সৈয়দ ফায়েজ আহমেদ : বাংলাদেশে বাম রাজনীতি করা নেতাকর্মীদের একটা বড় সমস্যা ধর্মীয় রাজনীতি এবং এই রাজনীতির প্রধানতম ভিকটিম তথা ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের পার্থক্য করতে না পারা। রাজনীতির মূল আলাপ হচ্ছে জনতার অধিকার প্রতিষ্ঠা। জনতা যাতে ভাত-কাপড় পায় সেটার ব্যাপারে শাসকদের বাধ্য করা আর শাসক ব্যর্থ হলে নিজেরাই ক্ষমতা কেড়ে নিয়ে সেটা নিশ্চিত করা। কথা হচ্ছে কেবল ভাত-কাপড়ের বাইরে মানুষের স্পিরিচুয়াল নিড আছে। ধর্ম তার সেই নিড মেটায়। শিক্ষা তার সেই নিড মেটায়। ফলে ধর্ম পালনের অধিকার প্রতিষ্ঠা করাও রাজনীতিকের কাজ।
কিন্তু ভাত-কাপড় আর ইনসাফের সংগ্রাম না করে কেবল ধর্ম পালনের অধিকার প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টাটা সন্দেহজনক। আর এর মাধ্যমে জনতার মধ্যে বিভেদ করা রীতিমতো অপরাধ। এর পুরো ফায়দা পায় অত্যাচারী শাসক। আব্রাহামিক ধর্মগুলোতে পরকালের বিশ্বাস খুব জরুরি। কিন্তু যুগে যুগে ধর্মকে পুঁজি করে রাজনীতি করা অনেক ব্যক্তি আর গোষ্ঠী এই বিশ্বাসকে ব্যবহার করে ইহকালের বেইনসাফীকে উপেক্ষা করেছে। অনেকের বেলায় প্রমাণিত হয়েছে, এই রাজনীতি আসলে মানুষের ভাত-কাপড় আর ইনসাফ কায়েমের বিরুদ্ধ শক্তি।
ফলে এই কথা সুস্পষ্ট যে, যারা ভাত-কাপড়, ইনসাফ আর সাম্য বাদ দিয়ে কেবল ধর্মের ভিত্তিতে রাজনীতি করে তারা গণশত্রু। তারা ধর্মপ্রাণ গণমানুষের বিশ্বাসকে চতুরতার সঙ্গে ব্যবহার করে জনতার ক্ষতি করে। অন্যদিকে যারা ভাত-কাপড়-ইনসাফের রাজনীতির সঙ্গে মানুষের স্পিরিচুয়াল রাজনীতির অধিকারকে গুরুত্বপূর্ণভাবে না তাদের রাজনীতি অসম্পূর্ণ, ত্রুটিযুক্ত। জনতা যে শঠ ধর্মীয় রাজনীতির শিকার হয় তার জন্য এই অসম্পূর্ণ বোধের অনেকটাই দায় আছে। ফেসবুক থেকে