডে ওসি প্রদীপসহ তিন কর্মকর্তা

অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা হত্যা মামলায় অবশেষে রিমান্ডে নেওয়া হলো টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাস, বাহারছড়া পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের সাবেক ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলী ও এএসআই নন্দদুলাল রক্ষিতকে। গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টার কিছু পরে র‌্যাব তাদের কারাগার থেকে রিমান্ডে নেয়। এর আগে একই মামলায় পুলিশের ৪ সদস্য এবং পুলিশের মামলার ৩ সাক্ষীকে রিমান্ডে নেয় তদন্ত সংস্থা র‌্যাব।

র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ বলেন, আদালতের নির্দেশে ওসি প্রদীপসহ তিনজনকে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা যে সময়টা সুবিধাজনক মনে করেছেন ঠিক তখনই তাদের রিমান্ডে নিয়েছেন।

প্রদীপের বিরুদ্ধে আরেক হত্যা মামলা

টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাসসহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। গতকাল বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে মামলাটি দায়ের করেন টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের মৌলভীবাজার এলাকার সুলতান আহমদের স্ত্রী গোল চেহের।

কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালত ৩-এর বিচারক মো. হেলালউদ্দিন মামলাটি আমলে নিয়ে এএসপি সমমানের পুলিশ কর্মকর্তার মাধ্যমে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সিআইডিকে নির্দেশ দিয়েছেন।

বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইনসাফুর রহমান জানান, গত ৪ জুলাই সকালে বাদী গোল চেহেরের দুই সন্তান সাদ্দাম হোসেন ও মো. জাহেদ হোসেনকে ধরে নিয়ে যায় পুলিশ। পরে তাদের ছেড়ে দেবে বলে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। অন্যথায় লাশ প্রদান করা হবে বলে হুমকি দেয় টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মশিউর রহমান। পরে পৃথকভাবে ৫ লাখ টাকা দেওয়া হয়। কিন্তু তাদের ছেড়ে না দিয়ে মো. জাহেদ হোসেনকে আদালতে সোপর্দ করলেও মো. সাদ্দাম হোসেনকে গুলি করে হত্যা করে। এ ঘটনায় মশিউর রহমানকে এক নম্বর ও প্রদীপ কুমার দাসকে দুই নম্বর আসামি করে ২৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

গত ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর এপিবিএন চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা। পরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করে সরকার। একইভাবে ওসি প্রদীপ ও পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ ৯ জনকে আসামি করে সিনহার বোন কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি হত্যা মামলা করেন। পরদিন আদালতে আত্মসমর্পণ করেন প্রদীপসহ সাত আসামি। ওই দিনই দুই দফা শুনানি শেষে তিন কর্মকর্তার সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়। এর কয়েক দিন পর বাকি চার পুলিশ সদস্যকে রিমান্ডের আদেশ দেন আদালত। ১৪ আগস্ট এএসআই লিটনসহ চার পুলিশ সদস্যকে কারাগার থেকে হেফাজতে নেয় র‌্যাব। এরই মধ্যে মামলার তদন্ত কর্মকর্তাও বদল করা হয়েছে।বিডি নিউজ, যুগান্তর

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়