আজহারুল হক, ময়মনসিংহ প্রতিনিধি : [২] ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার চরআলগী ইউনিয়নের চরমছলন্দ মীরাপাড়া গ্রামের শতবছরের পুরোনো একটি রাস্তা প্রভাবশালী একটি পরিবার ইটের দেয়াল তুলে সম্পন্ন ঘিরে দিয়েছে। ওই গ্রামের শতাধিক মানুষের চলাচলের এটিই ছিল একমাত্র রাস্তা।
[৩] রাস্তাটিতে ইটের দেয়াল তুলে ঘিরে দেওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে তাঁরা । ইটের দেয়াল টপকে চলাচল করা ছাড়া আর কোন পথ নেই তাঁদের। মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেনের পরিবারসহ সাত পরিবারের শতাধিক মানুষ এই পথ দিয়েই শত বছর ধরে চলাচল করে আসছেন।
[৪] হঠাৎ করে একমাত্র চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ায় কার্যত গৃহবন্ধি হয়ে পড়েছে পরিবারগুলো।
[৫] সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, চরমছলন্দ মীরা পাড়া গ্রামের রৌহা খেয়াঘাট সড়ক থেকে মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন কামালের বাড়ি পর্যন্ত মাত্র ৩০ ফুট দীর্ঘ ও ৮/৯ ফুট প্রস্থের ছোট একটি রাস্তা আছে । গত দেড়শত বছর ধরে এই রাস্তাটিই ৭টি পরিবারের শতাধিক সদস্যের বাড়িতে ঢোকার একমাত্র পথ। রাস্তার পাশের জমিটি ছিল একই এলাকার জনৈক চান্দু মিয়ার। গেল দশ বছর আগে চান্দুমিয়ার কাছ থেকে রাস্তার পাশের ১০ শতাংশ জমিটি ক্রয় করেন এলাকার প্রভাবশালী কাদির মিয়া ।
[৬] বর্তমানে লকডাউন পরিস্থিতিতে হঠাৎ করেই শত বছরের পুরোনো এই রাস্তাটি নিজেদের দাবী করে কাদির মিয়া (৬০) ও তার ছেলে-ভাতিজারা । স্থানীয় জনপ্রতিনিধি লকডাউনের উদ্ভুত পরিস্থিতিতে ব্যস্ত থাকার সুযোগে গত সপ্তাহে কাদির মিয়া ও তার ছেলে শরীফ মিয়া (৩০), আরিফ (২৬), কাজল (৩২) ও তার ভাতিজা ইমরান হোসেন ইন্তাকে (২৫) সঙ্গে নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেনসহ ৭টি পরিবারের বাড়ি বের হওয়ার একমাত্র রাস্তায় তিনফুট ইটের দেওয়াল তুলে পথটি বন্ধ করে দিয়েছেন।
[৭] মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন কাজল ও তার পরিবারের লোকজন বাঁধা দিতে গেলে কাদির মিয়া ও তার ছেলেরা সশস্ত্র অবস্থায় এসে মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন কামালসহ তার পরিবারের লোকজনকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে হেনস্থা করে।
[৮] মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন কামাল (৮০) বলেন, তারা হুমকি দিচ্ছে রাস্তা নিয়ে কথা বললে তারা আমাদেরকে হত্যা করবে। বাড়ি থেকে বের হতে হলে মই দিয়ে প্রাচীর টপকাতে হয়। বাড়ির বয়স্ক ও শিশুদের জন্য বিষয়টি খুবই ঝুঁিকপূর্ন এবং অমানবিক।
প্রবীন ব্যক্তি মোছাঃ জামিনা (৯০) বলেন, প্রায় দেড়শত বছর ধরে এ বাড়ির লোকজন এ রাস্তা ব্যবহার করে আসছে। সেই রাস্তায় ইটের দেওয়াল তৈরী করায় গত ৮/৯ দিন ধরে আমরা বাড়ির বাইরে যেতে পারছি না। দুয়েক দিনের মধ্যে আমাদের জমির ধান কেটে বাড়ি তুলতে হবে। এখন এই দেয়ালের কারনে বহুপথ ঘুরে বাড়িতে ধান আনতে হবে।
[৯] জানতে চাইলে অভিযুক্ত কাদির মিয়ার ছেলে মোঃ শরীফ মিয়া বলেন, আমাদের নিজের জায়গায় আমরা সীমানা প্রাচীর নির্মান করেছি। এই সীমানা প্রাচীরের ভেতর হাঁসের খামার করা হবে ।
[১০] গফরগাঁও থানার ওসি অনুকুল সরকার বলেন, এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে। সম্পাদনা: জেরিন আহমেদ