তাপসী রাবেয়া : [২] সেল্ফ কোয়ারেন্টাইনের শর্ত মানছেন না বিদেশ ফেরত অনেকেই। সতর্কতার জন্য ঝিনাইদহে ‘হোম কোয়ারেন্টিনে’ রাখা ব্যক্তিদের বেশির ভাগই বাইরে ঘোরাঘুরি করছেন। কেউ কেউ নিজের ব্যবসার কাজও করছেন। তবে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও সিভিল সার্জন জানিয়েছেন, কোয়ারেন্টিনে (রোগ সংক্রমণের শঙ্কায় পৃথক রাখা) থাকা ব্যক্তিদের বাইরে বের না হতে বলা হয়েছে।
[৩] জেলা সিভিল সার্জন সেলিনা বেগম বলেন, শনিবার পর্যন্ত ঝিনাইদহে ১৯ জনকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। তাদের সার্বক্ষণিক তদারকি করছে স্বাস্থ্য বিভাগ। নতুন করে আর কাউকে কোয়ারেন্টিনের আওতায় আনা হয়নি। যাদের হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে, তাদের মধ্যে জেলা সদরের ২ জন, কালীগঞ্জের ১২ জন ও মহেশপুরের ৫ জন।
[৪] কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা শামীমা শিরিন বলেন, কালীগঞ্জে আমেরিকা থেকে আসা এক নারী প্রথমে যে গ্রামে উঠেছিলেন, সেখান থেকে তিনি অন্যত্র চলে গেছেন। তবে ওই পরিবারের ১২ সদস্যকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে।
[৫] মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আনজুমান আরা বলেন, ভারত থেকে এক ব্যক্তি মহেশপুরে ফিরেছেন। ওই পরিবারের পাঁচ সদস্যকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। এর আগে ইতালি থেকে জেলা শহরে ফেরা দুজনকে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়। ১৪ দিন করে তাদের কোয়ারেন্টিনে রাখা হবে।
[৬] এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হোম কোয়ারেন্টিনে থাকা বেশির ভাগই নানা প্রয়োজনে বাড়ির বাইরে যাচ্ছেন। কালীগঞ্জের যে পরিবারকে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে, ওই পরিবারের গৃহকর্তাকে দোকানে বসে ব্যবসা করতে দেখা গেছে। এ ব্যাপারে ওই গৃহকর্তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ব্যবসা না করলে তিনি পরিবার নিয়ে কীভাবে চলবেন। তবে হাসপাতাল থেকে তাদের সার্বক্ষণিক খোঁজখবর করা হচ্ছে। ঘন ঘন হাত ধুতে এবং মুখে মাস্ক ব্যবহার করতে বলা হয়েছে। খুব প্রয়োজন না হলে বাড়ির বাইরে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।
[৭] কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা শামীমা শিরিন বলেন, কোয়ারেন্টিনে থাকা ব্যক্তিদের বিষয়ে খোঁজ রাখা হচ্ছে। সব সময় তাদের বাড়িতে রাখা সম্ভব হচ্ছে না। যে কারণে তাদের ভিড়ের মধ্যে না যাওয়ার জন্য বলা হয়েছে। মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আনজুমান আরা বলেন, যে পরিবারের পাঁচ সদস্যকে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে, তাদের বাড়ির বাইরে না যেতে বলা হয়েছে। তবে স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষে অসম্ভব তাদের আটকে রাখা।
[৮] বিদেশফেরত ও তাদের পরিবারের সদস্যদের হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হলেও ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নেয়া হয়নি কোনো সতর্কতামূলক ব্যবস্থা। হাঁচি-কাশি কিংবা জ্বর-ঠান্ডার রোগীদের জন্য নেই আলাদা ব্যবস্থা। এসব রোগীরা কোথায় চিকিৎসা নিবে তার জন্যও নেই হেল্প ডেস্ক। ডায়রিয়া বিভাগে শুধু তিনটা বেড রেখে আইসোলেন ইউনিট লিখে রাখা হয়েছে। চিকিৎসার কাজে নিয়োজিত ওয়ার্ডবয় থেকে শুরু করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পর্যন্ত নেই কোনো ব্যক্তিগত সুরক্ষা ব্যবস্থা। ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে সেবা নিতে আসা সাইফুল ইসলাম বলেন, হাসপাতালে বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ চিকিৎসা আসে। তারা যত্রতত্র হাঁচি-কাশি দিচ্ছে, কারও মুখেই মাস্ক নেই। এখান থেকে তো যে কারও মাধ্যমেই করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে। কারণ আমরা কেউ তো জানি না কার শরীরে এই ভাইরাস আছে। প্রথম আলো ও জাগো নিউজ
আপনার মতামত লিখুন :