এস এম নূর মোহাম্মদ : [২] ছুটি না বাড়িয়ে ১৫ জুন পর্যন্ত স্বাস্থ্য বিধি মেনে অফিস চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সে ক্ষেত্রে বয়স্ক ও গর্ভবতী নারীদের না যেতে বলা হয়েছে। তবে বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে গণ পরিবহন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
[৩] এদিকে আদালতের বিষয়ে এখনো কোন সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল অফিসার সাইফুর রহমান। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত ভার্চুয়ালি মামলা নিষ্পত্তি করতে কোর্টের সংখ্যা বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন আইনজীবীরা।
[৪] সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, ভার্চুয়াল আদালতের সঙ্গে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কিছু স্বাভাবিক কোর্টও রাখা যেতে পারে। ভার্চুয়াল কোর্টে পদ্ধতিগত কারনে শুনানিতে সময় বেশি লাগে। তাই হাইকোর্টে ভার্চুয়ালি মামলা নিষ্পত্তি করতে ১০-১৫ টি বেঞ্চ বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। সেইসঙ্গে নিম্ন আদালতেও বাড়ানোর পরামর্শ তার।
[৫] তিনি বলেন, ভার্চুয়াল কোর্টে পেন্ডিং মামলা ও আগাম জামিনের শুনানি হচ্ছে না। আগাম জামিন না হওয়ায় অনেক ক্ষেত্রে ন্যায় বিচার ব্যাহত হয়। কেননা বাংলাদেশে মিথ্যা মামলায় অনেককে জড়ানো হয়। তাই এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
[৬] সাবেক ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে ভার্চুয়াল কোর্টের পরিধি বাড়ানো আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের দাবি। এটি সময়েরও দাবি। হাইকোর্টে আরও ৫-৭ বেঞ্চ ফৌজদারি মামলা শুনানির জন্য দিলে যে সেবার মনোবৃত্তি নিয়ে ভার্চুয়াল কোর্টের ধারনা সৃষ্টি হয়েছে সেটা সম্ভব হবে।
[৭] তিনি বলেন, ভার্চুয়াল কোর্টের জন্য আইনজীবীরা প্রস্তুত ছিলনা। সাংবিধানিক বাধ্য বাধকতা ও দীর্ঘদিন কারাগারে থাকাদের কথা বিবেচনা করে ভার্চুয়াল কোর্ট করা হয়েছে। সেটা অব্যাহত রাখা দরকার। তবে বেশ কিছু কাজ এখনো সনাতন পদ্ধতিতে করতে হয়, সেগুলোর সমাধান করা প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।
[৮] ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক বলেন, অনেক আইনজীবী এরইমধ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তাই আদালত অঙ্গন খোলে না দিয়ে কোর্টের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য প্রধান বিচারপতি ও আইনমন্ত্রীর প্রতি অনুরোধ করেন তিনি। আর হাইকোর্টে অন্তত ১০ টি ভার্চুয়াল বেঞ্চ রাখার পক্ষে মত দেন এই আইনজীবী।
[৯] ব্যারিস্টার হুমায়ন কবির পল্লব বলেন, ভার্চুয়াল কোর্ট শুরু হয়েছিল একটি বিশেষ পরিস্থিতিতে বিচার প্রক্রিয়াকে চলমান রাখার জন্য। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি দীর্ঘায়িত হচ্ছে। তাই ভার্চুয়াল কোর্টের সংখ্যা বাড়ানো দরকার।
[১০] তিনি বলেন, আইনজীবীকে ওকালতনামায় স্টিকার লাগানোর জন্য বারে যেতে হচ্ছে। এটাকে ভার্চুয়ালি করা খুবই প্রয়োজন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত নিয়মিত কোর্ট খোলে না দেয়াটাই সবার জন্য মঙ্গলজনক হবে বলে মনে করেন তিনি।
[১১] অ্যাডভোকেট মির্জা আল মাহমুদ বলেন, ভার্চুয়াল কোর্ট আমাদের জন্য আশার আলো সঞ্চার করেছে । তবে হাইকোর্ট বিভাগের সকল নিয়মিত বেঞ্চসমূহকে মোশন পাওয়ার প্রদান করা যেতে পারে।
তিনি বলেন, হাইকোর্ট থেকে নির্দেশনা জারি করা হয়েছে যে, ভার্চুয়াল কোর্টে উপস্থাপিত কাগজপত্র সত্যায়িত করে পিডিএফ আকারে আদালতে উপস্থাপন করতে হবে। তবে ভবিষ্যতে যদি কোনো অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে সংশ্লিষ্ট আইনজীবী বিপদের মধ্যে পড়তে পারেন। তাই আইনজীবী সুরক্ষা সম্পর্কিত বিধান করার আহ্বান জানান তিনি।
[১২] এছাড়া অ্যাডভোকেট সিদ্দিক উল্যাহ মিয়া বলেন, আগে জীবনের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করতে হবে, পরে বিচার। তাই ভার্চুয়াল কোর্টের সংখ্যা বাড়িয়ে বিচারকাজ চালানোর পরামর্শ দেন তিনি।