শিরোনাম
◈ ওড়না কেড়ে নিয়ে পুরুষ কর্মকর্তাদের উল্লাস, নারী বন্দিদের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা ◈ রেকর্ড উৎপাদনের সুফল কোথায়? চালের বাজারের চালকের আসনে কারা? ◈ পবিত্র আশুরা আজ ◈ তরুণ ক্রিকেটার তানভীরের ফাইফারে সিরিজ সমতায় বাংলাদেশ ◈ 'শিক্ষা ও স্বাস্থ্য দখল করেছে জামায়াত': গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ◈ ১৪ হাজার কোটি রুপি কেলেঙ্কারি, যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেপ্তার ভারতের নেহাল মোদি (ভিডিও) ◈ মোবাইল চুরির অভিযোগকে কেন্দ্র করে গ্রাম্য সালিস থেকে রক্তাক্ত ট্র্যাজেডি ◈ জাতীয় নির্বাচনে বাধা দেওয়ার শক্তি কারো নেই: কেরানীগঞ্জে বিএনপি সমাবেশে সালাহ উদ্দিন আহমদের হুঁশিয়ারি ◈ তুর্কমেনিস্তানকে কাঁ‌পি‌য়ে দি‌লো বাংলা‌দেশ, এশিয়ান কাপে যাচ্ছে ঋতুপর্ণারা ◈ চী‌নে জু‌নিয়র হ‌কি‌তে একদিনে বাংলাদেশ পুরুষ ও নারী দ‌লের জয়

প্রকাশিত : ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১০:১৬ দুপুর
আপডেট : ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১০:১৬ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

হুমায়ুন ফরীদির আজ অষ্টম মৃত্যুবার্ষিকী, শিমুল ইউসুফ বললেন, ‘ভালো থাকিস বন্ধু’

ইমরুল শাহেদ : মঞ্চ, টিভি ও চলচ্চিত্রের খ্যাতিমান অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদির আজ অষ্টম মৃত্যুবার্ষিকী। ঢাকার সাংস্কৃতিক অঙ্গনের এই ক্ষণজন্মা অভিনেতা ২০১২ সালের এই দিনে ইহলোক ত্যাগ করেন। আজ এতো বছর পরও এই অভিনেতার সহকর্মীরা অশ্রুসিক্ত নয়নেই তাকে স্মরণ করেছেন।

তার এক সময়ের সহকর্মী শিমুল ইউসুফ স্মৃতিচারণ করে লিখেছেন, ‘সেলিম আল দীনের লেখা ঢাকা থিয়েটারের দুই নাটক ‘কেরামতমঙ্গল’ ও ‘কিত্তনখোলা’য় হুমায়ুন ফরীদির সঙ্গে আমার অভিনয়ের ব্যাপ্তিটা অন্য কাজগুলোর চেয়ে বেশি ছিল। সহ-অভিনেতা হিসেবে বলব, ফরীদি যে কোনো চরিত্রে সহজেই ঢুকে যেতে পারত। ‘ছায়ারঞ্জন’ বা ‘কেরামত’ চরিত্র দুটি যেন তাকে বিবেচনা করেই তৈরি হয়েছিল। অভিনয়ের সময় ফরীদিকে যেন চরিত্রের বাইরে ভাবানো যেত না। এতটাই সিরিয়াস পারফরমার ছিল সে।

‘একইভাবে ‘ধূর্ত উই’ নাটকের উইসহ মঞ্চের অন্যান্য চরিত্রে তার অভিনয়ের দক্ষতা দেখিয়েছে। সে জানত একটা ডায়ালগ কতভাবে বলা যায়, চরিত্র নিয়ে কতভাবে ভাবা যায়। ঢাকা থিয়েটারের একজন কর্মী, সহকর্মী হিসেবে আমার দুঃখ এই যে, হুমায়ুন ফরীদির মতো একজন অভিনেতা মঞ্চ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল। ফরীদি আরও কিছুদিন কাজ করলে আমরা আরও সমৃদ্ধ হতে পারতাম। ব্যক্তি ফরীদির সঙ্গে আমার অনেক মজার স্মৃতি আছে। আমরা পিঠাপিঠি ভাইবোনের মতো ছিলাম। আমরা ঝগড়া, রাগারাগি, মারামারি করতাম। আবার গালাগালি করে বসেও থাকতাম। ফরীদির সঙ্গে আমার সম্পর্কের কোনো নামকরণ করা সম্ভব নয়। সে চলে যাওয়ায় আমি একজন ভাই, বন্ধু, প্রিয় সহশিল্পীকে হারিয়েছি। একটা কথা না বললেই নয়। ও অনেক সুন্দর করে ভ‚তের গল্প বলতে পারত। সে প্রায়ই সময় পেলে ঘরের আলো নিভিয়ে ছাদে গিয়ে, মুখে নানা রকম শব্দ করে, ভৌতিক পরিবেশ তৈরি করে আমাদের গল্প শোনাত। ফরীদি আমাদের সঙ্গে দম্ভ ছাড়াই মিশত। বইমেলায় ওর সঙ্গে শেষ দেখাটাও ছিল ঘটনাবহুল। বারবার এখনো চোখের সামনে ভেসে ওঠে। যেখানেই থাকিস, ভালো থাকিস বন্ধু।’

হুমায়ুন ফরীদির দীর্ঘদিনের সহকর্মী তথা প্রতিদ্ব›দ্বী আফজাল হোসেন লিখেছেন, ‘সে আমার বন্ধু ছিল কিংবা বলা উচিত, আমাকে সে নিজ গুণে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করেছিল। আমাদের পরিচয়ে মিল থাকুক, চলায়-বলায় এতটুকু মিলও ছিল না। যদি হিসাবে বসি, কেন আমরা বন্ধু ছিলাম, কারণ খুঁজে পাই না। তার ও আমার পছন্দ-অপছন্দের তফাত ছিল। আমি তার মতো ঝড়ো ছিলাম না কখনো। তার মতো বেয়াড়া হওয়ার সাধ্য আমার ছিল না। সেই অদ্ভুত বেয়াড়াপনা অনেকের কাছে ছিল কৌতুকময়, আনন্দের। আবার অনেকের জন্য তা ছিল বিপজ্জনক ও বিব্রতকর।

‘অপছন্দের মানুষের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রেখে চলা ছিল আমার স্বভাব। ফরীদি যাকে পছন্দ করত না, তার সঙ্গে অপছন্দনীয় আচরণ করে বুঝিয়ে দিয়েছে, তাকে যাচ্ছেতাই বিবেচনা করে। বড় অভিনেতা ছিল, মঞ্চে এবং পর্দায়। প্রাত্যহিক জীবনে সবাইকে কমবেশি অভিনয় করতে হয়, সে ধার ফরীদি কখনো ধারেনি। এ কারণেই তার পেছনে মানুষ কথা চালাচালি করেছে, সামনে ভীত থেকেছে। ভালোত্ব জাহিরের আগ্রহ প্রবল থাকে মানুষের। ফরীদি মন্দ লুকিয়ে বাহবা পেতে চায়নি কখনো। ভালো-মন্দে মেলানো সাধারণ, পছন্দের মানুষ বা বিষয়ের প্রতি অনুভ‚তি ছিল নিখাদ। তাই অসাধারণ মানুষ ও বন্ধু ছিল ফরীদি। অভিনয় ছাড়া জীবনে কিছু করতে চাইত না সে। চারদিকে নৈরাশ্য তবু কখনো আশা ছাড়তে দেখিনি। আশায় আশায় আয়ু ফুরিয়ে গেল। অসাধারণ একজন অভিনেতার জন্ম হয়েছিল। এমনই দুর্ভাগ্য, গিজ গিজ করা অতি সাধারণের ডোবায় খাবি খেতে খেতে তলিয়ে যেতে হলো। অকাল প্রয়াত বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ অভিনেতা, বন্ধু হুমায়ুন ফরীদি, ক্ষমা করিস। ডোবার হাঁটু জলে জীবনপাত হয়ে গেল, সহস্র পদ্মে হাসি ভাসানো একটা দিঘি বা একটা পুকুরও সবাই মিলে কাটতে পারিনি।’

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়