শিরোনাম
◈ নিউইয়র্কে জোহরান মামদানির জয়: কেন ক্ষুব্ধ মোদি সমর্থকেরা? আল–জাজিরার প্রতিবেদন ◈ ওড়না কেড়ে নিয়ে পুরুষ কর্মকর্তাদের উল্লাস, নারী বন্দিদের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা ◈ রেকর্ড উৎপাদনের সুফল কোথায়? চালের বাজারের চালকের আসনে কারা? ◈ পবিত্র আশুরা আজ ◈ তরুণ ক্রিকেটার তানভীরের ফাইফারে সিরিজ সমতায় বাংলাদেশ ◈ 'শিক্ষা ও স্বাস্থ্য দখল করেছে জামায়াত': গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ◈ ১৪ হাজার কোটি রুপি কেলেঙ্কারি, যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেপ্তার ভারতের নেহাল মোদি (ভিডিও) ◈ মোবাইল চুরির অভিযোগকে কেন্দ্র করে গ্রাম্য সালিস থেকে রক্তাক্ত ট্র্যাজেডি ◈ জাতীয় নির্বাচনে বাধা দেওয়ার শক্তি কারো নেই: কেরানীগঞ্জে বিএনপি সমাবেশে সালাহ উদ্দিন আহমদের হুঁশিয়ারি ◈ তুর্কমেনিস্তানকে কাঁ‌পি‌য়ে দি‌লো বাংলা‌দেশ, এশিয়ান কাপে যাচ্ছে ঋতুপর্ণারা

প্রকাশিত : ০৪ জুলাই, ২০২০, ০৬:১৬ সকাল
আপডেট : ০৪ জুলাই, ২০২০, ০৬:১৬ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

[১] স্থায়ী কমিটির শূন্যপদগুলো পূরণের আলোচনা বিএনপিতে

ডেস্ক রিপোর্ট : [২] গঠনতন্ত্রের হিসাবে কাউন্সিল করার সময় ১৫ মাস পার হলেও সপ্তম কাউন্সিল কবে নাগাদ হবে, তা নিয়ে কোনও আলোচনা নেই বিএনপিতে। করোনাভাইরাস মহামারির কারণে এই অনিশ্চয়তা এখন আরও বেড়েছে। সহসাই কাউন্সিল করে নতুন নেতৃত্ব আনার সম্ভাবনাও প্রায় নেই বললেই চলে। এ কারণে দলটির নীতিনির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটির শূন্যপদগুলো পূরণ করার বিষয়ে নেতাদের মধ্যে আগ্রহ তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে দলের মধ্যে যেসব নেতা সিনিয়র ও ত্যাগী হিসেবে পরিচিত, তাদের মধ্য থেকে অন্তত চার জনকে স্থায়ী কমিটিতে মনোনীত করার সুযোগ রয়েছে বলে মনে করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির বর্তমান একাধিক সদস্য ও দায়িত্বশীল নেতা।

বিএনপির দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, ২০১৬ সালের ১৯ মার্চ বিএনপি ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলের পর স্থায়ী কমিটির ১৯ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়। ওই সময় দুটি পদ শূন্য ছিল। বাকি ১৭ সদস্যের মধ্যে তরিকুল ইসলাম, আ স ম হান্নান শাহ ও এম কে আনোয়ারের মৃত্যুতে মোট পাঁচটি পদ শূন্য হয়। এর তিন বছর পর ২০১৯ সালের ১৯ জুন স্থায়ী কমিটিতে মনোনীত হন সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। এর কয়েক মাস পর গত বছরের অক্টোবরে দল থেকে পদত্যাগ করেন সাবেক সেনাপ্রধান মাহবুবুর রহমান। তার জায়গাটিও শূন্য অবস্থায় রয়েছে। এছাড়া, স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতি থেকে দূরে রয়েছেন অসুস্থতার কারণে। তার পদটিও কোনও কাজে লাগছে না বলে সূত্রের ভাষ্য।

[৩] স্থায়ী কমিটির একাধিক সদস্য বলেছেন, করোনাভাইরাসের কারণে দলের পরবর্তী সপ্তম কাউন্সিল কবে নাগাদ হবে, এটা অনিশ্চিত। একইসঙ্গে দলে বেশ কয়েকজন সিনিয়র নেতা রয়েছেন, যাদের এই সময়ে নীতিনির্ধারণে যুক্ত করার মধ্য দিয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলা সহজতর হবে। একইসঙ্গে সিনিয়রদের সম্মানজনক বিদায় জানানোর প্রক্রিয়াটিও সামনের দিনে সহজ হবে বলে মনে করছেন কোনও কোনও সদস্য। তবে, বেশ কয়েকজন নেতা নতুন সদস্য যুক্ত করার বিপক্ষেও রয়েছেন বলে জানান স্থায়ী কমিটির দুই সদস্য।

জানতে চাইলে বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালীন ও স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার বলেন, ‘আমি তো মনে করি স্থায়ী কমিটিতে যে পদগুলো শূন্য অবস্থায় রয়েছে, সেগুলো পূরণ হতে পারে। পুরো কমিটি বৈঠক করবে, ভরপুর আলোচনা হবে। এটা তো পার্টির জন্য খুবই ভালো ও উৎসাহব্যঞ্জক। এটা আমার ব্যক্তিগত মত।’

[৪] বিএনপির দায়িত্বশীল একটি সূত্রের ভাষ্য—স্থায়ী কমিটিতে যুক্ত করার মতো সিনিয়র নেতাদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে কেন্দ্র করে আলোচনা আছে। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছেন—আবদুল্লাহ আল নোমান, আবদুল আউয়াল মিন্টু, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, মো. শাজাহান, খন্দকার মাহবুব হোসেন, এ জেড এম জাহিদ হোসেন ও অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন ও বর্তমান সংসদ সদস্য জিএম সিরাজ। তবে এই উল্লেখযোগ্যদের মধ্যে কারা এগিয়ে আছেন, এ বিষয়ে স্থায়ী কমিটি ও দায়িত্বশীল সূত্রগুলোর একাধিক মত পাওয়া গেছে।

দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র বলছে, রাজনৈতিক নেতা হিসেবে স্থায়ী কমিটিতে অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে আবদুল্লাহ আল নোমান এগিয়ে আছেন কয়েকটি কারণে। দলের নেতৃত্বের প্রতি একনিষ্ঠতা, সক্রিয় মুক্তিযোদ্ধা ও দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক কৌশল বাস্তবায়নে তিনি অভিজ্ঞ। তবে চট্টগ্রামকেন্দ্রিক রাজনীতিতে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর সঙ্গে তার বিরোধের বিষয়টিকে কেন্দ্র করে স্থায়ী কমিটির সদস্যদের মধ্যেও পক্ষে-বিপক্ষে মত রয়েছে। এক্ষেত্রে চেয়ারপারসন বা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উদ্যোগই সমাধান আনতে পারে, এমন আশাবাদ রয়েছে সূত্রের। যোগাযোগ করলে আবদুল্লাহ আল নোমান এ প্রসঙ্গে কোনও কথা বলতে চাননি। তার ঘনিষ্ঠ একজন এ প্রতিবেদককে বলেছেন, রাজনীতিতে এখন ব্যক্তিনির্ভর যোগাযোগ রক্ষা করার বিষয়টি গুরুত্ব পাওয়ায় এক্ষেত্রে আবদুল্লাহ আল নোমানের পক্ষ থেকে কোনও উদ্যোগ নেই। আর একইসঙ্গে দলের শীর্ষ পর্যায়ে তার বিষয়ে ইতিবাচক অবস্থান আছে, এমনটিও শক্তভাবে প্রমাণিত নয়। সে কারণে নিজে উদ্যোগী হয়ে পদপ্রাপ্তির জন্য কোনও তৎপরতা নেই নোমানের।’

[৫] দলীয় সূত্রের দাবি, হাফিজ উদ্দিন আহমেদের বিষয়ে দলের বিভিন্ন পক্ষ থেকে আগ্রহ রয়েছে। বিশেষত, সুশীল সমাজের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতার বিষয়টি বিএনপি রাজনৈতিকভাবে তার মাধ্যমে কাজে লাগাতে পারবে, এমন ধারণা আছে কারও কারও। আবদুল আউয়াল মিন্টুর স্থায়ী কমিটির সদস্য হওয়া অনেকটা সময়ের ব্যাপার বলেই মনে করেন তার শুভানুধ্যায়ীরা। ব্যবসায়িক জায়গা থেকে দেশে ও দেশের বাইরে তার যোগাযোগের বিষয়টি শুভাকাঙ্ক্ষীদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ বলে জানায় সূত্র।

স্থায়ী কমিটির শূন্যপদগুলো পূরণের বিষয়ে দলের বেশ কয়েকজন ভাইস চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা হয় । তারা এ বিষয়টিতে নিজেদের মতামত দিতে অনীহা প্রকাশ করেন। তবে তারা গুরুত্ব দিয়ে বলেছেন, করোনা মহামারির কারণে সারা পৃথিবী নিউ নরমাল সিচুয়েশনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনেও সমানভাবে করোনার ধাক্কা লেগেছে, পরিবর্তন এসেছে গুণগত। এই পরিবর্তন দৃশ্যমান হতে সময় লাগলেও পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপির কী করণীয়, তা ঠিক করতে হবে এখনই। আর তাতে যদি ব্যর্থতা থাকে, তাহলে আগের মতো রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক দুর্বলতা থেকেই যাবে।

[৬] জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, ‘স্থায়ী কমিটির সদস্য নিয়োগের বিষয়ে গঠনতান্ত্রিকভাবে চেয়ারপারসনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সবসময়। তিনিই সদস্য মনোনীত করেন। বর্তমান কমিটি গঠিত হওয়ার পর আমাদের অনেক সদস্য ইন্তেকাল করেছেন। সে কারণে দুটি পদ পূরণ করা হয়েছে ইতোমধ্যে। তবে কিছু বাকি আছে। এ বিষয়টি নিয়ে আমাদের চেয়ারপারসনকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান প্রয়োজন মনে করলে মতামত দেবেন। আর স্থায়ী কমিটিতে এখনও এ বিষয়টি নিয়ে আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়নি।’বাংলা ট্রিবিউন, বিডি নিউজ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়