শিরোনাম
◈ রোববার থেকে আবার গাউন পরতে হবে আইনজীবীদের ◈ সাংবাদিকদের বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রবেশে বাধা নেই: ডেপুটি গভর্নর ◈ জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে কেউ যেন বৈষম্যের শিকার না হন: রাষ্ট্রপতি ◈ দেশের জিডিপির পূর্বাভাস কমালো জাতিসংঘ, চিন্তা মূল্যস্ফীতি নিয়ে ◈ আমি ইন্ডিয়া জোটেই আছি: মমতা  ◈ হিজবুল্লাহ’র হামলায় ইসরায়েলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে: গ্যালান্ট ◈ কোন দেশে সেন্ট্রাল ব্যাংকে অবাধে সাংবাদিকরা ঢুকতে পারে, প্রশ্ন ওবায়দুল কাদেরের (ভিডিও) ◈ ভারতে চলন্ত বাসে আগুন, ৮ জনের প্রাণহানি ◈ তাপপ্রবাহ কমে বৃষ্টি ও ৮০ কিমি বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস ◈ যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন ৩০ ব্যাংকের এমডি, সঙ্গে ডেপুটি গভর্নর

প্রকাশিত : ০৯ এপ্রিল, ২০২০, ০৬:০০ সকাল
আপডেট : ০৯ এপ্রিল, ২০২০, ০৬:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

প্রান্তিক কৃষকের জন্য কে আছেন?

মঞ্জুরুল আলম পান্না : করোনার ঘাত-অভিঘাতে মানুষের জীবনমান আর অর্থনীতির প্রতিটি খাত যেমন লন্ডভন্ড, নিশ্চয় কৃষিও তার বাইরে নয়। উন্নত কৃষি ব্যবস্থার প্রতিটি দেশ তাই কৃষির প্রতিটি খাতের দিকে এরই মধ্যে নজর দেওয়া শুরু করেছে বিশেষ গুরুত্ব সহকারে। কৃষি নির্ভর বাংলাদেশে এখাতে এখনো পর্যন্ত সুপরিকল্পিত কোনো ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি বলে উদ্বেগে রয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। করোনাকালীন দুর্যোগে প্রধানমন্ত্রীর প্রায় ৭৩ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা বরাদ্দের ঘোষণাতেও এ সম্পর্কে বিশেষ কিছু দেখা যায়নি। ক্ষুদ্র ও অতিক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের তালিকায় হয়তো পোল্টি এবং ডেইরি খাদ্য উৎপাদনকারীরাও প্রণোদনার সুবিধা কিছুটা হলেও পাবেন, কিন্তু একেবারে প্রান্তিক চাষিদের জন্য কোনো তহবিলের কথা শোনা যায়নি এখনও।
আমাদের চালের ৬০ থেকে ৬৫ ভাগ আসে বোরো থেকে। দেশে এখন বোরো ধানের ভরা মৌসুম। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে শুরু হবে ধান কাটার কাজ। হাওরে ধান কাটার সময় কৃষিশ্রমিকরা আসেন দেশের নানা প্রান্ত থেকে। শুধু হাওরেই নয়, কৃষিশ্রমিকরা শ্রম বিক্রি করেন এক অঞ্চল থেকে অন্য অঞ্চলে গিয়ে। দেশজুড়ে সব ধরনের পরিবহন বন্ধ থাকায় তারা আটকে আছেন নিজ নিজ এলাকায়। তাছাড়া করোনাভাইরাসের ভয়ে তাদের কাজও মিলছে না সহজে। সংকট নিরসনে কৃষি বিভাগের নেই সমন্তিত উদ্যোগ। তবে করোনা সংক্রমনের ভয় উপেক্ষা করেই কোন ধরণের সতর্কতা অবলম্বন ছাড়াই চিন্তিত কষকদের অনেকে নিরলস কাজ করে চলেছেন মাঠে মাঠে।
জানা গেছে. বাগেরহাটে, রাজশাহী ময়মনসিংহসহ বিভিন্ন অঞ্চলে চাষাবাদের জন্য একসাথে কাজ করতে চাইছে না শ্রমিকরা। প্রান্তিক কৃষকদের কার্যক্রম তদারকিতে মাঠে নেই স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তারা। করোনা আতঙ্কে চাষাবাদে স্থানীয় এবং শ্রমিকদের আগ্রহ কমে যাওয়ায় ফসল উৎপাদনে সৃষ্টি হচ্ছে নানা প্রতিবন্ধকতা। শ্রমিক সংকটে বোরোর ভরা মৌসুমে মাঠের ফসল নষ্ট হতে পারে বলে আশংকা চাষীদের। যদিও কোন কোন এলাকায় কৃষকদের কথা বিবেচনায় নিয়ে খোলা রাখা হচ্ছে সার ও কীটনাশকের দোকান. তবে তা সব এলাকায় নয়। স্থানীয় কৃষকদের কণ্ঠে বিষন্নতার সুর। বলছেন, ‘আর মাত্র এক মাসের মধ্যেই বোরো ধান ঘরে উঠবে। এই সময় ভয়ে ঘরে বসে থাকাতো সম্ভব নয়। ঘরে ধান তুলতে না পারলে সারাবছর ছেলেমেয়েদের নিয়ে সংসার চলবে কী করে?’
করোনাভাইরাসের ভয়ে গম ও পেঁয়াজ ক্ষেতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কিছু এলাকায় কৃষক ও কৃষি শ্রমিকরা কাজ করলেও তাদের সবার হাতে থাকছে না গ্লাভস কিংবা মুখে মাস্ক। তাদের অভিযোগ, এখনও তাদের সাহায্যের জন্য কেউ এগিয়ে আসেনি। স্থানীয় কৃষি অফিস থেকে কোনও দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়নি। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কৃষিবিদ ড. আবদুল মুঈদ গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘জরুরি পণ্য হিসেবে সার, বীজ, কীটনাশক সরবরাহের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ফসল রোপন ও কর্তনে সাশ্রয়ী এবং ভর্তুকি মূল্যে খামারযন্ত্র ব্যবহারের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এতে শ্রমিক সংকট মোকাবেলা সহজ হবে।’
তার এই কথার বাস্তব প্রতিফলন জোড়ালোভাবে দেখা যায়নি এখনও। ভর্তুকি মূল্যে খামার যন্ত্র পৌঁছে দিতে বিলম্ব হলে শ্রমিক যাতে নির্ভয়ে ফসল কাটতে যেতে পারেন, সেজন্য স্বাস্থসম্মতভাবে তাদেরকে মাঠে নেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। দেশ আরও দীর্ঘদিন লকডাউনের আওতায় থাকলে উৎপাদিত পণ্য পরিবহনে বিশেষ ব্যবস্থার পরিকল্পনা জরুরি। কৃষক যেন তার ফসল ঠিকভাবে ঘরে তুলতে পারেন এবং একই সাথে উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য দাম পান, সেই ব্যবস্থা এখন থেকেই নিতে হবে। ধান তোলার পর কৃষক যাতে সবটাই একবারে বিক্রি না করেন, তার জন্য সহজ শর্তে বা বিনাসুদে ঋণের ব্যবস্থা করতে হবে। এর মাধ্যমে কৃষক ধান সংরক্ষণ করে ধীরে ধীরে বিক্রিতে উৎসাহিত হবেন। এতে পরবর্তী বছরে চাষাবাদে তারা মনযোগী হবেন, ধানের ন্যায্য দামটাও পাবেন। প্রয়োজনে আলাদাভাবে তাদের জন্য প্রণোদনার ঘোষণা দিতে হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়