আকতার বানু আলপনা : সূচি বলেছিলেন, মিয়ানমারে যা হচ্ছে তা তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। কিন্তু পরে সেটি আর তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয় থাকেনি। ফলে দশ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। করোনাভাইরাসের আক্রমণ চীনের অভ্যন্তরে শুরু হলেও এটি এখন গোটা ইউরোপসহ সারা পৃথিবীতে ছড়াচ্ছে। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ শুধু বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় ছিলো না। তাই পাকিস্তাীি হানাদার বাহিনীর আক্রমণ থেকে প্রাণ বাঁচাতে এ দেশের লাখ লাখ মানুষ পালিয়ে গিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছিলো। এ রকম অসংখ্য উদাহরণ দেওয়া যাবে। সুতরাং কোনো দেশে দাঙ্গা বা গৃহযুদ্ধ শুরু হলে সেটি শুধু সেই দেশেরই অভ্যন্তরীণ বিষয় থাকে না। সেটি ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের, বিশেষ করে সবচেয়ে নিকটবর্তী প্রতিবেশী দেশগুলোতে।
এমনিতেই ভারতের বহু মানুষ এ দেশে চাকরি করছে, ব্যবসা করছে। তার উপর সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার কারণে প্রাণ বাঁচাতে ভারতের প্রায় ১৭ কোটি ৭২ লাখ মুসলমান যে পালিয়ে আমাদের দেশে আসবে না তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। তাই জনাব ওবায়দুল কাদের সাহেব যতোই বলুন না কেন যে, ভারতে যা হচ্ছে সেটি তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়, একথা মেনে নিয়ে আমাদের নিশ্চিন্তে থাকার কোনো সুযোগ নেই। যেকোনো দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বা গৃহযুদ্ধ বাধার একটি বড় কারণ হলো সেদেশের রাজনৈতিক নেতৃত্বের দৃষ্টিভঙ্গি। মোদীর মতো একজন সাম্প্রদায়িক নেতার উগ্রবাদী দৃষ্টিভঙ্গীর কারণে ভারতে এমন ভয়াবহতা চলমান, যার প্রভাব হবে সুদূরপ্রসারী। অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধুর মতো অসাম্প্রদায়িক নেতার জন্মশতবর্ষপূর্তিতে মোদীর মতো একজন সাম্প্রদায়িক উগ্রবাদী মানুষের আগমন এ দেশের কারও ভালো লাগার কথা নয়। তবে তাকে উপেক্ষা করার মত রাজনৈতিক দৃঢ়তাও এখন আমাদের নেই। কেন নেই, সেটা বোধহয় বলার প্রয়োজন নেই। সুতরাং আপনি চান বা না চান, আপনার ভালো লাগুক বা না লাগুক, মোদী মহাশয় আসছেন! ফেসবুক থেকে