আক্তারুজ্জামান : [২] ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের কেরালা রাজ্যে। জানা যায় স্থানীয়দের এই নৃশংসতার শিকার হয়েছে ওই হাতিটি। যে কিনা খাবারের সন্ধানে এসে প্রাণ দিলো সৃষ্টির সেরা জীব মানুষের হাতে। এমনকি কারো আক্রমণ কিংবা কোনো ক্ষতি না করেই অন্তঃসত্ত্বা হাতিটি মারা গেলো।
[৩] ভারতের উত্তর কেরালার মালাপ্পুরমের বন বিভাগের কর্মকর্তা মোহন কৃষ্ণন বিষয়টি নিশ্চিত করে ফেইসবুকে জানান, হাতিটি জঙ্গল থেকে বেরিয়ে এসে কাছের গ্রামে উপস্থিত হয় খাবারের সন্ধানে। সে পথ দিয়ে হাঁটার সময় তাকে আনারস খেতে দেয় স্থানীয় বাসিন্দারা। কিন্তু ওই আনারসটি ছিলো বারুদে ভরা।
[৪] ও (হাতিটি) সবাইকে বিশ্বাস করেছিল। আনারসটি খাওয়ার পরে যখন তার মুখের মধ্যে সেটিতে বিস্ফোরণ হল ও নিশ্চয়ই শিউরে উঠেছিল। বিস্ফোরণটি এত ব্যাপক ছিল যে, হাতিটির জিভ ও মুখ ভয়ঙ্কর ভাবে চোটপ্রাপ্ত হয়। যন্ত্রণা ও খিদেয় হাতিটি গ্রামের পথে ছুটতে থাকে। কিন্তু এই চরম অস্বস্তির মধ্যেও সে কোনও বাড়ি ভাঙেনি। কাউকে আক্রমণও করেনি। পরে যন্ত্রণার উপশম পেতে সে স্থানীয় ভেলিয়ার নদীতে নেমে যায় পানি খেতে।
[৫] নদীতে থেকে সে নিজেকে নিয়ে নয়, বরং ওর শরীরে বেড়ে ওঠা প্রাণ, যে আরও ১৮ থেকে ২০ মাস পরে ভূমিষ্ঠ হত তাকে নিয়ে ভাবছিলো হয়তো।
[৬] " ডাক্তার যখন হাতিটির ময়না তদন্ত করেন তখন তিনি বলেন, হাতিটি ৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিল। তিনি আরও জানান, হাতিটির মধ্যে একটা সিক্সথ সেন্স কাজ করেছিল। সে জানতো তার মৃত্যু আসন্ন। শুঁড় সহ গোটা শরীর রক্তময়, যন্ত্রণায় জ্বলছিল সারা দেহ। এই অবস্থায় সে তার সন্তানের কথা ভেবে চলে যায় নদীর মাঝে জলের মধ্যে যাতে সেই রক্তাক্ত জায়গায় পোকা-মাকড় না বসে। যতক্ষণ প্রাণ ছিল সে চেষ্টা করেছিল যাতে তার সন্তানের কষ্ট একটু হলেও কম হয়। আর শেষ অবধি সে ওই মাঝ নদীতেই প্রাণ ত্যাগ করে। "
[৭] খবর পেয়ে বন বিভাগ থেকে হাতিটিকে পানি থেকে উদ্ধার করতে আরও দুইটি হাতিকে পাঠানো হয়। কিন্তু নিজের অবস্থান থেকে নড়েনি হাতিটি। এরপর ২৭ মে বিকেল চারটায় সে মারা যায়। পরে জঙ্গলের মধ্যে সমাধিস্থ করা হয় তাকে।
[৮] এ ঘটনায় সামাজিক মাধ্যমজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। আক্রমণ না করা সত্ত্বেও কেন হাতিটিকে মারা হলো কিংবা মানুষ কি আর মানুষ নেই। এরকম নানান পোস্ট লক্ষ্য করা যাচ্ছে স্যোশাল মিডিয়াজুড়ে।
আপনার মতামত লিখুন :