অহিদ মুুকুল : [২] নোয়াখালী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে চলছে স্বাস্থ্যসেবা। ভেঙে পড়েছে স্বাস্থ্যসেবার মান। এ হাসপাতালের সর্বত্রই শুধু নেই আর নেই। নানা সমস্যা আর দুর্গন্ধ ময়লা-আবর্জনা ও অব্যবস্থাপনায় জর্জরিত হাসপাতালটি যেন দেখার কেউ নেই। বাথরুমসহ ওয়ার্ডগুলো দুর্গন্ধযুক্ত। হাসপাতালের প্রধান ফটকসহ পরিত্যক্ত ভবন জুড়ে গরু ছাগলের বিচরণ। হকার আর সিএনজিচালিত আটোরিকশার দখলে চলে গেছে হাসপাতালের গেটের ভেতরের খালি জায়গা।
[৩] হাসপাতালে এক-দুটি ওষুধ ব্যতীত রোগীদের সব ওষুধ কিনতে হয় বাইরের ফার্মেসি থেকে। শুধু নেই আর নেই বলেন নার্স ও ওয়ার্ড ইনচার্জ। নিম্নমানের সস্তা ও কম খাবার সরবরাহ করে মাসে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ারও অভিযোগ তোলেন রোগীরা।
[৪] জেলার প্রায় ৩৪ লাখ মানুষের স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের সেবার মান নিয়ে ৯৫ শতাংশ রোগীই অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। হাসপাতালের প্রবেশের পথে দালালদের ছড়াছড়ি। দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালের এক্স-রে মেশিন নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংকট থাকায় স¤প্রতি ৫০টি সিলিন্ডার দরপত্রের মাধ্যমে কেনা হলেও মুমূর্ষু রোগীরা অক্সিজেন পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন।
[৫] চিকিৎসা নিতে আসা রোগী, তাদের স্বজন ও সংশ্লিষ্টরা অভিযোগ করে জানান, প্যাথলজি সেন্টারে পিয়ন থেকে কর্মকর্তারা কমিশন বাণিজ্য নিয়ে থাকেন ব্যস্ত সকাল ও রাতে দুইবার ওয়ার্ডে রোগীদের খোঁজখবর নেয়ার কথা থাকলেও শুধুই সকালে যান চিকিৎসকেরা। নিজেদের ব্যক্তিগত চেম্বার ও প্রাইভেট হাসপাতাল নিয়ে ব্যস্ত থাকেন তারা। সকাল থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত প্যাথলজিতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও আউটডোরে রোগীর চিকিৎসা দেয়ার কথা থাকলেও দুপুর সাড়ে ১২টার পর কেউ থাকেন না। আউটডোরে যথাসময়ে চিকিৎসক আসেন না এবং আসলেও কিছুক্ষণ রোগী দেখে চলে যান। বিনামূল্যে ওষুধ সরবরাহ নেই। চিকিৎসকেরা প্রেসক্রিপশন অনুয়ায়ী নির্দিষ্ট কোম্পানির ওষুধ ক্রয় করতে হয়। রোগ নির্ণয়ে পরীক্ষার জন্য বেশিরভাগ সময় ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও প্রাইভেট ক্লিনিকে।
[৬ নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. সৈয়দ মহিউদ্দিন আবদুল আজিম বলেন, করোনা সংকটে কোভিড হাসপাতাল ও আইসোলেসন ওয়ার্ড নিয়ে ব্যস্ত থাকায় অন্য ওয়ার্ডে নজরদারি কম হচ্ছে। জনবল কম থাকায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ওষুধেরও সংকট আছে। আমরা আরো সচেতনতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবো।
[৭] হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক (ভারপ্রাপ্ত) ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী জানান, হাসপাতালের গেট না থাকার কারণে বাইরে থেকে গরু ছাগলসহ হকার ও সিএনজিচালিত অটোরিকশাগুলো হাসপাতালের ভেতরের অংশ এবং পরিত্যক্ত ভবনের ভেতরে অবস্থান নেয়। ভবন এবং গেট নির্মাণ হয়ে গেলে এ সমস্যা আর থাকবে না।
[৮] হাসপাতালের অব্যবস্থাপনার বিষয়ে তিনি বলেন, এটি আসলে হওয়ার কথা নয়। তারপরও যদি কোনো অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা হয়ে থাকে, তা খোঁজখবর নিয়ে সমাধান করা হবে। সম্পাদনা : হ্যাপি
আপনার মতামত লিখুন :