তানভীর শুভ : পরিচিত অনেকেই আইসিইউতে সিটের জন্য ফোন দিচ্ছেন, তাদের জন্য কিছুই করতে পারছি না। স্বল্পসংখ্যক আইসিইউ বেড সবসময় আনস্ট্যাবল কোভিড রোগী দ্বারা পূর্ণ থাকে। রোগী মারা গেলে কিংবা কনডিশান ইম্প্রুভ হলে তবেই তাকে ওয়ার্ডে পাঠিয়ে আইসিইউ বেডে নতুন রোগী উঠানো হয়। একজন খারাপ রোগী আইসিইউ না পেয়ে মারা গেলে আমরাও বিষণœ হই। মৃত ব্যক্তির পরিবারের কষ্ট আমাদেরও ছুঁয়ে যায়। দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে এসব সীমাবদ্ধতার কথা পর্দার আড়ালেই থেকে যায়, তাই আইসিইউ সিট না পেয়ে রোগী যখন মারা যায় তার পুরো দায়ভার জনগণ ডাক্তারদের কাঁধেই চাপিয়ে দেন। করোনাতে আক্রান্ত বাবা হারানো সেই ৪ সন্তান ও তাদের মা ভালো আছেন। আড়াই বছর বয়সী ছোট বাচ্চাটার করোনা টেস্ট নেগেটিভ এসেছে। বাচ্চাটাকে তার নানা এসে বাড়িতে নিয়ে গেছেন। ইতোমধ্যে ফেসবুকে পোস্ট দেখে আমার অনেক পরিচিত ডাক্তার সহকর্মী ছাড়াও অপিরিচিত অনেকেই এই পরিবারটিকে সাহায্য করার ইচ্ছা ব্যক্ত করেছেন। এই পরিবারের চিকিৎসার সঙ্গে সরাসরি জড়িত একজন চিকিৎসক সম্প্রতি বাচ্চাদের মায়ের হাতে পৌঁছে দিয়েছেন আর্থিক সাহায্য।
মানবিক গুণাবলী না থাকলে কখনো চিকিৎসক হওয়া সম্ভব নয়। বিভিন্ন মেডিকেল কলেজের স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানে দান করা রক্তের অর্ধেকই আসে মানবিক গুণাবলীসম্পন্ন এসব মেডিকেল স্টুডেন্ট কিংবা ডাক্তারের কাছ থেকে। আইসিইউতে সিট না পাওয়া এক রোগীর আত্মীয় সারারাত ফোনে যোগাযোগ রাখছিলেন। ষাটোর্ধ্ব সেই রোগীর অ্যাটেন্ডেন্স তার বৃদ্ধ স্ত্রী। অ্যাটেন্ডেন্স মহিলা ইতোমধ্যে দুবার ফেইন্ট হয়ে গিয়েছেন। সঙ্গে অন্য কেউ নেই। ফোনের ওপাশে থাকা চিন্তিত আত্মীয়কে আমি হাসপাতালে আসতে বলায় তিনি মনে হয় নাখোশ হলেন, সকালে আসবেন বলে পাশ কাটালেন। সকালে রোগী মারা যাওয়ার পর আর এসে কী লাভ? প্রশ্নটা আর করা হলো না তাকে। যা হোক ওয়ার্ডে থাকা চিকিৎসক আর নার্সদের অনেক দৌড়াদৌড়ির পর ভোরে আইসিইউতে একটা বেড ম্যানেজ হলো। ফোনের ওপাশে থাকা আত্মীয় আমাকে মেসেজে থ্যাঙ্কস জানালেন, প্রতিউত্তরে আমি তাকে ধন্যবাদ জানাতে পারলাম না। ‘ঊহফঁৎধহপব রং ড়হব ড়ভ ঃযব সড়ংঃ ফরভভরপঁষঃ ফরংরপরঢ়ষরহবং, নঁঃ রঃ রং ঃড় যরস যিড় বহফঁৎবং ঃযধঃ, ঃযব ভরহধষ ারপঃড়ৎু পড়সবং’- ইঁফফযধ. ফেসবুক থেকে