সুজিৎ নন্দী : [২] এনা প্রপার্টিজ ও এনা গ্রুপের মালিক রাজশাহী-৪ আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হকের বিরুদ্ধে বিয়ে করে প্রতারণা ও ভ্রুণ হত্যার অভিযোগ তোলায় আয়েশা আক্তার লিজার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এমপির পক্ষে মামলাটি করেছেন তার একান্ত সহকারী ও বাগমারা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদ। মামলার পর থেকে আয়েশা আক্তার লিজার মোবাইল বন্ধ।
[৩] লিজা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছবি দিয়ে বিচার চাওয়ায় এর আগে সংসদ সদস্য এনামুল তাকে তালাক দেন। এবার তার বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে মামলা হয়। মামলাটি হয় রাজশাহীর বাগমারা থানায়।
[৪] বাগমারা থানার ওসি আতাউর রহমান জানান, বৃহস্পতিবার রাত ১২টার পর এনামুল হকের পক্ষে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে ও চাঁদা দাবির অভিযোগ এনে মামলায় আসামি করা হয়েছে এনামুল হকের দ্বিতীয় স্ত্রী আয়েশা আক্তার লিজাকে। মামলায় বলা হয়েছে, আয়েশা আক্তার লিজাকে তালাক দেওয়ার পর তিনি তার স্বামী সাংসদ এনামুল হকের কাছে নিজের ব্যাংক লোনের এক কোটি টাকা পরিশোধের জন্য চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দেওয়ায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছবি দিয়ে এনামুল হকের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে তার সুনাম ক্ষুণ্ন করেছেন।
[৫] পুলিশ লিজাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে বলে জানান বাগমারা থানা সূত্রে জানা যায়। মামলা প্রসঙ্গে সাংসদ এনামুল হকের দ্বিতীয় স্ত্রী আয়েশা আক্তার লিজা বলেন, আমাকে পুলিশ দিয়ে গ্রেপ্তার এবং মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। তার অংশ হিসেবেই আমার নামে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে।
[৬] লিজা জানান, আইনগত আমি এখনো এনামুল হকের বৈধ স্ত্রী। আমাকে তালাকের প্রথম নোটিশ দেওয়া হয়েছে বলে শুনেছি। এখনো নোটিশ হাতে পাইনি। পরপর তিনটি নোটিশ তিন মাসে আসার পর তালাক চূড়ান্ত হয়। আমাকে তালাক দেওয়ার বিষয়টি শুনতে পেয়ে আমি ন্যায় বিচার চেয়ে আমার স্বামীর সঙ্গে ফেসবুকে ছবি দিয়েছি। এতে তার একার পক্ষে মান সম্মান নষ্ট হবার কথা নয়। যেহেতু আমরা বৈধ স্বামী-স্ত্রী।
[৭] লিজা আরো জানান, দীর্ঘ আট বছর বিয়ের নামে নাটক করে আমার সঙ্গে সে ঘর সংসার করেছে। এত বছর পর যখন স্বামীর স্বীকৃতি চাইলাম বাচ্চা চাইলাম তখন আমাকে তালাক দেওয়া হয়। আমার সঙ্গে নির্মম আচরণ, মানুষিক নির্যাতন ও আমার বাচ্চা নষ্ট করা হয়। এসব বিষয় জনসম্মুখে আনার পরই এখন মামলা দেওয়া হলো। এভাবে আমার বিচার চাওয়ার পথ এমপি এনামুল হক থামিয়ে দিতে চায়। আমাকে গ্রেপ্তার করা হলে আমার পক্ষে আর বিচার চাওয়ার কেউ থাকবে না। এজন্যই মিথ্যা মামলা দেয়া হলো।
[৮] এদিকে আয়েশা আক্তার লিজা এমপি এনামুল হকের বিরুদ্ধে বিয়ের নামে প্রতারণা ও ভ্রুণ হত্যার অভিযোগ এনে বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবী সমিতিতে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। মহিলা আইনজীবী সমিতির সূত্র জানায়, তারা নিজেরা দুজনই বিবাহিত ছিলেন। দুজনই বিয়ে করেছেন। এখন তাদের কাগজপত্র যাচাই করে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাগজ পর্যালোচনা করা হচ্ছে।