শিরোনাম

প্রকাশিত : ২৫ মে, ২০২০, ০৩:০০ রাত
আপডেট : ২৫ মে, ২০২০, ০৩:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

[১] অর্থের অভাব যে কতোটা কঠিন তা একমাত্র সে-ই বোঝে যার অর্থের অভাব রয়েছে

আসাদুজ্জামান বাবুল,গোপালগঞ্জ:[২]  গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) ১৭৬ জন দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মচারীর বেতন-ভাতা হয়নি আজও।

[৩] ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ছাত্র আন্দোলনে সাবেক ভিসি প্রফেসার ড, খোন্দকার নাসির উদ্দিনের পদত্যাগের পর ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র বতমান ভারপ্রাপ্ত ভিসি অধ্যাপক ড, শাহজাহন ১৭৬ জন দৈনিক মজুরি ভিত্তিক কর্মচারীর বেতন-ভাতা বন্ধ করে দেন। গত ৯ মাস ধরে ছোটখাটো ব্যবসা কিংবা পরিবারের অন্য সদস্যদের আয়ের ওপর নির্ভর করে চললেও করোনা ভাইরাসের কারণে সেই পথও এখন বন্ধ। ফলে, পরিবার পরিজন নিয়ে এখোন মানবেতর জীবন-যাপন করছেন তারা। গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বাড়ী, দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে কর্মরত কর্মচারী কাজী রুমা  আজ রোববার বিকালে আমাদের এ প্রতিবেদককে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে চাপা কান্না বুকে নিয়ে বলেন, আমাদের পরিবারে ছোটো বাচ্চারা রয়েছে।

[৪] ঈদে তারা আশা করে নতুন পোশাকের, ভালো খাবারের। কিন্তু প্রায় নয় মাস যাবৎ আমাদের বেতন-ভাতা বন্ধ। করোনা ভাইরাসের কারণে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদেরও কোনো আয় নেই। এখন আর বাচ্চাদের কোনো উত্তর দিতে পারি না। আমরা যে কতোটা অসহায় এবং কতোটা দুঃসময়ের মধ্যে দিয়ে জীবন-যাপন করছি তা কাউকে বলে বোঝানো যাবেনা। অর্থের অভাব যে কতোটা কঠিন তা একমাত্র সে-ই বুঝে যার অর্থের  অভাব রয়েছে।

[৫] চার সদস্যের সংসারের একমাত্র উপার্জনকারী ইব্রাহিম খান  বলেন, বেতন পেলে হয়তো আমাদের পরিবারেও আজ ঈদের আনন্দ থাকত। কিন্তু নয় মাস যাবৎ বেতন নেই। তাই আমাদের কোনো ঈদও নেই। আমার দুটো সন্তান আছে। তারা এখোনও  অভাব যে কতোটা কঠিন তা তারা এখোনও বোঝে না তাই নতুন পোশাকের আবদার করে তারা। তাদের এটা ওটা বুঝিয়ে শান্ত করি, আর মনে মনে শুধুই কষ্ট পাই। তিনি বলেন, আসলে আমরা এখন তিন বেলা খাবারের ব্যবস্থাই করতে পারি না।  ঈদ উদযাপনের কথা ভাবতেও কষ্ট হয়।  একই অবস্থার কথা উল্লেখ করে আরেক কর্মচারী জহিরুল ইসলাম বলেন, এক সময় পরিবারের সবাই মোটামুটি আয় করতাম। বেশ ভালোই দিন যাচ্ছিল। কিন্তু এখন সে অবস্থায় নেই। তিনি বলেন, লোক লজ্জার কারণে কারো নিকট সাহায্যও চাইতে পারি না। এসব কারণে প্রতিবছর ঈদ আমাদের জন্য আনন্দের উপলক্ষ হয়ে আসলেও এবারের ঈদে কোনো আনন্দ নেই। কিছুটা আক্ষেপ করে এই কর্মচারী বলেন, আসলে ঈদ কেবল ধনীদের জন্যই আনন্দের উপলক্ষ, গরীবের জন্য নয়। বরং ঈদের দিনে অভাবটা আরো বেশি উপলব্ধি হয়। তাই অন্যান্য বছরগুলোয় ঈদ আনন্দের বারতা নিয়ে আসলেও এবার এসেছে বিষাদ হয়ে।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়