ডেস্ক রিপোর্ট : [২] করোনায় ভাইরাসটির সংক্রমণ এড়াতে বিশ্বের সিংহভাগ দেশে জনসমাগম ও চলাফেরায় বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। কোনো কোনো দেশে জারি হয় জরুরি অবস্থা, কারফিউ।
[৩] কিন্তু মে মাসের শুরু থেকে অর্থনৈতিক স্থবিরতা কাটিয়ে জনজীবন সচল রাখতে বিভিন্ন দেশ লক ডাউন শিথিল করতে শুরু করে। এতে অনেক দেশেই নতুন করে করোনার বিস্ফোরণ ঘটেছে।
[৪] ভারতে করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে গত ২৫ মার্চ থেকে শুরু হওয়া লকডাউন কয়েক দফায় বাড়ানো হলেও চলতি মাসের শুরুতে কিছু কিছু শর্ত শিথিল করে। এরপর পরই দেশটিতে হু হু করে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড ৪ হাজার ২১৩ জন আক্রান্ত হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৯৭ জনের। লকডাউন শিথিলের পর দেশটিতে এটি এখন পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ সংখ্যক আক্রান্ত।
[৫] করোনা ভাইরাস জনিত মহামারির কারণে প্রায় ২ মাস বন্ধ থাকার গত সপ্তাহে থেকে বেশ কিছু অঞ্চলের মসজিদ, বাজার ও দোকানপাট খুলে দেয় ইরান। চলতি সপ্তাহের শুরু থেকেই দেশটির ওইসব অঞ্চলে ফের দ্রুতগতিতে প্রাণঘাতি ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে। সোমবার ইরানে ১দিনে আক্রান্ত হয়েছে ১ হাজার ৬৮৩ জন।
[৬] পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় জার্মানিতে মে মাসের শুরুতে লকডাউন শিথিল করা হয়।দোকানপাট-বাজার খোলার ক্ষেত্রে প্রাথমিক বাধানিষেধ তুলে নেয়া হয়। কিন্তু শিথিলের কয়েকদিনের মধ্যেই দেখা যায়, সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে।
[৭]চীনের উহান শহরেও নতুন করে সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এপ্রিলের মাঝমাঝিতে আক্রান্তের সংখ্যা শূন্যতে নেমে আসায় সেখানে লকডাউন তুলে নিয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেয়া হয়। আক্রান্তের সংখ্যা শূন্যের কোঠায় নেমে আসা চীনে এরই মধ্যে নতুন করে গত ২৪ ঘণ্টায় ২৭ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে।
[৮] গত শনিবার থেকে লকডাউন থেকে সরে আসে পাকিস্তান। এর ফলাফল যে ভালো হয়নি, তার প্রমাণ পাওয়া যায় গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে দেশটিতে ৬০৭ জন আক্রান্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে।
[৯] লকডাউনের শর্ত শিথিল করে বিপর্যয়ে পড়া দেশগুলো তালিকায় বাংলাদেশও আছে। জনজীবন সচল রাখতে গত ১০ মে সীমিত পরিসরে দোকানপাট ও শপিংমল খুলে দেয়ার পর দেশেও বেড়েছে আক্রান্তের সংখ্যা।
[১০] লকডাউন প্রত্যাহারে সম্ভাব্য বিপর্যয়ের বিষয়ে আগেই সতর্ক করেছিলেন বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান তেদ্রোস অ্যাডানোম গেব্রেয়াসুস। গত শুক্রবার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, কয়েকটি দেশ লকডাউনে শৈথিল্য দেখাচ্ছে ও ঘরে থাকার নির্দেশও শিথিল করতে শুরু করেছে। আমরা সতর্ক করে বলছি, এখনই লকডাউন শিথিল করা যাবে না। লকডাউন তুলে নিলে খারাপ পরিণতি ভোগ করতে হবে। একই সঙ্গে হাত ধোয়া, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নিয়মকানুনও শিথিল করা যাবে না।
[১১] লকডাউন শিথিল বা একেবারে তুলে নেয়ার আগে কিছু শর্ত পূরণের তাগিদও দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এগুলো হল, রোগের সংক্রমণ পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা, প্রত্যেক রোগীকে পরীক্ষা, আইসোলেশন, চিকিৎসা এবং তার সংস্পর্শে আসা প্রত্যেককে শনাক্ত করতে সক্ষম হওয়া। পূর্বপশ্চিম, বাংলা ট্রিবিউন
আপনার মতামত লিখুন :