সাঈদ তারেক: শুনতে হেব্বি লাগলেও ‘লক ডাউন’ ‘শাটডাউন’ আমাদের দেশের জন্য কোন কার্যকর পদ্ধতি নয়। একদিন দুদিনের জন্য ঠিক আছে, কিন্তু এক সপ্তাহ পার হলেই দেখা যাবে হাহাকার শুরু হয়ে গেছে। শিবচরে বলা হয়েছে শুধু মুদি আর ঔষধের দোকান ছাড়া সবকিছু বন্ধ থাকবে। কয়দিনের জন্য এ লকডাউন, বলা হয় নাই। তবে সবকিছুর মধ্যে অফিস, আদালত, মিল-কারখানা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, যানবাহনও পড়ে। মুদির দোকানের কথাই বলি। বেকারি বন্ধ থাকলে রুটি বিস্কুটের সাপ্লাই আসবে না। সাপ্লাই ব্যবস্থা বন্ধ থাকলে পোলট্রি থেকে ডিম আসবে না। পাইকারী ব্যবসার অফিস না খুললে খুচরা দোকানদাররা মাল পাবে না। যানবাহন যদি না চলে ঢাকা বা অন্যত্র থেকে নিত্য প্রয়োজনীয় কোনো জিনিসের সরবরাহ আসবে না।
ফলাফল- চালডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দুষ্প্রাপ্যতা। মানুষ খাবে কী? শুরু হবে আর এক ক্রাইসিস। যে সব দেশে লকডাউন, শাটডাউনে যেতে হয়েছে সেখানে পরিস্থিতি আমাদের চাইতে দশগুণ বেশি খারাপ। ঘরে ঘরে আক্রান্ত। তার ওপর ওদের সাপ্লাই এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অনেক উন্নত এবং মেথডিকেল। আমাদের দেশে কাল পর্যন্ত আক্রান্ত মাত্র ১৭ জন। তাও তাদের যথাযথ চিকিৎসার আওতায় আনা হয়েছে। হাজার পাঁচেক আছে কোয়ারিন্টাইনে। কোয়ারিন্টাইনে থাকা মানেই এরা রোগী নয়। সন্দেহভাজন। অনেকে সাধারণ জ্বর কাশি নিয়েও ভর্তি আছেন। ১৪ দিনের মধ্যে কারও দেহে ভাইরাসের অস্তিত্ব না পাওয়া গেলে বাড়ি ফিরে যাবে। কাজেই এটাও তেমন কোনো উদ্বেগের বিষয় নয়। ঝামেলা বেঁধেছে গত তিন মাসে আক্রান্ত দেশগুলো থেকে কয়েক হাজার প্রবাসী দেশে এসে সাধারণের সাথে মিশে যাওয়ায়।
প্রধানত তারাই সন্দেহভাজন। তবে সবাই নয়। যারা দুই তিন মাস আগে এসেছেন অথচ রোগাক্রান্ত হননি তারা কোনো হুমকি নয়। যারা সম্প্রতি এসেছেন এবং এখনো আসছেন তাদের নির্দিষ্ট জায়গায় নিয়ে গিয়ে কিছুদিন পর্যবেক্ষণে রাখলেই পরিস্থিতি কিন্তু নিয়ন্ত্রণে থাকে। শিবচর বা যেসব এলাকায় বিদেশ ফেরতদের সংখ্যা বেশি ‘লকডাউনে’র মাধ্যমে তাদের ঘরে আটকে রাখলে বরং ঝুঁকি বেশি। কারও দেহে ভাইরাস থাকলে সে গোটা পরিবারকে সংক্রমতি করে ফেলবে। যেটা দরকার- ফিরে আসা সকল প্রবাসীকেই ভিন্ন জায়গায় কোয়ারিন্টাইনে নিয়ে যাওয়া। বুঝিয়ে, কেউ স্বেচ্ছায় যেতে না চাইলে জোর করে ধরে। আমার বিশ্বাস, আমরা এখনো সেফ আছি। সরকারি যে ব্যবস্থাবলী, সীমিত সাধ্যের মধ্যে যথেষ্ট। ভুল কিছু আগেই হয়ে গেছে। এখনো সময় আছে, সেগুলো শুধরে নিয়ে প্রতিরোধ এবং প্রতিকারে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিলে এ যাত্রা আমরা বেঁচে যাবো। পরম করুণাময় নিশ্চয়ই আমাদের রক্ষা করবেন। ফেসবুক থেকে