মুসবা তিন্নি : [২] দু’ধারের সুউচ্চ গগণশিরিষ গাছ ও পিচঢালা পথের প্যারিস রোড রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্য। ৫০ বছরের পুরনো এই ‘প্যারিস রোড।
[৩] ভোরে অলসতার ঘুম ভেঙে প্রকৃতির প্রথম রূপ দেখা; আর স্নিগ্ধ বিকেল দুটোই দুই রকমের প্রশান্তি ছড়ায় এখানে । তবে বর্তমানে বৈশ্বিক করোনা ভাইরাসের প্রাদূর্ভাবের কারনে প্যারিস রোড অনেকটাই ফাঁকা। নেই ছাত্র ছাত্রীদের কোলাহল। তবুও ছবিপ্রেমী চিত্রগ্রাহকেরা মাঝে মাঝে প্যারিস রোডে গিয়ে ফাঁকা প্যারিস রোডের অপূর্ব সৌন্দর্য নিজেদের ক্যামেরায় ধারণ করেন।
[৪] এমনই এক সকালের মাঝামাঝি তোলা চিত্রে ফুটে ওঠে রাবি ক্যাম্পাসের প্যারিস রোডের ভিন্ন চিত্র। নগর জুড়ে করোনার সতর্কতা, ছড়িয়ে পড়েছে প্রায় পাঁচ হাজার করোনা রোগী। রামেকের করোনা টেস্টের প্যাথলোজি ডিপার্টমেন্ট পর্যন্ত লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। উদাসীন এই নগরবাসীর মৃত্যুর চেয়ে জীবিকাটা জরুরি হয়ে পড়েছে। বিশেষ প্রয়োজনীয় নয়, শখও মেটাতে দেখা যায় এ নগরবাসীকে। বাচ্চাদের খেলনা সহ, বেতের সামগ্রী, ঘরের বাড়তি সৌন্দর্য বৃদ্ধির শো-পিসের দোকানপাটও হরদমই খোলা ব্যবসাও করছে রমরমা। তবে এরই মাঝে প্যারিস রোডের মনোরম পরিবেশে কোনায় কোনায় বসে প্রেমিক জুটির আড্ডাও চলছে।
[৫] গত মঙ্গলবার এমনই কিছু দৃশ্য চোখে পড়ে। কোনরকম স্বাস্থ্য নিরাপত্তা ছাড়াই গাছের অাড়ালে বসে গল্পে মশগুল থাকতে দেখা যায় বেশকিছু প্রেমিক জুটিকে। চিত্রগ্রাহক সাংবাদিক কাছে গিয়ে তাদের প্রশ্ন করলে মেলে নানা ধরনের উত্তর। কারো কারো অভিযোগ দীর্ঘ লকডাউনের ফলে ব্রেকআপ হতে চলেছে সম্পর্কে। আবার কেউবা জানায়, ভালোবেসেছি একে অপরকে মরলে একসাথেই মরবো, এসব করোনা নামক ভাইরাস আমাদের আটকে রাখতে পারবেনা।
[৬] এ বিষয়ে দু একজন ভর্সিটি পড়ুয়া ছেলে মেয়েদের বাবা-মা ও অভিভাবকের সাথে কথা বললে, তারা জানায় আমরা ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার জন্য সেসব প্রতিষ্ঠানে পাঠায় কিন্তু বয়সের কারণে তারা প্রেম, ভালোবাসা, ভালোলাগার বন্ধনে আবদ্ধ হয়। একদিক দিয়ে যদি চিন্তা করি আমরাও এমন বয়স এবং সময় পার করে এসেছি তাই প্রেম, ভালোবাসাকে অন্যায় বলবোনা।
[৭] তবে বর্তমানে যে পরিস্থিতির মধ্যেদিয়ে মানুষ জীবন পার করছে শিক্ষার কোন নিশ্চয়তা নেই, দেশের সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেখানে বন্ধ হয়ে আছে। বর্তমানে বেঁচে থাকা এবং বাঁচিয়ে রাখাটাই যেখানে বড় চ্যলেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে সব বয়সী মানুষের জন্যই। তখন অভিভাবক হিসেবে আমরা মনে করি এমন ছেলেমানুষী না করে বাসায় থাকাটাই উত্তম। আর তাছাড়া এখন ডিজিটাল যুগ, যেখানে যোগাযোগ রাখাটা দুষ্কর ব্যাপার নয়। এবং অভিভাবক হিসেবে আমরা মনে করি এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষেরও দৃষ্টি দেয়ার প্রয়োজন রয়েছে। সম্পাদনা: জেরিন আহমেদ