রাজু আলাউদ্দিন : [২] কোভিড নাইনটিনের সংক্রমণের লাগাম টানতে প্রতিষেধক আবিষ্কারের দৌড়ে কোটি কোটি ডলার বিনিয়োগ করছে বিভিন্ন দেশ, দাতব্য সংস্থা এবং ওষুধ কোম্পানিগুলো। সফলতার কোনো নিশ্চয়তা না থাকলেও অনেকেই বিলিয়ন ডলার ব্যয় করছে ভ্যাকসিন আবিষ্কারের গবেষণায়। বিজ্ঞানীরা বলছেন, পৃথিবী এমন একটা মারাত্মক সংকটের মধ্যে আছে যে, এই ভাইরাসের সংক্রমণ রোধ করতে যেকোনো ঝুঁকি নিতেই এখন বিশ্ব প্রস্তুত।
[৩] চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া কোভিড নাইনটিনের তাণ্ডবে কাবু হয়ে গেছে সারা বিশ্ব। বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশেই হানা দিয়েছে প্রাণঘাতি এ ভাইরাস। এ ধরনের শ্বাসকষ্টজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব পৃথিবীতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকেই এসেছে কয়েকবার। কিন্তু আবিষ্কার হয়নি কার্যকর কোনো প্রতিষেধক কিংবা ওষুধ। এবারেও তাই মারাত্মক এই ভাইরাসের সংক্রমণের লাগাম কোনোভাবেই টানতে পারছে না উন্নত চিকিৎসাবিজ্ঞান। এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়ে গেছে ৩০ লাখের বেশি মানুষ। প্রাণ গেছে ২ লাখের ওপরে। ডিসেম্বরে সংক্রমণের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত এ ভাইরাসের ভ্যাকসিন আবিষ্কারে উঠে পড়ে লেগেছে অন্তত ৩০ টি প্রতিষ্ঠান। অথচ ভ্যাকসিন তৈরি হয়ে অনুমোদন এবং বাজারে আসতে সময় লাগে ১২ থেকে ১৮ মাস।
[৪] ওষুধ কোম্পানি, সরকার আর বিনিয়োগকারীরা ঝুঁকির মধ্যেই ভ্যাকসিন আবিষ্কারের জন্য বিনিয়োগ করছে কোটি কোটি ডলার। তবে ভ্যাকসিন আবিষ্কার করাই মূল লক্ষ্য নয়, সেইসাথে করতে হবে পুরো বিশ্বে এর সুষম বন্টন। ভ্যাকসিন তৈরির পর প্রথমেই মুনাফা ছাড়া সেটি বাজারে ছেড়ে দেবে জনসন এন্ড জনসন এবং গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন। যুক্তরাষ্ট্রে সোয়াইন ফ্লু মহামারী নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখা বিজ্ঞানী রিচার্ড হ্যাচেট বলছেন, সফলভাবে ভ্যাকসিন তৈরির আগেই নিশ্চিত করতে হবে লাখ লাখ ভ্যাকসিন তৈরি এবং সরবরাহ।
[৫] হ্যাচেটের নেতৃত্বে পরিচালিত ভ্যাকসিন তৈরি সংস্থা এখন পর্যন্ত অনুদান পেয়েছে ৯১ কোটি ৫০ লাখ ডলার। যা দিয়ে অন্তত ৩ টি করোনার প্রতিষেধক তৈরি করা হবে। এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের বায়োমেডিকেল এডভান্সড রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্ট অথোরিটি এরইমধ্যে ৫শ' কোটি ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে। যা দিয়ে তৈরি হবে ৫ টি ভ্যাকসিন। সানোফি পোকামাকড়ের কোষ দিয়ে ভ্যাকসিন তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে। সেপ্টেম্বরে শুরু হতে পারে এসব ভ্যাকসিনের মানুষে প্রয়োগ।
[৬] চীনা কোম্পানি সিনোভাক ব্যয় করছে ৮৪ লাখ ডলার। এদিকে, করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন আবিষ্কারে ৮শ' কোটি ডলারের তহবিল তৈরি করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এতে চীন ও যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া অংশ নিয়েছে ইউরোপ, এশিয়া, আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্য। তবে সারাবিশ্বে করোনার ভ্যাকসিন তৈরির তোড়জোড় চললেও কোনটি কার্যকর হবে সে বিষয়টি এখনো অনিশ্চিত। সময় টিভি