শাহীন খন্দকার :[২] দেশে সংক্রমণের উচ্চহারের মুখে ৩০ হাজার নমুনা পরীক্ষার টার্গেটের কথা বলা হলেও এখন ১৬ বা ১৭ হাজারের মধ্যে তা সীমাবদ্ধ থাকছে। প্রতিদিন আরো বেশি বেশি নমুনা পরীক্ষার পরামর্শ দিয়েছে কোভিড-১৯ মোকাবিলায় গঠিত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। চীনা বিশেষজ্ঞ দলও বাংলাদেশ সফরকালে করোনার পরীক্ষা বাড়ানো উপর খুব জোর দিয়ে গেছে। গত কয়েকদিন ধরেই দেখা যাচ্ছে, নমুনা পরীক্ষার পরিমাণ উল্টো কমছে। এর মধ্যে দেশের একাধিক করোনা ল্যাব জানিয়েছে, কিট না থাকায় পরীক্ষা করতে পারছে না তারা।
[৩] ৬৬টি টেস্টিং সেন্টারের সক্ষমতার ওপর ভিত্তি করে চাহিদা আছে ২০ হাজার কিটের। তবে এর চেয়ে আরো চার-পাঁচগুণ বেশি মানুষ টেস্ট করাতে চান। কিন্তু পারছেন না। এজন্য তারা বুথের সামনে দীর্ঘ লাইনে ঘণ্টার পর ঘণ্টার অপেক্ষা করার অভিযোগ করছেন। পড়েছেন চরম ভোগান্তিতেও। জুনের শুরুর দিকে বেশি সংখ্যক নমুনা পরীক্ষা করায় করোনা শনাক্তও বেড়ে যায়।
[৪] এর পরই কিট সংকট দেখা দেয়। এ কারণে পরীক্ষার পরিমাণও কমে যায়। এতে সংক্রমণের প্রকৃত চিত্র জানা যাচ্ছে না বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। এদিকে, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক সরকারে সঙ্গে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ৫৪টি বুথ বসিয়ে করোনার নমুনা সংগ্রহের কাজ করছে। এই বুথ পরিচালনার দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেন, ল্যাবের পাশাপাশি কিটের সংকটের কারণে এখন নমুনা সংগ্রহ কমানো হয়েছে। আমাদের প্রতিটি বুথ থেকে প্রতিদিন ৩০টি করে নমুনা সংগ্রহ করা হতো।
[৫] এটা স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকেই বেঁধে দেয়া একটা সংখ্যা। কারণ হচ্ছে, একটা নির্দিষ্ট সংখ্যক নমুনা আমাদের ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করার ক্ষমতা আছে। এখন যেটা হয়েছে, এই সপ্তাহে আমাদের বলা হয়েছে, আমরা যেন নমুনা সংগ্রহ একটু কম করি। কারণ কিটের একটু স্বল্পতা আছে।
[৬] তিনি আরো বলেন, সেজন্য এই সপ্তাহে আমরা অর্ধেক করে নমুনা সংগ্রহ করছি। অর্থাৎ ৩০টার জায়গায় আমরা ১৫টা করে নমুনা সংগ্রহ করছি। অন্যদিকে, স্বাস্থ্য খাতের লাগামহীন দুর্নীতি ও জালিয়াতির নেপথ্যে রয়েছে সিন্ডিকেট। অত্যন্ত প্রভাবশালী এই সিন্ডিকেটের হাতেই জিম্মি হয়ে আছে পুরো স্বাস্থ্য খাত। এই সিন্ডিকেটের নেপথ্য নায়ক এই খাতের মাফিয়া ডন হিসেবে পরিচিত মোতাজ্জেরুল ইসলাম মিঠু।
[৭] দীর্ঘদিন পর্দার আড়ালে থেকে নাড়ছেন নিজের গড়া সিন্ডিকেটের কলকাঠি। এমনকি বর্তমান পরিস্থিতিতে বিদেশে পালিয়ে থেকেও সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় সবকিছুই চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তথ্য মানবজমিন,
[৮] সম্প্রতি মিঠু সিন্ডিকেটের বিষয়ে মুখ খুলেছেন নোয়াখালী-৪ আসনের সংসদ সদস্য এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধুরী। এক ভিডিও বার্তায় সরকারের কাছে ‘মিঠু সিন্ডিকেট’ ভেঙে দেয়ার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, আমার জানা মতে, বাংলাদেশের তিন-চারটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান প্রায় ১০ লাখ কিট এনে রেখেছে।
[৯] কিন্তু তারা তা দিতে পারছে না মিঠু সিন্ডিকেটের কারণে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ‘মিঠু সিন্ডিকেট’ যতক্ষণ পর্যন্ত ভাঙা না যাবে, ততক্ষণ এই মন্ত্রণালয় কখনো ভালো থাকবে না। সিন্ডিকেটের কারণে দেশে করোনা পরীক্ষার কিট সংকট সৃষ্টি হয়েছে। তথ্য মানবজমিন ।