আরিফুল ইসলাম, সরাইল : [২] ঐতিহ্যবাহী তিতাস ও মেঘনা নদীকে ঘিরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ অরুয়াইল বাজার নানা কারণে দিন দিন উন্নতির দিকে অগ্রসর হচ্ছে। ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিশাল হাওরের উপর দিয়ে সরাইল-অরুয়াইল আঞ্চলিক সড়ক নির্মাণ হওয়ার পর বিশেষ করে অরুয়াইল ও পাকশিমুল এই দুই ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষের জীবনযাত্রার মান আরো বৃদ্ধি পেয়েছে।
[৩] অরুয়াইল বাজার এলাকায় জমির মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় সুযোগে একটি শক্তিশালী 'ভূমি খেকো' সিন্ডিকেট দল। তারা সরকারি জায়গা অবৈধ দখলের পর সেখানে দোকানপাট নির্মাণ করে বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। আর এই অবৈধ দখলে ভূমি সিন্ডিকেট সদস্যদের সহযোগিতা করেছে এখানকার বিভিন্ন সময়ে আসা অসাধু ভূমি অফিসাররা।
তবে তাদের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষ মুখ খোলার সাহস পাচ্ছে না। সেখানকার অবৈধ দখলের বিরুদ্ধে স্থানীয় প্রশাসন মাঝেমধ্যে জোরেশোরে পদক্ষেপ নেয়ার ঘোষণা দিলেও অজানা কারণে পরে তা নীরব হয়ে যায়।
[৪] অতীতে প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তা অবৈধ দখলমুক্ত করার উদ্যোগ নিয়ে উল্টো দখলদারত্বের দায়ের করা মামলায় তাঁরা হয়রানির শিকার হয়েছেন। ফলে, যারা দায়িত্ব নিয়ে এসেছিলেন, তাঁরা তেমন জোরালো ভূমিকা নেননি।
[৫] স্থানীয়রা জানান, প্রশাসনের চোখের সামনেই সরকারি জমি একের পর এক দখলে নিয়েছে স্থানীয় প্রভাবশালী। অবৈধ দখলের পর প্রভাবশালীরা এসব সরকারি জমিতে স্থায়ী ভবন ও দোকানপাট নির্মাণ করেছে। সরকারের চোখ ফাঁকি দিতে অসাধু ভূমি অফিসারদের ম্যানেজ করে কিছু জমি লিজ দেয়ার ব্যবস্তা করে।
[৬] অরুয়াইল বাজার এলাকায় প্রায় ৯’শ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং বহু আবাসিক ভবন গড়ে উঠেছে। চলছে নতুন নতুন স্থাপনা নির্মাণ কাজ। বাজারের পাশ ঘেঁষে বয়ে গেছে তিতাস নদী। প্রভাবশালী সিন্ডিকেট স্থাপনা নির্মাণে একটু একটু করে এখন দখল করছে নদীর জমি।
[৭] অরুয়াইল ইউপি চেয়ারম্যান ও অরুয়াইল বাজার কমিটির সভাপতি এখানে অবৈধ দখলের কথা স্বীকার করে বলেন, “ক্ষমতাসীন দলের নাম ভাঙিয়ে অনেকে অনৈতিক সুবিধা নেয়। যারা অবৈধভাবে সরকারি জমি দখল করে আছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হোক। কোনো রাজনৈতিক পরিচয়কে যেন পাত্তা না দেয়া হয়।
[৮]সরাইল উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফারজানা প্রিয়াঙ্কা বলেন, সরকারি সম্পত্তি যারা দখল করেছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থার নেয়া হবে। কোনোভাবেই সরকারি জায়গা দখল করে রাখতে পারবে না। এ বিষয়ে আমরা প্রয়োজনীয় কাজ অব্যাহত রেখেছি।
[৯] সরাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ এস এম মোসা বলেন, অরুয়াইল বাজারে সরকারি সম্পত্তিতে তোলা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে আমরা অভিযান পরিচালনা করবো। কাউকে সরকারি জমি দখল করতে দেয়া হবে না। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আলোচনা করে দখলদারদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে। সম্পাদনা : হ্যাপি