ডা. মো. ছায়েদুল হক : বর্ষাকাল এলেই অন্য কোনো অসুখ হোক বা না হোক, চোখের অসুখ হবেই। সবচেয়ে বেশি দেখা দেয় কনজাংকটিভাইটিস নামক রোগটি। এ রোগটি ছোঁয়াচে হওয়ায় দ্রুত অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। রোগের লক্ষণগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-চোখের নিচের অংশ লাল হয়ে যায়, চোখে ব্যথা করে।
এ রোগের আরও লক্ষণগুলো হলো-এ অসুখ প্রথমে এক চোখে হয়। পরে অন্য চোখে ছড়িয়ে পড়ে। তবে প্রচলিত আছে, কনজাংকটিভাইটিস রোগটি আক্রান্ত ব্যক্তির কাছাকাছি থাকার ফলে হয়। এ রোগের ভাইরাস বাতাসে থাকে এবং এ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির চারপাশে যারা থাকেন, তারাও এ অসুখে আক্রান্ত হন। চোখ থেকে ক্রমে পানি পড়তে থাকে। চোখের নিচের অংশ ফুলে যায় এবং লাল হয়ে যায়। চোখ জ্বলে এবং চুলকাতে থাকে। আলোয় চোখে কষ্ট হয়।
কনজাংকটিভাইটিস হলে করণীয় : কিছুক্ষণ পর পর চোখে ঠাণ্ডা পানির ঝাপটা দিতে হবে। তাতে উপকার পাওয়া যাবে। পানির ঝাপটা দেওয়ার আগে হাত ভালো করে সাবান দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে। ভেজা চোখ টিস্যু পেপার দিয়ে মুছে নিতে হবে এবং টিস্যু পেপারটি অবশ্যই ময়লার ঝুড়িতে ফেলে দিতে হবে। নইলে ব্যবহার করা টিস্যু পেপার থেকে সংক্রমণ ঘটতে পারে। চশমার ব্যবহার করতে হবে। এতে চোখ ভুলবশত হাত লেগে যাওয়া এবং ধুলো ধোঁয়া থেকে বাঁচবে।
চিকিৎসকের পরামর্শে অ্যান্টিবায়োটিক ড্রপ চোখে দিতে হবে। নিজের ব্যবহার করা প্রসাধনসামগ্রী অন্য কাউকে ব্যবহার করতে দেওয়া যাবে না বা অন্যের ব্যবহৃত প্রসাধনসামগ্রী নিজের ব্যবহার করা যাবে না। চোখ ঘষে চুলকানো যাবে না। অন্য কারো আই ড্রপ ব্যবহার করা উচিত হবে না। এতে ফের কনজাংকটিভাইটিস হতে পারে। নিজের ব্যক্তিগত সামগ্রী অন্যদের সঙ্গে ভাগ করে ব্যবহার করা যাবে না। সম্ভব হলে আলাদা বাথরুম ব্যবহার করুন। এতে রোগ থেকে যেমন মুক্তি পাওয়া যাবে, তেমনি অন্যরাও এ রোগ থেকে দূরে থাকবেন।
লেখক : চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ ও সার্জন প্রাক্তন সহযোগী অধ্যাপক, জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতাল
চেম্বার : আইডিয়াল আই কেয়ার সেন্টার