মুনশি জাকির হোনে : ইতিহাস চর্চা কেন অপরিহার্য সেটির জবাব Winston Churchill এর উক্তিতেই বিদ্যমান ‘The further backward you look, the further forward you can see.
৫০ এবং ৬০ দশকে একদল ধ্রুপদী রাজনৈতিক নেতৃত্ব এবং তাদের উপর বাঙালির হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ কিংবদন্তির নেতৃত্বের গুণে গাঙ্গেয় বদ্বীপের ভৌগোলিক সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত হয় ১৯৭১ সালে। তবে রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক সার্বভৌমত্ব যেন আলেয়াতে পরিণত হয় সেই সব ধ্রুপদী রাজনৈতিক নেতৃত্বকে ধ্বংসের মাধ্যমে। শিক্ষাকে যেকোনো জাতির মেরুদ- হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কিন্তু এই গাঙ্গেয় বদ্বীপের মানুষের জীবনে একটি সার্বজনীন শিক্ষানীতি তো দূরের কথা, উল্টো শিক্ষাঙ্গনকে কলুষিত করা হয়েছে প্রাক-পরিকল্পনাতে। ১৯৮২ সালে মজিদ খানের প্রস্তাবিত একটি দূষিত/ভেজাল শিক্ষানীতি বাতিলের দাবিতে গড়ে উঠা ছাত্র আন্দোলন, ১৯৮৩ সালে এসে নতুন মাত্রা ধারণ করে, ১৯৮৩ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, ইডেন কলেজের হাজার হাজার শিক্ষার্থী মিছিল নিয়ে সচিবালয়ের দিকে এগিয়ে যায়। তাদের দাবি ছিলো প্রস্তাবিত ভেজাল শিক্ষানীতি বাতিল করে একটি সার্বজনীন শিক্ষানীতি ঘোষণা করার। সেদিন সেই মিছিলে নির্বিচারে পুলিশ গুলি চালায়। সেখানে ১০ জনের লাশের পরিচয় মেলে। বাকিদের লাশ গুম করা হয় বলে অভিযোগ করা হয়।
আজকে বাংলাদেশের যতো সমস্যা তার মূলে রয়েছে জাতির মেরুদ- ভাঙার জন্য একটি বিকৃত শিক্ষা পদ্ধতি। আর এর মূলে রয়েছে একটি সার্বজনীন শিক্ষানীতি না থাকা। যার ফলে দিনকে দিন ভেজাল নাগরিকের সংখ্যা বাড়ছে জ্যামিতিক এবং গাণিতিক দুই ভাবেই। যারা সেদিন জীবন দিলো তাদের জীবনের মূল্য আমরা কী পরিমাপ করতে ব্যর্থ হয়নি। আমরা তাদের মনে রাখেনি, আমরা একটি সার্বজনীন শিক্ষানীতির দাবিতে কথা বলিনি, আমরা মনে করে চলেছি সব কিছুই আমাদের নাগালে চলে আসবে সূরা বাকারাতে উল্লেখিত মান্না সালওয়ার মতো করে। আজকে যারা ভ্যালেন্টাইন দিবস পালন করে তারা মূলত ইতিহাস মূর্খ নষ্ট নাগরিক। তাদের সারপ্লাস/উদ্বৃত্ত নাগরিকও বলা যেতে পারে। এই লুম্পেনদের সংখ্যা যতো বৃদ্ধি পাবে দেশটা ততো দ্রতই রসাতলে চলে যাবে।