শিরোনাম
◈ সন্ত্রাসী অপরাধে গ্রেপ্তারদেরও নিজেদের কর্মী দাবী করছে বিএনপি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ◈ গাজীপুরে হিটস্ট্রোকে একজনের মৃত্যু  ◈ বিশৃঙ্খলার পথ এড়াতে শিশুদের মধ্যে খেলাধুলার আগ্রহ সৃষ্টি করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী ◈ তাপপ্রবাহের কারণে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসও বন্ধ ঘোষণা ◈ সোনার দাম কমেছে ভরিতে ৮৪০ টাকা ◈ ঈদযাত্রায় ৪১৯ দুর্ঘটনায় নিহত ৪৩৮: যাত্রী কল্যাণ সমিতি ◈ অনিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল বন্ধে বিটিআরসিতে তালিকা পাঠানো হচ্ছে: তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ◈ পাবনায় হিটস্ট্রোকে একজনের মৃত্যু ◈ জলাবদ্ধতা নিরসনে ৭ কোটি ডলার ঋণ দেবে এডিবি ◈ ক্ষমতা দখল করে আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী আরও হিংস্র হয়ে উঠেছে: মির্জা ফখরুল

প্রকাশিত : ২৭ জুলাই, ২০২০, ১২:৩৭ দুপুর
আপডেট : ২৭ জুলাই, ২০২০, ১২:৩৭ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

[১] বন্যায় কুড়িগ্রামে বানভাসীদের কষ্ট বেড়েছে দ্বিগুন

সৌরভ ঘোষ, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি : [২] বরং এক মাস ধরে এই দুটি নদ-নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অবনতির দিকেই এগুচ্ছে। এ অবস্থায় জেলার প্রায় সাড়ে তিন শতাধিক চরাঞ্চলের প্রায় চার লক্ষাধিক মানুষ বন্যা দুর্গত মানুষ খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি ও স্যানিটেশনের অভাবে গবাদি পশু নিয়ে অবর্ণনয়ি কষ্টে দিন পাড় করছেন।

[৩] এই দীর্ঘ সময় পানিবন্দি থাকা দুর্গম চরাঞ্চলের পরিবারগুলো বাধ্য হয়ে ঘর-বাড়ি ছেড়ে পরিবার পরিজন, গৃহপালিত পশু ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে উঁচু এলাকায় আশ্রয় নিতে শুরু করেছে। এতে করে উঁচু বাঁধ, পাকা সড়ক ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বাড়ছে বন্যা দুর্গত মানুষের সংখ্যা।

[৪] ব্রহ্মপুত্রের অববাহিকার উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়ের মশালের চর, বালাডোবার চর ও যাত্রাপুর ইউনিয়নের পোড়ার চর, চর যাত্রাপুরসহ কয়েকটি চরের বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তারা মূলত ব্রহ্মপুত্রের পানি কমে যাওয়ার আশায় দীর্ঘ এক মাস বা তারও বেশি সময় ধরে নৌকায় এবং ঘরের ভিতর এক বুক আর গলা পানিতে মাঁচান চালের সাথে ঠেকিয়ে বসবাস করে আসছিল।

[৫] কিšুÍ অন্যান্য বছরের বন্যার রেকর্ড ভেঙ্গে এবার মাসিধিককালেরও বেশি সময় অতিবাহিত হতে চলেছে। কিন্তু পানি নেমে যাওয়ার কোন লক্ষন নেই। এই দীর্ঘ সময়ে তারা মূলত বন্যার পানির উপর খাওয়ার কষ্ট, ঘুমানোর কষ্ট, বিশুদ্ধ পানির সংকট, স্যানিটেশনের কষ্ট, গৃহপালিত পশুর কষ্টকে শিকার করে দিন পাড় করছিল। এভাবে বসবাস করায় তাদের সমস্যাগুলো আরো বেড়ে যাওয়ায় তারা বাধ্য হয়ে উঁচু জায়গায় আশ্রয় নিতে শুরু করেছে। এর ফলে নতুন করে বন্যা দুর্গতরা উঁচু বাঁধ, পাকা সড়ক ও বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে বাড়ছে বন্যা দুর্গতদের সংখ্যা।

[৬] জেলার বন্যা কবলিত দুর্গম এলাকার চর ও দ্বীপ চরগুলো ঘুরে দেখা গেছে সেখানকার বেশির ভাগ চরের বাড়ি ফাঁকা পড়ে আছে। পরিবার পরিজনও গরু, ছাগল, ভেড়া উঁচুতে রেখে এসে দুই বা তিনজন করে বন্যার্ত মানুষ নৌকায় করে পড়ে থাকা ঘর-বাড়ি পাহাড়া দিচ্ছে। গত এক সপ্তাহ পুর্বে যে চরগুলোতে দুর্গত মানুষজন নৌকায় ও ঘরের ভিতর কষ্ট করে বসবাস করে আসছিল সেখানকার বেশিরভাগ ঘর-বাড়ি এখন ফাঁকা পড়ে আছে।

[৭] ব্রহ্মপুত্রের অববাহিকার চর যাত্রাপুর ইউনিয়নের চর যাত্রাপুরের ইয়াছিন আলী জানান, নদের অববাহিকায় তারা ১০টি পরিবার বসবাস করছিলেন। তারা কষ্ট করেই এতোদিন বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। কিন্তু এই এক মাসেরও বেশি সময় ধরে পানি নামবে নামবে করে নামছে না। পানিতে ছোট ছোট বাচ্চা, গরু, ছাগল নিয়ে আর কতদিন থাকা যায়। তাই পার্শ্ববর্তী উঁচু সড়কে আশ্রয় নিয়েছেন তারা। এখন পালা করে নৌকায় বসে থেকে দিন-রাত ঘর-বাড়ি পাহাড়া দিতে হচ্ছে। বিশেষ করে পানি স্রোতে ঘর-বাড়ি ভেসে যায় কি না। আবার কোন কিছু চুরি হয় কি না সেই ভয়ে।

[৮] অন্যদিকে কিছু চরের ঘর-বাড়িতে এক কোমর ও হাঁটু পানি থাকায় সেসব চরের বাসিন্দারা পানির মধ্যেই কষ্ট করে জীবন যাপন করছে।

[৯] এদিকে বন্যা কবলিত চরাঞ্চলসহ উঁচু বাঁধ, পাকা সড়ক ও আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়া মানুষজনের এখন একটাই অভিযোগ- তারা খেয়ে না খেয়ে দীর্ঘ দিন ধরে পানির মধ্যে বসবাস করলেও সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য ও চেয়ারম্যানগণ তাদের কোন খোঁজও নেননি এবং ত্রাণও দেননি। দুর্গত এলাকাগুলোতে সাংবাদিক দেখলে তারা ছবি তুলতে বাঁধা দিয়ে খাদ্য সহায়তা না পাওয়ার ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।

[১০] সদরের যাত্রাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো: আইয়ুব আলী সরকার ও বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বেলাল হোসেনের সাথে কথা বললে তারা বন্যা কবলিত মানুষের কষ্টের কথা স্বীকার করে জানান, তাদের ইউনিয়নে যে পরিমান বন্যা কবলিত পরিবারের সংখ্যা রয়েছে এবং যে পরিমান ত্রাণের চাল বরাদ্দ পেয়েছে তা দিয়ে অর্ধেক পরিবারকে দেয়া সম্ভব হয়নি।

[১১] জেলা প্রশাসক মো: রেজাউল করিম জানান, জেলার ৯ উপজেলায় বন্যার্তদের জন্য এ পর্যন্ত ১৯০ মেট্রিক টন চাল, ৯ লাখ টাকা, শিশু খাদ্যের জন্য ২ লাখ, গো-খাদ্যের জন্য ৪ লাখ টাকা ও ৮ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। তাদের কাছে আরো ত্রাণের চাল ও টাকা মজুদ আছে। প্রয়োজনে সেগুলোও বিতরণ করা হবে বলেও জানান তিনি। সম্পাদনা: জেরিন আহমেদ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়